শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • লক্ষ্মীপুরে কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে!

লক্ষ্মীপুরে কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে!

লক্ষ্মীপুরে কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প হুমকির মুখে!

লক্ষ্মীপুর, ০৫ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : লক্ষ্মীপুরে অনিয়ম, অব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে শুরু হওয়া প্রায় এক কোটি টাকার উন্নয়ন প্রকল্প এখন হুমকির মুখে পড়েছে। স্থানীয় চরভূতা হাতেম আলী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতির নামে এলজিইডি কর্তৃক বরাদ্ধকৃত উপ-প্রকল্পটির এমন অবস্থা। সমিতির মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিতে কার্যক্রমে স্থবিরতা, প্রকৃত উপকারভোগী কৃষকদর সদস্য না করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে।

ইতিমধ্যেই সরকারি নিয়ম অনুসারে প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল শেষ হয়ে গেছে। বর্তমানে ৪০ শতাংশ কাজ শেষ করা হলেও একটি চক্র সংশ্লিষ্ট অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে সরকারি টাকা লোপাটের পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা যায়, লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার ভবানীগঞ্জ, চরভূতা, চরমনসা, চর উভূতি এই চারটি গ্রামকে কর্ম এলাকা ধরে গঠন করা হয় চরভূতা হাতেম আলী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি। উন্নত পানি ব্যবস্থাপনা ও কৃষিজ জমির উৎপাদন বৃদ্ধিসহ সমিতির সদস্যদের আর্থসামাজিক উন্নয়নের লক্ষে একটি উপ-প্রকল্প অনুমোদন করে এলজিইডি। ১২ লাখ টাকায় সমিতির ঘর নির্মাণ, কৃষি জমিতে পানি সেচের জন্য ১১ টি ড্রেন নির্মাণ, খাল খনন ও আশে পাশের গাছ কাটা ও ক্ষতিপূরণের ৮ লাখ টাকাসহ এসব উন্নয়ন কাজে সরকারিভাবে বরাদ্ধ হয় প্রায় এক কোটি টাকা। প্রকল্পটির বাস্তবায়নকাল ধরা হয় ২০১৪ সাল থেকে ২০১৭ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত। বর্তমানে মেয়াদকাল শেষ হয়ে গেলেও প্রকল্পের ৪০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে মাত্র।

স্থানীয় কৃষক নুরুল ইসলাম ও মোর্শেদ অভিযোগ করেন, প্রকল্প এলাকার প্রকৃত উপকারভোগী কৃষকদের সমিতির সদস্য না করে অনিয়ম ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে সমিতি গঠন করা হয়েছে। সমিতির সভাপতি মো. শাহ আলম ও সাধারণ সম্পাদক মো. মাকছুদ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নামে বেনামে সমিতির সদস্য করেছেন। সমিতির কার্য কমিটির মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার পরও এখনো কোন নির্বাচন দেওয়া হয়নি।

মুসা মিয়া ও সিরাজ ব্যাপারী, সোহেলসহ বেশ কয়েকজন কৃষক অভিযোগ করেন, প্রকল্প এলাকার খাল পাশের গাছপালা কাটা যাওয়ায় ক্ষতিপূরণের জন্য সরকারি বরাদ্ধকৃত কোন টাকা পায়নি স্থানীয় ক্ষতিগ্রস্তরা। ক্ষতিপূরণের জন্য বরাদ্ধকৃত ৮ লাখ টাকা কমিটির লোকজন আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন তারা।

এ ব্যাপারে জানতে সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে তাদের কাউকে পাওয়া যায়নি। অফিসে তালা ঝুলতে দেখা গেছে। মুঠোফোনেও চেষ্টা করে তাদের বক্তব্য জানা যায়নি।

এদিকে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কমিটির লোকজনের সঙ্গে মিলে সংশ্লিষ্ট অফিসের অসাধু কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে এখন প্রকল্পে বরাদ্ধকৃত সরকারি টাকা লোপাটের পাঁয়তারা করছে বলেও অভিযোগ করেন স্থানীয় এলাকাবাসী।

জানতে চাইলে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সাইফুল হাসান রনি বলেন, সমবায় নীতিমালা অনুযায়ী কমিটি গঠন করা হয়েছে, কিছু বাদ পড়া সদস্য ও মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটির কথা স্বীকার করেন চেয়ারম্যান।

এদিকে জেলা সমবায় কর্মকর্তা মেহের উদ্দিন আহমেদ বলেন, চরভূতা হাতেম আলী পানি ব্যবস্থাপনা সমবায় সমিতি মেয়াদ উতীর্ণ, আর ওই কমিটি তাদের কোন অডিট না করায় তা বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ওই কমিটির কোন কার্যক্রম বৈধ নয় জানিয়ে জেলায় এ ধরণের ১৮টি সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে বলে জানান তিনি।

অন্যদিকে লক্ষ্মীপুর এলজিইডি কার্যালয়ের সোসিও ইকোনোমিক কর্মকর্তা সৈয়দ সালেহ ইসলাম ম্যানেজ হওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, প্রকল্পের বরাদ্ধ সম্পর্কে তিনি অবহিত নন, সুনির্দিষ্ট কোন তথ্য দিতে না পারলেও এই কর্মকর্তা প্রকল্পের কাজে স্থবিরতার কথা স্বীকার করেন। প্রকল্প চলমান রয়েছে বলেও জানান তিনি।

স্থানীয় বাসিন্দারা দাবি করেন, কৃষি উন্নয়নের স্বার্থে বিধি মোতাবেক সমিতি গঠন করে ও প্রকৃত কৃষকদের ক্ষতিপূরণ দিয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নজরদারিতে সঠিকভাবে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হোক।

এবিএন/আবীর আকাশ/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত