বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় সংসদে নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ০৭ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : সরকারি কর্মচারীদের বেতন দ্বিগুণসহ বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে : প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন প্রায় দ্বিগুণ করার পাশাপাশি বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমামের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন।

শেখ হাসিনা বলেন, এছাড়া এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কর্মরত শিক্ষক ও অন্যান্য কর্মচারীদের বেতনও একই হারে বৃদ্ধি করা হয়েছে। পাশাপাশি জাতীয় মজুরি স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়নে সম্মতি প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, এছাড়াও সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দেয়া সুযোগ-সুবিধার মধ্যে রয়েছে, পরিবারের সদস্য সংখ্যার মধ্যে পিতা-মাতাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল কর্মচারীর মূল বেতনের শতকরা ২০ ভাগ হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা চালু করা হয়েছে। কর্মচারীদের অবসরকালে অর্জিত ছুটি পাওনা সাপেক্ষে ১২ মাসের ছুটি নগদায়নের স্থলে ১৮ মাসের ছুটি নগদায়নের সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, পেনশনের সর্বোচ্চ মাসিক ৪০ হাজার ৫শ’ টাকার স্থলে ৭০ হাজার ২শ’ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। পেনশনের হার সর্বশেষ আহরিত মূল বেতনের শতকরা ৮০ ভাগের স্থলে ৯০ ভাগে পুনঃনির্ধারণ করা হয়েছে।

তিনি বলেন, বেতনের শতকরা ৩ দশমিক ৭৫ ভাগ থেকে শতকরা ৫ ভাগ হারে ক্রমপুঞ্জিভূতভাবে বার্ষিক বেতন বৃদ্ধির সুবিধা প্রদান করা হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেনশনযোগ্য চাকরিকাল প্রচলিত ১০ থেকে ২৫ বছরের স্থলে ৫ থেকে ২৫ বছরে পুনঃনির্ধারিত করা হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, আনুতোষিক হার প্রতি ১ টাকার বিপরীতে ২শ’ টাকার স্থলে ২৩০ টাকায় উন্নীত করা হয়েছে। শতকরা ১শ’ ভাগ পেনশন সমর্পণকারী কর্মচারীদের জন্য বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদান করা হয়েছে।

তিনি বলেন, সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য স্বাস্থ্য, দুর্ঘটনা ও জীবন বীমা প্রবর্তনের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। যে সকল পদে পদোন্নতির সুযোগ নেই বা খুবই সীমিত যে সকল পদে পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টির লক্ষ্যে অর্গানোগ্রাম পুনর্বিন্যাস করার প্রয়োজনীয় কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, চাকরি থেকে অবসর গ্রহণের বয়সসীমা মুক্তিযোদ্ধা গণকর্মচারীদের ক্ষেত্রে ৫৯ থেকে ৬০ বছর এবং অন্যান্যদের ৫৭ বছর থেকে ৫৯ বছরে উন্নীত হওয়ায় জনপ্রশাসনের সর্বক্ষেত্রে কাজের গতি বৃদ্ধি পেয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, প্রশিক্ষিত দক্ষ প্রশাসন গড়তে ‘অ্যানহেন্সমেন্ট অব ট্রেনিং ক্যাপাসিটি অব বিপিএটিসি’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৭ থেকে ২০২০ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হচ্ছে। এ প্রকল্পের আওতায় ‘বিপিএটিসি’ আধুনিকায়নসহ আবাসন সুবিধা ও অন্যান্য প্রশিক্ষণ সুবিধা বৃদ্ধি করার কার্যক্রম চলমান রয়েছে।

তিনি বলেন, ২০০৯ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৭ সালের জুন পর্যন্ত মেয়াদে উচ্চশিক্ষা ও প্রশিক্ষণের উদ্দেশ্যে ৩ হাজার ৮৪৮ জন কর্মকর্তা বিদেশে গেছেন।

যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে গ্রেনেড হামলা মামলার রায়: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলাটি বর্তমানে রায় প্রদানের পূর্ববর্তী ধাপ অর্থাৎ যুক্তিতর্ক পর্যায়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আজ তাঁর জন্য নির্ধারিত প্রশ্নোত্তর পর্বে সরকারি দলের সদস্য বেগম নাজিমা ফেরদৌসীর এক প্রশ্নের জবাবে আরো বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের যুক্তিতর্ক ইতোমধ্যেই শেষ হয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল পৃথিবীর ইতিহাসে নজিরবিহীন ভয়াবহতম নিষ্ঠুর হামলা।

শেখ হাসিনা বলেন, সে সময়ের ক্ষমতাসীন দল রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় বিরোধীদল নিশ্চিহ্ন করার ষড়যন্ত্র করেছিল। এ হামলায় মহিলা লীগ নেত্রী আইভী রহমানসহ ২৪ জন নেতা-কর্মীকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। আহত শত শত দলীয় নেতা-কর্মী দুঃসহ সেই স্মৃতি আজও শরীরে বয়ে বেড়াচ্ছে।

তিনি বলেন, এ বছরের ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত ৫২ জন আসামীর মধ্যে ১৮ জন আসামীর যুক্তিতর্ক শেষ হয়েছে। বাকি আসামীদের যুক্তিতর্ক শেষ হলেই এ মামলার রায় প্রদানের জন্য দিন ধার্য হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, খালেদা জিয়ার মন্ত্রিসভার একজন উপমন্ত্রী আব্দুস সালাম পিন্টু ও তার ভাই মোঃ তাজউদ্দিন এ মামলার অন্যতম আসামী। গ্রেনেড হামলা চলাকালে টিয়ার সেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের পালিয়ে যেতে সাহায্য করা হয়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রেনেড হামলার পরে যখন জানতে পারে যে, ‘আমি বেঁচে আছি, তখন সেই রাতেই তাজউদ্দিনসহ আরও কয়েকজনকে দেশ থেকে বিদেশে যাবার সুযোগ করে দেয়া হয়।’

তিনি বলেন, যেখানে গ্রেনেড হামলা হয় সে স্থানের সকল আলামত পরদিনই সরিয়ে ফেলা হয় ও রাস্তা ধুয়ে ফেলে অন্যান্য আলামতও নষ্ট করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, বিগত বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন গ্রেনেড হামলা মামলার প্রকৃত আসামীদের আড়াল করার জন্য তথাকথিত জজ মিয়া নাটক সাজিয়ে চার্জশিট দাখিল করে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরবর্তীতে জানা যায় জজ মিয়াকে এই নাটকে অংশ নেয়ার জন্য তাকে বেশ কিছুদিন মাসিক ভাতাও প্রদান করা হয়। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৬১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে যেনতেনভাবে তদন্ত সম্পন্ন করে।

তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতা গ্রহণের পর সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ তদন্ত শেষে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সঙ্গে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত সকল আসামীদের অন্তর্ভুক্ত করে চার্জশিট প্রদান করে এবং ২০১৪ সাল থেকে আরও ১৬৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়।

শেখ হাসিনা বলেন, এভাবে ২২৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ করে মামলাটি চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত