![সদরপুরে পিঠা পায়েসের জন্যে বিক্রি হচ্ছে খেজুরের গুড়](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/27/patali_abnews_122763.jpg)
সদরপুর (ফরিদপুর), ২৭ জানুয়ারি, এবিনিউজ : ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন বাজারে খেজুর গুড়ের মহোৎসব দেখা যাচ্ছে। ক্রেতা-বিক্রেতার হাতে হাতে বাজারে শোভা পাচ্ছে এখন খেজুর গুড়ের। ছোট ছোট পড়সা দোকানিরা বাজারের বিভিন্ন জায়গায় ছোট ঝাঁকায় করে বিক্রি করছে দেশীয় এসব গুড়। পিঠা পায়েসের জন্যে ক্রেতারা ভালো মানের প্রতি কেজি গুড় দু’শত পঞ্চাশ টাকা থেকে ৩শ’ টাকা পর্যন্ত দরে বিক্রি হচ্ছে।
শীতের শুরু থেকেই সদরপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের গাছিরা খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহের কাজে এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন। অধিকাংশ এলাকায় খেজুর গাছ তোলার কাজ শেষ হয়েছে। ওইসব গাছ থেকে গাছিরা রস সংগ্রহ করে পাটালি,ঝোলা ও দানা গুড় বাড়ির উঠানে তৈরি করছে। তৈরিকৃত গুড় বাজারে উঠতে শুরু করেছে। গুড় ও পাটালিতে দাম ভালো পাওয়া গাছি বাড়িতে পাটালি গুড় তৈরির ধুমও পড়ে গেছে।
উপজেলার প্রায় সদরপুর,কৃষ্ণপুর,চরবিষ্ণুপুর,ভাষানচর,ঢেউখালী ৫টি ইউনিয়নের বিভিন্ন বাড়ির আঙিনায়, জমির আইলে, রাস্তার পাশে, পতিত জমিতে সারি সারি খেজুর গাছ লক্ষণীয়। গৌরব আর ঐতিহ্যের প্রতিক মধুবৃক্ষ এই গাছ থেকে সু-মধুর রস বের করে গ্রামের গাছি পরিবারের ঘরগুলোতে পুরোদমে শুরু হয়েছে গুর বানানোর মহোৎসব। বাজারে আসা ওইসব গুর দিয়ে গ্রামের বাড়িতে শুরু হয়েছে পিঠা, খেজুর রসের পায়েস, রসে ভেজানো পিঠাসহ বিভিন্ন সুস্বাদু খাবার। এছাড়া খেজুরের রস দিয়ে তৈরি করা নলের গুড়, ঝোলা গুড়, দানা গুড় ও পাটালি গুড়ের মিষ্টি গন্ধেই অনেক এলাকার বাতাস বইছে।
সদরপুর উপজেলার শ্যামপুর গ্রামের গাছি আলম খাঁ জানান, এলাকায় আগের মত খেজুর গাছ নেই। যে কয়টি গাছ আছে তার থেকে রস সংগ্রহ করা হচ্ছে। অন্য এলাকা থেকে রস সংগ্রহ করে গুর তৈরি করে থাকি। শীত মৌসুমে এসব গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালি তৈরি করে স্থানীয় সদরপুর হাটে বিক্রি করেন। উপজেলার কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কৃষ্ণপুর বাজারেও বিক্রি হচ্ছে প্রচুর পরিমান গুর। দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যাপারীরা এসে ওইসব গুড় নিয়ে যায়। দামও বেশ ভালো পাওয়া যায়। গত বছর তিনি প্রথম সারির গুড় ২২০ টাকা থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করেছেন। এবছরও ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তিনি।
শৌলডুবী এলাকার ওসমান শেখ বলেন, খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করে গুড় ও পাটালি তৈরি করে স্থানীয় হাটে গুড় বিক্রি করেন। এবার খেজুর গুড় ও পাটালির দাম ভালো পাওয়ায় তারা লাভবান হচ্ছে। এছাড়াও কৃষ্ণপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর গ্রামের ইউনুছ শেখ,আমির মাতুব্বর,ইউসুফ মাতুব্বর, মিজানুর শেখ জানান, ভালো গুড়ের চাহিদা সব সময় বাজারে বেশী থাকে। আমাদের বাড়ি থেকেই গুড় বিক্রি হয়ে যায়।
আরও জানা যায়, বেশ কিছু অসাদু গাছীরা গুড় তৈরিতে ব্যাবহার করছে চিনি। গুড়ের কালার এবং দানা তৈরির জন্য গুড়ের চেয়ে চিনির দাম কম হওয়ায় কিছু লোভি লোক গুড়ের সাথে চিনি মিশিয়ে বাজারে বিক্রি করছে। এতে করে সঠিক মানের গুড় পাচ্ছেনা ক্রেতারা। খেজুর গাছ কাটার শুরুতেই গাছ থেকে জ্বালানি সরবারহ করা হয়ে থাকে।
অপরদিকে ভোরে গাছিরা গাছ থেকে রস সংগ্রহ উপজেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি করে আসছেন।
এবিএন/সাব্বির হাসান/জসিম/এমসি