বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • সোনাগাজীতে স্লুইজ গেইট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সোনাগাজীতে স্লুইজ গেইট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সোনাগাজীতে স্লুইজ গেইট নির্মাণে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ

সোনাগাজী (ফেনী), ২৫ জানুয়ারি, এবিনিউজ : সোনাগাজী উপজেলার ৫নং চরদরবেশ ও ৬নং চরচান্দিয়া ইউনিয়নের মধ্যবর্তী স্থল সুকুনীয়া খালের উপর প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে পুণ:নির্মাণ করা হচ্ছে ৯নং স্লুইচ গেইট।

সরেজমিনে জানা যায়, সোনাগাজী উপজেলার ৫নং চরদরবেশ ৬ নং চরচান্দিয়া ও ৪নং মতিগঞ্জ ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ অঞ্চলের পানি নিস্কাশন ও সমুদ্রের জোয়ারের নোনা পানি থেকে রক্ষা সহ অধিক ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে ১৯৬০ এর দশকে এ স্লুইচ গেইটটি নির্মাণ করা হয়। ১৯৮৫ সালে স্লুইচ গেইটটি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হলে ৮৬ সালে তা মেরামত করা হয়। ১৯৯২ সালে উক্ত স্লুইচ গেইটটি পুনরায় ক্ষতিগ্রস্ত হলে ১৯৯৩ সালে পুনঃরায় মেরামত করে পানি উন্নয়ন বোর্ড। ২০১৭ সালে জুন মাসে অতি বর্ষণ অযত্ন অবহেলায় পড়ে থাকা স্লুইচ গেইটটি পানির স্রোতে সম্পূর্ণ নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।

যার কারণে বিস্তৃীর্ণ অঞ্চলে ফসলের ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়।এলাকাবাসীর দাবির প্রেক্ষিতে উক্ত স্লুইজ গেইটটি এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংকের অর্থায়নে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ কাজ শুরু করে ফেনীর পানি উন্নয়ন বোর্ড। নির্মাণ কাজের জন্য ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিয়োগ পান মেসার্স ডন কনাস্ট্রাকশনের স্বত্বাধিকারী আশ্রাফুল ইসলাম আবির। ২০১৭ সালের অক্টোবর মাসে নির্মাণ কাজের শুরুতে নিম্ম মানের বাংলা রড, অপরিস্কার বালু, স্বল্প পরিমাণ সিমেন্ট ব্যবহার করার কারণে এলাকাবাসী প্রবল আপত্তি ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়।

ফলে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তোপের কারণে নির্মাণ কাজ সাময়িক বন্ধ করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সরেজমিনে এসে স্থানীয় লোকজনকে শান্তনা দেন এবং দরপত্র অনুযায়ী ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে কাজ করার নির্দেশ প্রদান করেন। অন্যথায়, কাজ বন্ধ রাখার জন্য ঠিকাদারকে নির্দেশ প্রদান করেন। কিন্তু দু:খভাগ্য ও লজ্জাস্কার বিষয় উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে পূর্বের ন্যায় ওই সব নিম্ম মানের সামগ্রী দিয়ে সুফিসারে নির্মাণ কাজ শুরু করে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান।

গতকাল বুধবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, অপরিস্কার বালু, নিম্নমানের কংক্রিট, বাংলা ও নিম্ম মানের রড,স্বল্প সিমেন্ট দিয়ে নির্মাণ কাজ করছে কয়েকজন শ্রমিক। এ ব্যাপারে নির্মাণ কাজে নিয়োজিত ৬০ উর্ধ্ব একজন শ্রমিক জানান,ঠিকাদার যে ভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন আমরা সেই অনুযায়ী কাজ করছি। আমাদের করার কিছুই নেই। ওই সময় স্থানীয় ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ও লোকজনকে পাওয়া যায়নি।

স্থানীয় বাসিন্দা গিয়াস উদ্দিন জানান, কাজের শুরুতে জনতার প্রতিরোধের মুখে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এসে নিম্ম মানের কাজ দেখে কাজ বন্ধ করার নির্দেশ প্রদান করেন। কয়েক দিন কাজ বন্ধ ছিল। পুনঃরায় ওই সব নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কেন কাজ করছে তা আমাদের জানা নেই। রাসেল খাঁন জানান, আমরা প্রতিবাদ করলে আমাদেরকে মামলা ও পুলিশের ভয় দেখায়। আমরা যেন অসহায়।

স্থানীয় নিজাম উদ্দিন মাসুদ নামে যুবলীগ নেতা জানায়, স্লুইজ গেটটি নির্মানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান চরম অনিয়ম ও দুর্নীতির আশ্রয় নিয়েছে।প্রতিবাদ করায় আমাকে ঠিকাদার প্রকাশ্যে হুমকি প্রদান করে।যুবলীগ নেতা আরো জানায়,ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের অসাধু কর্মকর্তা ও ঠিকাদার পরস্পরের যোগসাজসে স্লুইজ গেটটি নির্মানে অনিয়ম ও দুর্নীতি করছে।

এ ব্যাপারে ফেনী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী আফছার জানান, কাজের মান নিয়ন্ত্রণ করার দায়িত্ব আমাদের নয়।

এলাকাবাসীর অভিযোগে গতকাল বুধবার বিকেলে ঘটিকার সোনাগাজী উপজেলা চেয়ারম্যান জেড এম কামরুল আনাম, নির্বাহী অফিসার মিনহাজুর রহমান, স্থানীয় চেয়ারম্যান মোশারফ হোসেন মিলন, ৮নং আমিরাবাদের চেয়ারম্যান জহিরুল আলম, ৫নং চরদরবেশ ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ভুট্টু সরেজমিনে পরিদর্শন করে নিম্মমানের কাজ দেখে ক্ষোভ ও দুঃখ প্রকাশ করেন। এ সময় নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা চেয়ারম্যান প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহনের আশ্বাস দেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের ফেনী জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী কোহিনুর আলম জানান, তিনি বিষয়টি সরেজমিনে তদন্ত করবেন।

স্থানীয় এলাকাবাসী জানিয়েছে, স্লুইজ গেটটি নির্মানে অনিয়ম ও দুর্ণীতি বন্দ না হলে প্রধানমন্ত্রীর বরাবরে লিখিত অভিযোগ করা হবে।এলাকাবাসী বিষয়টি সরজমিনে দ্রুত তদন্ত করে অনিয়ম ও দুর্নীতির সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি জানান।

এদিকে বহুবার চেষ্টা করেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোন কর্মকর্তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এবিএন/আবুল হোসেন রিপন/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত