![লক্ষ্মীপুর জেলাতে পরিবহণ খাতে চাঁদাবাজির মহোৎসব](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/04/abnews-24.bbbbbbbbbbbbbbb_124279.jpg)
লক্ষ্মীপুর, ০৪ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : লক্ষ্মীপুর জেলা জুড়ে পরিবহন খাতে চলছে চাঁদাবাজির মহোৎসব। জেলা সদর ছাড়াও উপজেলাগুলোর অর্ধশত স্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি এখন অহরহ ঘটনায় পরিণত হয়েছে। বাস, ট্রাক, সিএনজি ও অটোরিকশার স্ট্যান্ডগুলোতে হচ্ছে এই চাঁদাবাজি। প্রতি মাসে পরিবহন খাতে লাখ লাখ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে। আর পরিবহন খাতে চাঁদাবাজিতে লিপ্ত রয়েছে শক্তিশালী সিন্ডিকেট। রাজনৈতিক দলের উঠতি নেতা থেকে পাতি নেতাও রয়েছে চাঁদাবাজির এই শক্তিশালী সিন্ডিকেটে। এক কথায় সিন্ডিকেটের চাঁদাবাজদের হাতে জিম্মি হয়ে পড়েছে পরিবহন খাত। প্রকাশ্যে এ সব চাঁদাবাজি চললেও প্রশাসন অনেকটা নির্বিকার। নেয়া হচ্ছে না কোন কার্যকরী পদক্ষেপ।
পরিবহন খাতের মালিক ও চালকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে- প্রতিটি স্ট্যান্ড ঘিরে রয়েছে শ্রমিক সমিতি কিংবা মালিক সমিতির নামে-বেনামে বিভিন্ন সংগঠন। আর ওই সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে থাকছেন রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মী ও প্রভাবশালীরা। এদের সমন্বয়েই গড়ে উঠেছে পরিবহন খাতের চাঁদাবাজির সিন্ডিকেট। আবার প্রতিটি স্ট্যান্ডেই রয়েছে ওই সিন্ডিকেটের নিয়োগ প্রাপ্ত লাইনম্যান। সিএনজি, অটোরিকশা, বাস কিংবা ট্রাক থেকে ওই লাইনম্যানের হাতেই নির্ধারিত অংকের চাঁদার টাকা আদায় হচ্ছে প্রতিদিন। এভাবেই রচিত হয়েছে পরিবহন খাতে চাঁদাবাজির চিত্রনাট্য। পরিবহন খাতের চাঁদাবাজির সবচেয়ে বড় খাত হচ্ছে সিএনজি ও অটোরিকশা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সিএনজি চালক বলেন- রুটে চলাচল করতে হলে শুরুতেই এককালীন চাঁদা দিতে হয় ২ হাজার টাকা থেকে ৫ হাজার টাকা। এরপর প্রতিদিন চাঁদা দিতে হয় ২০ টাকা থেকে ৩০ টাকা। চাঁদা না দিলে চলাচল করতে পারবে না গাড়ী। টোকেনের মাধ্যমেও পরিবহন খাতে চাঁদাবাজি হচ্ছে বলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানিয়েছেন আরেক সিএনজি চালক। অনুসন্ধানে দেখা গেছে- জেলা সদর, রায়পুর, রামগতি, রামগঞ্জ, কমলনগর ও চন্দ্রগঞ্জ বাজার স্ট্যান্ডে বিভিন্ন পরিবহন থেকে চাঁদাবাজি চলছে প্রকাশ্যে।
এছাড়াও চাঁদাবাজির বড় স্ট্যান্ড হচ্ছে- সদরের উত্তর তেমুহনী, দক্ষিণ তেমুহনী, ঝুমুর সিনেমা হল সংলগ্ন, মজুচৌধুরীর হাট ফেরী ঘাট স্ট্যান্ড। রায়পুরের বাসাবাড়ি, রামগঞ্জের বাজার স্ট্যান্ড, কমলনগরের হাজিরহাট, রামগতির আলেকজান্ডার চাঁদাবাজরা রয়েছে সক্রিয়। জেলা সদর, রায়পুর, রামগঞ্জ, কমলনগর ও রামগতি উপজেলার অর্ধশত স্ট্যান্ডে সিন্ডিকেটের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট পরিবহন খাত।
এ ব্যাপারে জেলা বাংলাদেশ রোড ট্রান্সর্পোট অথরিটি তথা বিআরটিএ’র নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, জেলায় মোট সিএনজি অটোরিকশার রেজিষ্টশন দেওয়া হয়েছে প্রায় সাড়ে ৭ হাজার। বাকী কয়েক হাজার সিএনজি অটোরিকশা চলাচল করে থাকে স্ট্যান্ড কমিটিকে মোটা অঙ্কের চাঁদা দিয়ে। এ সব অবৈধ সিএনজিদের মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মামলা দেওয়া হচ্ছে।
এবিএন/অ.আ আবীর/জসিম/তোহা