
রাজবাড়ী, ২৮ জানুয়ারি, এবিনিউজ : জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের পদ্মা নদীর হাবাসপুরঘাটে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ ও সরকারী জায়গা দখল করে দীর্ঘদিন ধরে প্রভাবশালীরা অবৈধ্য ভাবে বালু উত্তোলন করে ব্যবসা করায় বেড়িবাঁধ ধসে যাওয়ার আশংকা রয়েছে তাছাড়াও এলাকাবাসী রয়েছে চরম দুর্ভোগে দীর্ঘদিন যাবৎ। বালুর চাতাল গড়ে তুলে ব্যবসা করছেন কতিপয় বালু ব্যবসায়ীরা।
রাজবাড়ী জেলার পাংশা উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ। এই বেড়িবাঁধ ও বেড়িবাধের পাশে সরকারী জায়গা দখল করে প্রভাবশালীরা বালি ব্যবসা করছেন। বালু ব্যবসার সুবিধার কারণে বাধের কোলে আশ্রয় নেওয়া বন্যাকবলিত অসহায় মানুষের বসত বাড়ী ভেঙ্গে দিয়েছেন বালু ব্যবসায়ীরা এবং তাছাড়াও বাড়ীতে থাকা বিভিন্ন প্রকার ফলের গাছও কেটে দিয়েছে তারা। এ যেন জোড় জার মূলুক তার।
বালু ব্যবসার কারণে বেড়িবাঁধ দিয়ে স্বাভাবিক ভাবে চলাচল করতে পারছে এলাকাবাসী। তাদের অভিযোগ রান্না করে কোন খাবার ঘরে রাখা যায় না। বালুতে ভরে যায়। এ বালু ব্যবসার কারেন হুমকির মুখে রয়েছে শহর রক্ষা বেড়িবাঁধ। বর্ষা মৌসুমে এই বেড়িবাঁধ ধসে যাওয়ার আশংকা করছে।
বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাড়ে অবৈধভাবে বালু ব্যবসার নেপথ্য নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রশাসন দায়সাড়াভাবে অভিযান পরিচালনা করলেও থেমে নেই বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম।
এর আগে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর অবৈধভাবে বালু চাতাল করার কারনে ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালিত হলেও জড়িতদের কাউকে আটক বা জরিমানা করা হয়নি ! কিন্তু কেন ? জানা যায়, গত বছরের ১৩ জুলাই বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের পাড়ে বিভিন্ন স্থানে স্তুপ করে রাখা বালু অপসারণের জন্য এলাকার ১২জন বালু ব্যবসায়ীকে চিঠি দেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও)। পত্রে উল্লেখ করা হয়, পাংশা উপজেলাধীন হাবাসপুর ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের পাশে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্তুপাকারে রাখার কারণে নদীর পাড়সহ বেড়িবাঁধ ধসে ও ভেঙ্গে পড়ার আশংকা রয়েছে। বেড়িবাঁধ ধসে ও ভেঙ্গে গেলে পাংশা উপজেলা ভয়াবহভাবে বন্যা কবলিত হবে এবং ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার সম্ভনা রয়েছে।
বালু ব্যবসায়ীদেরকে প্রদত্ত ওই পত্রে আরো উল্লেখ করা হয় ১৬/০৭/২০১৭ তারিখের মধ্যে বেড়িবাঁধের পাশ থেকে বালির স্তুপ অপসারণের জন্য নির্দেশ প্রদান করা হলো। অন্যথায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্তুপাকারে রাখায় জড়িত বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এদিকে, ঘটনাস্থল থেকে স্তুপকৃত বালু অপসারণ না করে সেখানে আরো বেশী করে বালুর স্তুপ করা হয়েছে। বর্তমানে সেখান থেকে ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক যোগে বালু পরিবহনের ফলে হাবাসপুর পদ্মা নদীর বেড়িবাঁধ সড়কে জনসাধারণের চলাচলে বিঘ্ন ঘটছে। এ অবস্থায় পত্র প্রেরণের ৫ মাস পরে সম্প্রতি অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করে স্তুপাকারে রাখায় জড়িতদের বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করা হয়। তারপরও অত্র এলাকায় বালু ব্যবসায়ীদের দৌরাত্ম থেমে নেই। এ ব্যাপারে প্রশাসনের নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে সচেতন মহল অভিমত প্রকাশ করেন।
পাংশা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান, আমি নতুন এসে যোগদান করেছি। এ বিষয়ে আমি খোঁজ খবর নিচ্ছি। এবিষয়ে অভিযোগ প্রমানিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজবাড়ী পানি উন্নয়ন বোর্ড এর প্রকৌশলী প্রকাশ কৃঞ্চ সরকার জানান, শহর রক্ষা বাধের পাশে যে অবৈধ বালুর চাতাল রয়েছে সে গুলোর বিষয়ে ইতি মধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে উপজেলা ইউনিওদের কে নির্দেশ দিয়েছেন আশা করি তাদের সহযোগিতায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের যায়গা অবৈধ দখল মুক্ত করতে পারবো।
এবিএন/ খন্দকার রবিউল ইসলাম/জসিম/নির্ঝর