বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলো এনামুল

বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলো এনামুল

সদরপুর (ফরিদপুর), ১১ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : বাবা একজন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। সারাজীবন নিজ হস্তে জ্ঞান করেছে দান কোমলমতি শিক্ষার্থীদের। চাকুরী জীবনে তার শিক্ষায় বর্তমানে দেশের বিভিন্ন দপ্তরে সেরা চাকুরীতে নিয়োজিত রয়েছেন।

প্রথম পরীক্ষার শুরু থেকে নিজ হাতে বাবা মোঃ হারুন অর রশীদ তার সন্তান কে নিয়ে আসতেন পরীক্ষা কেন্দ্রে। পরীক্ষা শেষ না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতেন পরীক্ষা কেন্দ্রের পাশে। পরীক্ষা শেষ হলে আবার ছেলে নিয়ে বাড়ি ফিরতেন বাবা। ভালো মানুষ হওয়ার জন্যে যেমন গড়তেন ছেলেকে তেমনি ভাবে মাদকাসক্তের হাত থেকে দূরে রাখতেই বাবার এমনিই খেয়াল ছিলো।

গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে বাবা না ফেরার দেশে চলে যায়। বাবার শাসন আর নিরাপদ বেষ্টিত মমতা হারিয়ে ফেলেছে। আজ রবিবার সকালে বাবার মরদেহ বাড়ির উঠানে রেখে মাধ্যমিকের চৌকাঠ পেরোতে বাবাকে ছাড়াই যেতে হয়েছে পরীক্ষার হলে।

ফরিদপুরের সদরপুরে আজ রবিবার এসএসসি পরীক্ষার অষ্টম দিনে এনামূল হক বাবার মরদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অষ্টম দিন (আজ রবিবার) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আইসিটি পরীক্ষা ছিলো তার। সে বাবুরচর উচ্চ বিদ্যালয় থেকে এবছর এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

জানা গেছে, বাবুরচর উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি প্রধান শিক্ষক আ. কাদের মিয়ার সহযোগিতায় এনামূল হক পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। এ ঘটনায় বেগম কাজী জেবুন্নেছা সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্র শোকের ছায়া নেমে আসে। এনামূল এক হাতে চোখ মুছেছে আর অন্য হাতে খাতায় উত্তর লিখেছে।

খবর পেয়ে মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জালাল আহম্মেদ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের প্রতিনিধি এনামূল হককে সান্তনা দিতে কেন্দ্রে যান।

জানা গেছে, এনামূল হকের বাবা মো. হারুন অর রশীদ গত বছর চরনাসিরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন। গত বছরই তিনি চাকুরী থেকে অবসর গ্রহণ করেন। তিনি হৃদরোগে অক্রান্ত ছিলেন। এর আগে তিনি ওপেন হার্ট সার্জারী করিয়েছিলেন।

গতকাল শনিবার রাত ১০টার দিকে ঢেউখালী ইউনিয়নের বাবুরচর কাচারী ডাঙ্গী গ্রামের নিজ বাড়িতে তার মৃত্যু হয়। স্ত্রী সালমা বেগমসহ স্বজনদের আর্তনাদে পুরো পরিবারে চলছে শোকের মাতম।

এনামূল হক তার এক মাত্র ছেলে। পরিবারে আরও তিন মেয়ে রয়েছে বড় মেয়ে শার্মি ও সেজ মেয়ে উর্মির বিয়ে হয়েছে। ছোট মেয়ে স্বর্না সদরপুর কলেজে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষায় এ বছর অংশ নেবে।

এবিএন/সাব্বির হাসান/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত