![খোকসায় ২৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষক পদ শুন্য](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/01/28/capture_123108.jpg)
খোকসা (কুষ্টিয়া), ২৮ জানুয়ারি, এবিনিউজ : কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলায় ২৮ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষাকের পদ শুন্য থাকায় প্রাথমিক শিক্ষার বেহাল অবস্থা বিরাজ করছে। এছাড়াও দীর্ঘ দিন ধরে শুন্য রয়েছে ১৫ টি সহকারী শিক্ষকের পদ। সমাপনী পরীক্ষায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্যের জন্য শিশু শ্রম এবং বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিক্ষার্থীর আধিক্যকে দায়ী করেন শিক্ষা কর্মকর্তা।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, দীর্ঘ দিন ধরে খোকসা উপজেলার মোট ৮৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৮ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে ১৫ টি। প্রাধন শিক্ষকের পদ শুন্য থাকা বিদ্যালয় গুলোতে সিনিয়র সহকারী শিক্ষকগন প্রাধন শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন। ফলে বিদ্যালয়ের শ্রেণি পাঠদান কার্যক্রম দারুন ভাবে ব্যহত হচ্ছে। পর পর দুই বছর প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় খোকসা উপজেলা শত ভাগ পাশের সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হলেও ২০১৭ সালের সমাপনী পরীক্ষায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়।
পূর্বাশা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আকমল হোসেন বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ৫ জন শিক্ষকের পদ রয়েছে। একজন সহকারী শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। একজন শিক্ষক পি টি আই প্রশিক্ষনে রয়েছে। ক্লাস ম্যানেজ করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। রায়পুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ আব্দুর রব বিশ্বাস বলেন, আমার বিদ্যালয়ে ২ বছর যাবত প্রধান শিক্ষকের পদ শুন্য রয়েছে। আমার বিদ্যালয়ে কোন দপ্তরি নেই। আমাকে দাপ্তরিক কাজে উপজেলা অফিসে ঘোরাঘুরি করতে হয়। আমি নিজে সহকারী শিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয়ে পাঠদান এবং প্রধান শিক্ষক হিসেবে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে।
২০১৭ সালের প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় খোকসা উপজেলায় ৩৫ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। এর মধ্যে মোড়াগাছা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন, পাইকপাড়া- মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, বশোয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, মির্জাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, শিমুলিয়া কলিশঙ্করপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, পদ্মবিলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ জন, সন্তোষপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৪ জন, উত্তর জয়ন্তী হাজরা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, উথুলি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ জন, ফুলবাড়ী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২ জন, পাতেলডাঙ্গী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যায়ের ৪ জন, শোমসপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৬ জন, চরপাড়া ব্র্যাক স্কুলের ১ জন, খোকসা জানিপুর মডেল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, মালিগ্রাম উত্তরপাগা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন , কমলাপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন, কমলাপুর মধ্যপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১ জন শিক্ষার্থী অকৃতকার্য হয়। শোমসপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নারায়ন চন্দ্র পাড়ই বলেন, গত বছর আমার একজন শিক্ষাক পি টি আই প্রশিক্ষনে গেছেন। শিক্ষক সংকট ছিল। শিশু শ্রম এবং নিম্ন মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থী এবং অসচেতন অভিভাবকদের কারনে শিক্ষার্থীরা অকৃতকার্য হয়েছে।
সহকারী উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হুসাইন মোহাম্মদ বেলাল বলেন, শিশু শ্রম, অসচ্ছল পরিবার, অসচেত অভিবাবক, বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন শিশুদের জন্য ২০১৭ সালের সমাপনী পরীক্ষায় শিশুরা অকৃতকার্য হয়েছে। এছাড়াও বর্তমানে এক উপজেলার খাতা অন্য উপজেলায় মূল্যায়ন করা হয়। খাতা মূল্যায়নেও সমস্যা থাকতে পারে।
এবিএন/সুমন কুমার মন্ডল/জসিম/রাজ্জাক