শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • সুনামগঞ্জের বেড়িবাঁধের কাজ অরক্ষিত: কৃষকরা শংকিত

সুনামগঞ্জের বেড়িবাঁধের কাজ অরক্ষিত: কৃষকরা শংকিত

সুনামগঞ্জের বেড়িবাঁধের কাজ অরক্ষিত: কৃষকরা শংকিত

সুনামগঞ্জ, ১৪ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : সময় গড়িয়ে যাচ্ছে , ফসলের মাঠে নতুন ধানের শীষ দুলছে কিন্তু হাওর রক্ষা বাঁধের কাজে নেই কোন অগ্রগতি। সঠিক সময়ে বাঁধের কাজ না হওয়াতে গত বোর মৌসুমে জেলার সবকয়টি হাওরে পানি প্রবেশ তলিয়ে নিয়ে যায় কৃষকের ফলানো সোনার ফসল। চার উপজেলার শস্য ভান্ডার দেখার হাওরে'র ১১টি বেড়িবাঁধের কাজের কোন অগ্রগতি নেই।

ভাটি বাংলা নামে পরিচিত হাওর বেষ্টিত সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, ছাতক ও দোয়ারা বাজার উপজেলার মিলন¯হল দেখার হাওরে'র বেড়িবাঁধের উপর নির্ভরশীল চার উপজেলার মানুষের একমাত্র অবলম্বন বোর ধানের ফসল। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ ই ডিসেম্বর বেড়ি বাঁধের কাজ শুরু হওয়ার কথা থাকলে ও এতবড় বিশাল প্রকল্পের কাজ গত শনিবার মাত্র শুরু হলো কিন্তু শেষ হবে কবে? গত শনিবার "হাওর বাঁচাও সুনামগঞ্জ বাঁচাও আন্দোলন " কমিটির কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা আহবায়ক কমিটির নেতৃবৃন্দ বিভিন্ন বাঁধের কাজ পরিদর্শনকালে দেখা যায় ৪টি উপজেলার মিলন¯হল দেখার হাওরে'র প্রাণকেন্দ্র উথারিয়া,হলদিখাড়া, দিগদাইড়,ধরের কিত্তা সহ বিভিন্ন বেড়িবাঁধের কাজের কোন অগ্রগতি হয়নি।

মাঠে সবুজ শীষের বোর ফসলের ফলন কৃষকের মুখে হাসি ফুটালে ও আতংকে কৃষকগণ বাঁধের কাজ নিয়ে। দেখতে দেখতে সময় অতিবাহিত হয়ে যাচ্ছে, চলে আসছে বৃষ্টির মাস। কৃষকের চোখে হাসি ফুটবে নাকি কান্না? সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী ১৫ ই ডিসেম্বর বেড়িবাঁধের কাজ শুরু ও ২৮ শে ফেব্রুয়ারী এর মধ্যে কাজ সমাপ্ত হওয়ার নির্দেশনা থাকলে ও সবে মাত্র কাজ শুরু হলো। সরকারি নীতিমালা অনুসারে জনস্বার্থে কাজ শুরুর সঙ্গে সঙ্গে সাইন বোর্ড টাঙ্গানো বাধ্যতামুলক থাকলে ও চোখে পড়েনি সার্বিক প্রকল্প বিবরণী নির্দেশনা মুলক কোন সাইন বোর্ড। বাঁধের জন্য কত টাকা বরাদ্ধ, কাজ শুরু কাজের সমাপ্তির মেয়াদ কতদিন এবং দৈর্ঘ্য ও প্রস্থ কৃষকেরা জানবে কি করে? প্রকল্প সভাপতি কে বা কারা না জেনে কাকে বলবে বাঁধের অগ্রগতি? তাছাড়া বাঁধের গোড়া হইতে মাটি তোলা হলে সামান্য বৃষ্টির পানিতে বাঁধটি ধসে পড়ার আশংকা থাকে।

বছরের শুরু থেকে শুধু বেড়িবাঁধ নিয়ে পরিকল্পনা গ্রহণ করা সত্ত্বে ও পত্রিকার পাতা খুললেই দেখা যায় কোন না কোন হাওরেই বাঁধের কাজের কথা। বাংলাদেশ একটি কৃষি প্রধান দেশ। এরই মধ্যে একটি মাত্র ফসলের উপর নির্ভরশীল হাওরের জেলা সুনামগঞ্জ। গত মৌসুমে অকালে পাহাড়ী ঢলে জেলার প্রত্যেকটি হাওরে অকালে পানি প্রবেশ করে কাচা সোনালী ফসল তলিয়ে গেলে কৃষকেরা দিশেহারা হয়ে পড়ে। খেয়ে না খেয়ে অতি কষ্টে দিনাতি পাত করে আবার বোর ধান মাঠে ফলিয়েছে। বাহির থেকে আসা সাহায্য-সহায়তা ও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা সাহয্যের চাল, ডাল, তেল কিছুটা স্বস্থি যুগিয়েছে।

প্রতিবারই কি আমরা অন্যের উপর নির্ভরশীল হব? কর্মসংস্থানের অভাবে জেলার এক-তৃতীয়াংশ মানুষ পাড়ি জমিয়ে ছিল ঢাকা,চট্টগ্রাম নারায়নগঞ্জ ও নরসিংদী সহ বিভিন্ন স্থানে গার্মেন্টস কো¤পানী, বিস্কুট ফ্যাক্টরী, রিকশা চালনাসহ বিভিন্ন পেশায়। জল ভরা চোখে তাদের একমাত্র লক্ষ্য ছিল কর্ম যাই হোক বাঁচতে হবে। বোর মৌসুম আসার সাথে সাথেই আশার বাণী নিয়ে আবার নেমে পড়ে চারা রোপনে। কিন্তু সঠিক সময়ে বেড়িবাঁধ নির্মাণ না হওয়াতে তারা অবাঁক দৃষ্টিতে তাকাচ্ছেন বাঁধ নির্মানকারী কর্তৃপক্ষের দিকে। কৃষকের মুখে হাসি ফুটাতে আমাদের সবার উচিত বাঁধ নির্মাণে দায়িত্বশীল হওয়া।

এবিএন/ অরুন চক্রবর্তী/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত