![মাদারীপুরে সমিতির অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/08/madaripur-press-conference_124923.jpg)
মাদারীপুর, ০৮ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : মাদারীপুর জেলার শিবচর উপজেলার সদর রোডে অবস্থিত গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ে সমিতির সাবেক সম্পাদক সাহিদা আক্তার মেরীনের নামে উক্ত সমিতির প্রায় অর্ধকোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে সংবাদ গতকাল প্রধান কার্যালয়ে সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সমিতির প্রধান কার্যালয়সহ শাখা কার্যালয়ের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও কালেকশন অফিসারদের সবার উপস্থিতিতে সংবাদিক বৃন্দ সম্মুখে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন সমিতির ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবুল হাশেম মিয়া। তিনি তার বক্তব্যে বলেন সাহিদা আক্তার মেরিন গত ২২/০৩/২০১১ইং তারিখ হতে বিভিন্ন মেয়াদে সম্পাদক পদে নির্বাচিত হয়ে ২৩/১১/২০১৭ইং পর্যন্ত সমিতির কার্যক্রম পরিচালনায় অংগ্রহণকরেন।
সম্পাদক থাকাকালীন সময়ে পদাধিকার বলে তিনি তার নিজ কর্ম এলাকার পূর্ব শ্যামাইল, চর শ্যামাইল, বাচামারা, চর বাচামারা, নলগোড়া, বাহাদুরপুর, বড় বাহাদুরপুর, গোয়ালকান্দা, পাঁচ্চর, মাদবর চর, সন্যাসীর চর সহ অন্যান্য এলাকায় ঋণ আদায়ের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিলেন। উল্লেখ্য যে বিগত ৬মাস ধরে তিনি পূর্বেরন্যায় সমিতির কর্মকান্ডে তেমন অংশগ্রহণ করেন না। বিষয়টি ব্যবস্থাপনা কমিটির দৃষ্টিগোচর হওয়ায় তাহাকে কারণ জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি জানান বয়স বেড়েছেতো ইদানিং শরীরটা ভাল যাচ্ছেনা। আমি আর সমিতিতে নিয়মিত থাকতে পারবোনা। তখন ব্যবস্থাপনা কমিটি তাকে বলেন তাহলে আপনার দায়িত্ব কাউকে বুঝিয়ে দেন। তখন তিনি জবাবে কিছুদিন সময়দেন আস্তে আস্তে বুঝিয়ে দিব। ইতোমধ্যে তার কর্মএলাকার বিতরণকৃত ঋণের কিস্তির টাকা সময়মতো অফিসের হিসাবে জমা না হওয়ায় তাহাকে উক্ত বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন সদস্যগন টাকাপয়সা নিয়মিত দিচ্ছেনা।
বিষয়টির সত্যতা জানার জন্য ফ্লিড সুপার ভাইজারগণ তাহার ফিল্ড পরিদর্শনে গিয়ে অফিস রেকর্ড অনুযায়ী সমিতির বিতরণকৃত ঋণের মধ্যে ১০৬ (একশত ছয়) জন সদস্যর ঋণের পাশ বইয়ের সাথে অফিসের মূল লেজার, জমার টপশীট ও আদায় টপশীটের সাথে হিসাবের ব্যাপক গড়মিল পরিলক্ষিত হয়। তখন অভ্যান্তরীন হিসাব নিরীক্ষকগন তাহার ১০৬ (একশত ছয়) জন সদস্যর হিসাব নিরীক্ষান্তে জমা টাকার হিসাবের সাথে মোট ৪৫,৯০,৫০০/- (পঁয়তাল্লিশ লক্ষ নব্বই হাজার পাঁচশত) টাকা গড়মিল প্রমানিত হয় যাহা তহবিল আত্মসাতের শামিল ও সমবায় আইন, বিধি এবং অত্র সমিতির উপ-আইন অনুযায়ী ইহা একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তখন সম্পাদক সাহিদা আক্তার মেরীনকে উক্ত টাকার ব্যাপারে জিজ্ঞাসাবাদ করলে তিনি বলেন আমার কাছে উক্ত সমুদয় টাকা আছে। কিছুদিনের মধ্যেই পরিশোধ করে দিব।
অতপর সাহিদা আক্তার মেরীন উক্ত টাকা সমিতির হিসাব বিভাগকে উক্ত টাকা জমা প্রদানের জন্য বারবার ওয়াদা করিয়াও টাকা জমা নাদিয়ে নানা রকম টালবাহানার আশ্রয় গ্রহণ করতে থাকেন। এমতাবস্থায় গত ১২/১২/২০১৭ইং তারিখ ব্যবস্থাপনা কমিটির জরুরী সভা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিষ্ঠানের অর্থ তছরূপ ও আত্মসাৎ এর অভিযোগে গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড- হতে সাহিদা আক্তার মেরিন এর সম্পাদকের পদ বাতিল করা হয়।
এর প্রেক্ষিতে সাহিদা আক্তার মেরীন বিগত ১৮/১২/২০১৭ইং তারিখে সকাল ১০ টায় গণ-উন্নয়ন বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেড এর প্রধান কার্যালয়ে উপস্থিত হইয়া উক্ত টাকা ফেরৎ না দেওয়ার কথা জানান। তখন ব্যবস্থাপনা কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাহিদা আক্তার মেরীনের বিরুদ্ধে ২৬/১২/২০১৭ইং তারিখে মাননীয় চীফ জুডিশিয়াল আদালত, মাদারীপুর ৪৮২/১৭ স্মারকে পিটিশন মামলা এবং ২৮/১২/২০১৭ইং তারিখে সমবায় আইন ২০০১ এর (সংশোধিত ২০০২ ও ২০১৩) এর ৫০ ধারায় জেলা সমবায় কার্যালয়, মাদারীপুরে ডিসপুট মামলা ও করা হয়। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন শাখা ব্যবস্থাপক আবুল খায়ের, আহসান হাবিব, আমিনুল ইসলাম, আব্দুল কাদের, প্রধান কার্যালয়ের চীফ হিসাবরক্ষক আবদুস সালাম জমাদ্দার, সিনিয়র অফিসার লায়লা পারভিন, অফিসার শিপ্রা দাস ও আইন সহায়ক কর্মকর্তা সেলিম হোসেন, আবু মাসুম প্রমূখ।
উল্লেখ্য যে, এসব বিষয়ে ক্ষিপ্ত হয়ে সাহিদা আক্তার মেরীন তার টাকা আত্মসাতের ঘটনা ধামাচাপা দেওয়া ও সমিতিকে ধ্বংস করা এবং আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য গত ৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ আমার বিরুদ্ধে ৩৫ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ করে সংবাদপত্রে খবর প্রকাশ করে। যাহা সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট ও ভিত্তিহীন।
এবং পরই সাহিদা আক্তারের ছেলে মেহদেী হাসান অত্র সমিতির আইন সহায়ক কর্মকর্তা সেলিম হোসেন কে তাদের বিরুদ্ধে মামলা পরিচালনা হতে বিরত থাকতে বলে অন্যথায় প্রাণনাশ করাহবে বলে হুমকি প্রদান করে। আমি আপনাদের সামনে এহেন কর্মকা-ের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি।
এব্যাপারে সংবাদ সম্মেলনে অভিযুক্ত সাহিদা আক্তার মেরীনকে মুঠোফোনে যানতে চাইলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা ও ভিক্তিহীন। বরং প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রমাণাদি আমার নিকট রয়েছে।
এবিএন/সাব্বির হোসাইন আজিজ/জসিম/নির্ঝর