বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • ফরিদপুর নদীবন্দরে অচলাবস্থা: দুই মাসেও কাটেনি নাব্যতা সংকট

ফরিদপুর নদীবন্দরে অচলাবস্থা: দুই মাসেও কাটেনি নাব্যতা সংকট

ফরিদপুর নদীবন্দরে অচলাবস্থা: দুই মাসেও কাটেনি নাব্যতা সংকট

ফরিদপুর, ২৫ জানুয়ারি, এবিনিউজ : দুই মাসের অধিক সময় ধরে নাব্যতা সংকটের কারণে ফরিদপুর নদীবন্দরে আসছেনা লাইটারের মাঝারি ও বড় বড় জাহাজগুলো। এতে ফরিদপুর নদী বন্দরে সৃষ্টি হয়েছে অচলাবস্থার। কর্মহীন হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমিক। আর ইজারাদার কর্তৃপক্ষের দাবী এরই মধ্যে রাজস্ব আদায় কমে গেছে ৮০ভাগ। এদিকে বিআইডব্লিউটিএর একটি ড্রেজার দিয়ে খুড়িয়ে খুড়িয়ে চলা খননকাজ কতদিনে শেষ হবে তাও বলতে পারছেননা তারা।

২০১৫ সালের ১৮ আগষ্ট রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সিনিয়র সহকারী সচিব মাহফুজা আখতার স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ গেজেট অতিরিক্ত সংখ্যায় ফরিদপুরের সিএ্যান্ডবি ঘাটকে “ফরিদপুর নদী বন্দর” ঘোষনা করা হয়। আর ২০১৭ সালের ০৪ সেপ্টেম্বর ফরিদপুর নদী বন্দর হিসেবে ইজারা দেয়া হয়।

গত নভেম্বর মাসের শুরুর দিক থেকেই পদ্মা নদীর হাজীগঞ্জ থেকে নদীবন্দর পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার এলাকার বিভিন্নস্থানে দেখা দেয় নাব্যতা সংকট। নভেম্বরের শেষের দিকে সংকট চরমে পৌছে যায়। এর পর থেকে ঘাটে ভিড়তে পারছেনা পন্যবাহী মাঝারি ও বড় বড় জাহাজগুলো।

নাবিক ও পন্যবাহী নৌযান সংশ্লিষ্টদের দাবী, মাঝারি মানের জাহাজ চলাচলের জন্যে আট থেকে ১০ফুট পানির গভীরতার প্রয়োজন হলেও কোথাও কোথাও গভীরতা বয়েছে তিন থেকে চার ফুট। ফলে ঘাট পর্যন্ত যেতে পারছেননা তারা। তামান্না জাহাজের মাস্টার মো. আব্দুর রহিম জানান, কয়েক দিনে ধরে মাল নিয়ে এেেস সাধিপুরের অস্থায়ী খালাস পয়েন্টে বসে থেকেও মাল খালাস করাতে পারছেননা তারা। এতে তারা অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

অপরদিকে এ বন্দর দিয়ে পন্য আনয়নকারী ব্যাবসায়ীরা বলছেন, এ ঘাট দিয়ে চাউল, বালি, সিমেন্টসহ ৩৫ থেকে ৪০ প্রকারের পন্য আনয়ন করা হয়। ব্যাবসায়ী রাসেল চৌধুরী জানান, কার্গো মাঝ সদীতে আটকে থাকায় ছোট নৌকা দিয়ে খালাস করে আনা হচ্ছে এতে বাড়ছে খরচ। এছাড়া পন্য খালাসে তিরিক্ত শ্রমিক খাটাতে হচ্ছে।

লেবার সরদার শরীফ সরকার ও ট্রাক চালক আহম্মদ মোল্লা জানান, এদিকে বন্দর থেকে ছয় কিলোমিটার দুরে সাদিপুর এলাকায় অস্থায়ীভাবে পন্য খালাস করা হলেও সড়কের অভাবে পরিবহন করতে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এছাড়া এই রুটে জাহাজ আসা কমে যাওয়ায় বেকার হয়ে পড়েছে কয়েক হাজার শ্রমিক।

ঘাট ইজারাদার কর্তৃপক্ষ প্রতিনিধি এম এ সালাম জানান, এলজিআরডি মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের ঐকান্তিক প্রচেষ্টচায় সিএন্ডবি ঘাট ফরিদপুর নদী বন্দরে উন্নীত করার পর দুই বছর পেরিয়ে গেলেও অদ্যবদি কোন ধরণের উন্নয়ন করা হয়নি।তিনি জানান, নাব্যতা সংকটের কারণে প্রায় অচল হয়ে পড়েছে ফরিদপুর নৌবন্দর। এরই মধ্যে জাহাজ না আসায় রাজস্ব আদায় কমে ২০ভাগে এসে দাড়িয়েছে।

তিনি দাবী করেন, গত ২৫ ডিসেম্বর থেকে ড্রেজিং কাজ শুরু হলেও ধীর গতির কারণে কাঙ্খিত ফল পাওয়া যাচ্ছেনা। এক্ষেত্রে বিআইডব্লিউটিএ কর্মকর্তাদের গাফিলতির অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া দুটি ড্রেজার দিয়ে খননকাজ শুরু করলেও কয়েকদিন আগে বড় ড্রেজারটি তুলে নিয়ে যাওয়ায় খনন কাজ মুখ থুবড়ে পড়েছে বলেও দাবী তার।

এদিকে খনন কাজে অংশ নেয়া ড্রেজারটিতে মঙ্গলবার গিয়ে বিআইডব্লিউটিএ’র কোন কর্মকর্তাকে পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট ড্রেজারের রক্ষনাবেক্ষণে নিয়োজিত শ্রমিক সানাউল দেওয়ানসহ অন্যান্যরা জানান, দুই কর্মকর্তা ৪-৫ দিন আগে এসেছিলেন, কাজ বুঝিয়ে দিয়ে তারা চলে গেছেন। এদিকে এক মাসে তারা দেড় কিলোমিটার নদী খনন করতে পেরেছে দাবী করলেও নদী বন্দর পর্যন্ত নদী খননে কতদিন সময় লাগবে তাও বলতে পারেনি তারা।

চলতি বছরে ফরিদপুর নদী বন্দর ৩৭লক্ষ টাকায় ইজারা দেয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করেন, বন্দরের সুবিধা নিশ্চিত করা গেলে নদী পথে পন্য পরিবহনে যুগান্তকারী পরিবর্তন আসবে, এতে সরকারের রাজস্বও বেড়ে যাবে।

এবিএন/কে. এম. রুবেল/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত