সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • ফরিদপুরে বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ

ফরিদপুরে বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ

ফরিদপুরে বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ

ফরিদপুর, ২৯ জানুয়ারি, এবিনিউজ : বাংলাদেশে যে কয়টি বিদেশী ফুল জনপ্রিয় হয়েছে তার মধ্যে গ্লাডিওলাস অন্যতম। বিভিন্ন বর্ণের কারনে ফুলটির চাহিদা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে ফরিদপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে বানিজ্যিক ভিত্তিতে শুরু হয়েছে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ। ফুল চাষ করে লাভবান হচ্ছেন চাষীরা। আর কৃষি বিভাগ বলছে অন্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষ অনেক লাভ জনক হওয়ায় দিন দিন ফরিদপুর জেলায় ফুলের চাষ বাড়ছে।

ফরিদপুর জেলার মাটি ও আবহাওয়া ফুল চাষের জন্য উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই অঞ্চলে রগ্লাডিওলাস ফুলের চাষ। কয়েক বছর আগেও যে জমিতে ধান চাষ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন চাষীরা। বর্তমানে সেই জমিতে এখন গ্লাডিওলাস ফুল চাষ করে ব্যাপক লাভবান হচ্ছেন চাষীরা।

ফরিদপুর সদর উপজেলার মাচ্চর ইউনিয়নের কৃষক মোসলেম গত তিন বছর আগে ধানের জমিতে পরীক্ষামূলক ভাবে এক একর জমিতে শুরু করেন বিদেশী ফুল গ্লাডিওলাস চাষ। প্রথম বছরে ব্যাপক লাভবান হওয়ায় দ্বিতীয় বছর তিন একর জমিতে ফুল চাষ করেন। দ্বিতীয় বছরও ব্যাপক লাভবান হন তিনি। ফুল চাষে ব্যাপক সাফল্যের পর মোসলেম চলতি বছর সাত একর জমিতে ফুল চাষ করেছেন। বর্তমানে মোসলেম প্রতিদিন ফুল বিক্রি করছেন স্থানীয় বাজারে। এছাড়াও ঢাকার শাহাবাগেও তার উৎপাদিত ফুল যাচ্ছে। মোসলেমের ফুল চাষের সাফল্য দেখে এলাকার অনেক চাষী ও বেকার যুকব ফুল চাষ শুরু করেছেন।

ফরিদপুরে বানিজ্যিক ভাবে শুরু হয়েছে গ্লাডিওলাস ফুলের চাষ

একই এলাকার বিল্লাল, হযরত আলী, আনোয়ার হোসেন ফুল চাষ করে ব্যাপক সাফল্য পেয়েছেন। অনেক চাষী আবার গ্লাডিওলাস ফুলের পাশা-পাশি শুরু করেছেন গাঁদা ও গোলাপ ফুলের চাষ। চলতি বছর সফল ফুল চাষী বিল্লাল হোসেন শহর তলীর পিয়ারপুর এলাকায় সদর উপজেলার চেয়ারম্যানের দুই একর জমিতে করেছেন গ্লাডিওলাস ও গাঁদা ফুলের চাষ। বর্তমানে বিল্লাল হোসেনের ক্ষেতে হলুদ, সাদা, লাল ও গোলাপী রঙ্গের গ্লাডিওলাস ও গাঁদা ফুলে ভোরে গেছে পুরো ক্ষেত। বিল্লাল হোসেন জানায়, ফুল চাষ আমাদের অঞ্চলের জন্য লাভ জনক হয়ে উঠেছে। সরকারী সহযোগীতা পেলে আমাদের অঞ্চলে ফুল চাষ বৃদ্ধি পাবে এবং অন্য জেলা থেকে আর ফুল আমদানী করতে হবে না। আমাদের উৎপাদিত ফুলদিয়েই আমাদের চাহিদা পুরন করে অন্যজেলার চাহিদাও মেটাতে পারব। বিভিন্ন দিবস গুলোকে টার্গেট করে ফুল চাষ করা হয়ে থাকে। স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, মাতৃভাষা দিবস, ভাল বাসা দিবসসহ বিভিন্ন দিবসে ফুরের ব্যাপক চাহিদা থাকে। আর এই দিবস গুলোকে টারগেট করেই ফুল চাষ করা হয়ে থাকে। বর্তমানে প্রতিটি গ্লাডিওলাস ফুল ২০থেকে ২৫টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর বিশেষ দিবস গুলোতে এর মূল্য বেড়ে যায়।

কৃষক মোসলেম জানায়, এক বিঘা জমিতে ফুল চাষ করতে করচ হয় ৭০ হাজার টাকা। কোন প্রকার প্রাকৃতির দুয়োগ না হলে এক বিঘা জমির উৎপাদিত ফুল বিক্রয় করা যায় দেড় থেকে দুই লাখ টাকা। এছাড়াও বীজও বিক্রয় করা যায় ২০ থেকে ২৫হাজার টাকা। চারা রোপনের ৭৫ থেকে ৯০ দিনের মধ্যে ফুল তোলা যায়। ভাল ফলন পেতে নিয়মিত পরিচর্যা, সেচ ও সার প্রয়োগ করতে হয়।

ফরিদপুর সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আবুল বাসার মিয়া জানান, সদর উপজেলার মল্লিকপুর, পিয়ারপুর, শিবরামপুর, হাটগবিন্দপুর, পরানপুরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় ফুল চাষ হচ্ছে। চাষীদের ফুল চাষে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে প্রশিক্ষণ প্রনোদনাসহ সবধরনের সহযোগিতা দেওয়ার কথা জানা এই কৃষি কর্মকর্তা।

ফরিদপুর সদর উপজেলা ছাড়াও মধুখালী উপজেলার পাইকগাছি ও বড়গোপালদি এলাকায় ব্যাপক ভাবে শুরু হয়েছে ফুল চাষ।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী জানান, ফরিদপুর জেলার তিনটি উপজেলায় বানিজ্যিক ভাবে ফুল চাষ শুরু হয়েছে। অন্য ফসলের চেয়ে ফুল চাষ লাভ জনক হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে ফরিদপুর অঞ্চলে ফুল চাষ। এখান কার উৎপাদিত ফুলই এখানে বিক্রি হচ্ছে। ফুল চাষ অব্যহত থাকলে আগামীতে বাইরে থেকে ফুল আমাদানি করতে হবেনা। চলতি বছর প্রায় ২০ হেক্টোর জমিতে গ্লাডিওলাসসহ বিভিন্ন প্রজাতির ফুল চাষ হয়েছে। সরকারী সহযোগিতা পেলে আগামীতে ফরিদপুরঅঞ্চলে ব্যাপক ভাবে ফুল চাষ শুরু হবে বলে মনে করছেন এই অঞ্চলের চাষীরা।

এবিএন/কে. এম. রুবেল/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত