রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • মতলবে গর্ভপাত করানোর ঘটনায় গৃহবধুর মৃত্যু: আটক ২

মতলবে গর্ভপাত করানোর ঘটনায় গৃহবধুর মৃত্যু: আটক ২

মতলবে গর্ভপাত করানোর ঘটনায় গৃহবধুর মৃত্যু: আটক ২

চাঁদপুর, ২৩ জানুয়ারি, এবিনিউজ : চাঁদপুরের মতলব উত্তরে একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে অবৈধভাবে গর্ভপাত করানোর ঘটনায় কলাকান্দা গ্রামের হিন্দুপাড়ার ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকারের স্ত্রী টগি রাণী সরকার (৪২) নামে এক রোগীর মৃত্যু হয়েছে। পরে লাশ গুম করার চেষ্টা করেছে ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। অবশেষে স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই গৃহবধূর লাশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে থানা পুলিশ।

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার বড় ষাটনল বেড়িবাঁধের পাশে সেচ ক্যানেলে গত ২২ জানুয়ারী পথচারীরা লাশ দেখতে পেয়ে ইউপি সদস্যকে অবগত করেন। এরপর খবর পেয়ে মতলব উত্তর থানার ওসি মোঃ আনোয়ারুল হকের নেতৃত্বে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে চাঁদপুর সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। এদিকে নিহতের স্বজনরা টগি রাণী সরকারের মৃত্যুর খবর পেয়ে থানার সামনে এসে সুষ্ঠু বিচারের দাবিতে আহাজারি করেন ও কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

নিহতের পারিবারিক সূত্র জানায়, নিহত গৃহবধু টগি রাণী সরকার গত রোববার সকাল ১১টায় গর্ভপাত করানোর কথা বলে বাড়ি থেকে বের হয়। এরপর থেকে সারাদিন ধরে তিনি নিখোঁজ ছিলেন। সন্ধ্যায় তার স্বামী ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকার ছেঙ্গারচর বাজারস্থ মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে তালাবদ্ধ দেখেন। এরপর সকল ক্লিনিক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাচ্ছিলেন না। সবশেষে রাত ৮টায় পুনরায় মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে এসে মালিকের সাথে কথা বললে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে জানায়, এখানে টগি রাণী চিকিৎসা নিতে আসেননি। হতাশ হয়ে তিনি বাড়ি ফিরে যান।

ক্ষিতিশ চন্দ্র সরকার বলেন, সংসার জীবনে আমাদের ৪ সন্তান রয়েছে। দুই মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি। আর দুই ছেলে লেখাপড়া করছে। অনাকাঙ্খিত গর্ভধারণ হলে রোববার সকালে তা গর্ভপাত করতে আফরোজা আক্তার ঝুনুর মালিকানাধীন মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যাবে বলে বাড়ি থেকে বের হয়।

তিনি আরো জানান, এর আগেও গত বছর একই হাসপাতালে দু'বার গর্ভপাত করিয়েছেন। তাই এবার আমার স্ত্রী একাই ওই হাসপাতালের নাম বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করে তাকে পাইনি। পরদিন বড় ষাটনলে একটি অজ্ঞাত লাশের খবর পেয়ে গিয়ে দেখি আমার স্ত্রীর লাশ।

ক্ষিতিশ দাবি করে বলেন, ডাক্তার ছাড়াই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ গর্ভপাত করানোর কারণে টগি রাণীর মৃত্যু হয় এবং মৃত্যু থেকে ওই ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ মুক্ত হওয়ার লক্ষ্যে রাতের আঁধারে লাশ গুম করার চেষ্টায় বড় ষাটনল বেড়িবাঁধের পাশে সেচ ক্যানেলে ফেলে রেখে আসে। এদিকে মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক আফরোজা আক্তার ঝুনু ও তিন কর্মচারীকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্যে থানায় নেয় পুলিশ।

সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (মতলব সার্কেল) রাজন কুমার দাস বলেন, ডাক্তার ছাড়া হাসপাতালের পরিচালক নিজেই গর্ভপাত করিয়েছে। আমরা জেনেছি যে, আফরোজা আক্তার ঝুনু পরিবার পরিকল্পনা সহকারী (এফডবিস্নউএ) হওয়ায় তিনি নিজেই এসব বিষয় পরিচালনা করে থাকেন। রোগীর মৃত্যুর পর লাশ ও আলামত গুম করতে চেয়েছিলো ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ। আমরা লাশ উদ্ধার এবং মারিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিদর্শন করে কিছু আলামত জব্দ করতে সক্ষম হয়েছি।

মতলব উত্তর থানার ওসি মোঃ আনোয়ারুল হক বলেন, মৃত গৃহবধূর স্বামীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে হত্যা মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় আমরা ২ জনকে আটক করেছি। জড়িত বাকিদেরকেও আটকের চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এবিএন/শ্যামল চন্দ্র দাস/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত