![‘সেনাবাহিনীকে যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে’](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/08/pm_124919.jpg)
বরিশাল, ০৮ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পবিত্র সংবিধান ও দেশের সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় সেনাবাহিনীকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক যে কোনো হুমকি মোকাবিলায় সদা প্রস্তুত থাকতে হবে।
আজ বৃহস্পতিবার বরিশালে শেখ হাসিনা সেনানিবাস উদ্বোধন এবং সদর দফতর ৭ পদাতিক ডিভিশনসহ ১১টি সদর ইউনিটের পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, দেশের গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক ধারা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি জনকল্যাণমূলক কাজে ভবিষ্যতে সেনাবাহিনীকে অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে হবে। দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী একাগ্রতা, কর্মদক্ষতা এবং নানাবিধ জনসেবামূলক কর্মকাণ্ডের জন্য সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতা অর্জন করেছে। যে কোনো দুর্যোগে আর্তমানবতার সেবা ও জানমাল রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনীর কর্তব্য ও দায়িত্বশীল ভূমিকা সবসময় প্রশংসিত হয়ে আসছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে দায়িত্বশীলতা ও সহমর্মিতার সঙ্গে দুর্গতদের সাহায্য, সহযোগিতা করে সশ্রস্ত্র বাহিনী অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে শান্তিরক্ষায় বাংলাদেশ এখন একটি ‘ব্র্যান্ড নেম’, যা আমাদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের।
নতুন সেনানিবাস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত অল্প সময়ের মধ্যে পায়রা নদীর পাড়ে এই লেবুখালীতে নতুন একটি সেনানিবাস প্রতিষ্ঠায় আপনারা সবাই আন্তরিকভাবে কাজ করেছেন।
নান্দনিক ও পরিবেশবান্ধব একটি সেনানিবাস প্রতিষ্ঠা করার জন্য সেনাবাহিনী প্রধান, এরিয়া কমান্ডার যশোর এরিয়া ও এই ডিভিশনের জিওসিসহ সকলকে ধন্যবাদ জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি এই নবগঠিত ডিভিশন, ব্রিগেড এবং ইউনিট সমূহের প্রতিটি সদস্য মুক্তিযুদ্ধ ও দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সম্মিলিতভাবে সাহসিকতার সঙ্গে দেশ ও জাতির কল্যাণে কাজ করে যাবে। এ এলাকায় সেনানিবাস প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের নতুন প্রাণ সৃষ্টি হয়েছে। মানুষের মধ্যে নতুন আশা জোগাচ্ছে এবং আপনাদের কাছে তাদের প্রত্যাশা বেড়েছে।
সেনাবাহিনীর সঙ্গে পারিবারিক বন্ধনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সঙ্গে রয়েছে আমাদের সুদৃঢ় পারিবারিক বন্ধন। আমার ভাই শহীদ ক্যাপ্টেন শেখ কামাল মহান মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। দ্বিতীয় ভাই শহীদ লেফটেন্যান্ট শেখ জামাল ১৯৭৫ সালে রয়েল মিলিটারি একাডেমি স্যান্ডহার্স্টস থেকে নিয়মিত প্রশিক্ষণ শেষে কমিশন লাভ করে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে যোগ দেয়।
তিনি বলেন, ছোটভাই রাসেলের ইচ্ছা ছিল বড় হয়ে সেনাবাহিনীতে যোগ দেবে। কিন্তু ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘাতকেরা সবাইকে নির্মমভাবে হত্যা করে। আমি আপনাদের মধ্যে আমার হারানো ভাইদের খুঁজে পাই।
সশস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে সরকারের নেওয়া বিভিন্ন কার্যক্রমের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উদ্বুদ্ধ দেশপ্রেমিক, পেশাদার সশস্ত্র বাহিনীকে বিশ্বমানের আধুনিক বাহিনীতে উন্নীত করতে আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১৬ সালে এই ডিভিশনটি স্থাপনের নীতিগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি।
৭ পদাতিক ডিভিশনকে পূর্ণতা দেয়ার লক্ষ্যে ডিভিশন সদর দফতর এবং দুটি ব্রিগেড সদর দফতরসহ মোট ১১টি ইউনিটের পতাকা উত্তোলন করা হয় অনুষ্ঠানে।
এর আগে সকাল সোয়া ১১টার সময় প্রধানমন্ত্রী হেলিকপ্টারে করে সেনানিবাসের বরিশাল অংশের বাকেরগঞ্জ পৌঁছান শেখ হাসিনা। পরে পটুয়াখালীর লেবুখালী অংশে যান এবং রাষ্ট্রীয় অভিবাদন গ্রহণ করেন।
সেনানিবাসে পৌঁছালে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল আবু বেলাল মোহাম্মদ শফিউল হক, ৭ পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল সাইফুল আলম।
প্রধানমন্ত্রী নতুন এ সেনানিবাস উদ্বোধনের পাশাপাশি সেনানিবাসের মাল্টিপারপাস হল, এসএম ব্যারাক, অফিস ভবনসহ ১৫টি স্থাপনা ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রী পরিষদ সদস্য, সংসদ সদস্য, বিভিন্ন বাহিনী প্রধানসহ সামরিক ও বেসামরিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
দুপুরে হেলিকপ্টারে করে বরিশাল শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত স্টেডিয়ামে (জেলা স্টেডিয়াম) যাবেন তিনি। বিকাল ৩টায় বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় যোগ দেবেন শেখ হাসিনা।
এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ