![ঝালকাঠির সিআইডি ইন্সপেক্টরের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/17/human-cain_126255.jpg)
ঝালকাঠি, ১৭ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : নলছিটির সাংবাদিক খলিলুর রহমান মৃধাকে প্রতিহিংসামূলকভাবে ডাকাতি মামলার চার্জশীটে নাম ঢুকিয়ে গ্রেফতার হয়রানির ঘটনায় ঝালকাঠির পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ইন্সপেক্টর মো. এনামুল হক’র বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু হয়েছে।
সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর নলছিটি শাখার সভাপতি ও প্রতিবাদী সাংবাদিক খলিলুর রহমানের আবেদনের প্রেক্ষিতে পুলিশ হেডকোয়ার্টারের এডিশনাল ডিআইজির (বিএ্যান্ডপিএস) নির্দেশে বরিশাল বিভাগের সিআইডি সিনিয়র এএসপি মো. নাছির আহম্মেদ হাওলাদারকে তদন্তের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
সাংবাদিক খলিলুর রহমানের আবেদন সূত্রে জানাগেছে, ২০০৭ সালের ১২ আগষ্ট রাতে নলছিটি পৌরসভার গৌরীপাশা গ্রামের হরিপদ দাসের বাড়িতে দুর্ধর্ষ ডাকাতি হওয়ার পরের দিন ১৩ আগষ্ট তার মেয়ে মিতা রানী দাস (নুপুর) বাদী হয়ে নলছিটি থানায় একটি ডাকাতী মামলা (নং-০৭) রেকর্ড করেন। (জিআর নং-১০৯/২০০৭, দন্ডবিধি ৩৯৫/৩৯৭ ধারা)।
মামলায় আজমল (২৫), পিতাঃ মোঃ শাহজাহান মিরা, মোঃ বেল্লাল (৩০) ও মোঃ সোহেল (৩২) উভয় পিতাঃ আবদুল করিম মৃধা, সর্ব সাং-গৌরীপাশা ও খলিল (৩০), পিতাঃ অজ্ঞাত গ্রামঃ শংকরপাশা কে নামধারী ও অজ্ঞাত ৮/১০ জনকে আসামী করা হয়।
তিনি আরও জানান, ঝালকাঠির সিআইডি ইন্সপেক্টর মোঃ এনামুল হক গত ২০১৭ সালের ২৮ মার্চ উক্ত মামলায় চার্জশীটভুক্ত করে মানবাধিকার কর্মী তথা সাংবাদিক খলিল মৃধা (৪২) কে ঝালকাঠি শহরের পূর্বচাদকাঠি আনসার ভিডিপি কার্যালয়ের সামনে থেকে গ্রেফতার করে কোর্টে চালান দেয়। এ গ্রেফতারের প্রতিবাদে ঝালকাঠি ও নলছিটির সকল সাংবাদিকসহ সুশীল সমাজের নেতৃবৃন্দ মানববন্ধন, সমাবেশ ও স্মারকলিপি প্রদান করে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও সাংবাদিক খলিল মৃধার মুক্তির দাবি জানায়। দীর্ঘ ১ মাস জেল হাজত বাস করার পর ২৭ এপ্রিল ঝালকাঠি জেলা জজ আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পান।
মামলার এজাহার, চার্জশীট ও সাংবাদিক খলিল মৃধার জন্ম সনদ, ভোটার তালিকাসহ জাতীয় পরিচয় পত্র পর্যালোচনা করে দেখা যায়, সাংবাদিক খলিল মৃধার পিতাঃ মোঃ মোশারেফ হোসেন মৃধা, সারদল গ্রাম, নলছিটি পৌরসভা। অথচ সিআইডি ইন্সপেক্টর এনামুল হক এজাহার নামীয় আসামী তথা শংকরপাশা গ্রামের খলিলকে গ্রেফতার না করে স্থানীয় একটি কুচক্রি মহলের সাথে আতাত করে সারদল গ্রামের সাংবাদিক মোঃ খলিলুর রহমান মৃধাকে গ্রেফতার করেন। শুধু তাই নয়, শংকরপাশা গ্রামে একাধিক খলিল নামক ব্যক্তি থাকা সত্বেও তাদের পাশ কাটিয়ে অদৃশ্য শক্তির ইশারায় অভিযোগপত্রে মানবাধিকার ও সমাজ কর্মী মোঃ খলিলুর রহমান মৃধার নাম অন্তর্ভূক্ত করে।
এ ঘটনায় সাংবাদিক মোঃ খলিলুর রহমান মৃধাকে হয়রানী মূলক মিথ্যা মামলায় অন্যায় ভাবে গ্রেফতার ও মামলা চার্জশীটভূক্ত করা থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য ১০ ডিসেম্বর ২০১৭ খ্রি: তারিখ পুলিশ হেডকোয়ার্টার এডিশনাল ডিআইডি (বিএ্যান্ড পিএস) এর বরাবর একটি লিখিত আবেদন করেন। কর্তৃপক্ষ উক্ত আবেদনটি আমলে নিয়ে বরিশাল সিআইডি সিনিয়র এএসপি মোঃ নাছির আহম্মেদ হাওলাদারকে তদন্তে নির্দেশ দেন।
গত ২১ জানুয়ারি সিআইডির সিনিয়র এএসপি মো. নাছির আহম্মেদ সাংবাদিক খলিলুর রহমান মৃধাসহ তার স্ত্রী সাবেক পৌর কাউন্সিলর, গৌরীপাশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েল সহকারী শিক্ষক নারগিস আক্তার লুনাকে বরিশাল সিআইডি অফিসে ডেকে লিখিত জবানবন্দী গ্রহণ করেন।
মামলার বাদী মিতা রানী দাস (নুপুর) জানায়, গত ২৪ জানুয়ারি তদন্তকারী কর্মকর্তা বরিশাল সিআইডি সিনিয়র এএসপি মোঃ নাছির আহম্মেদ হাওলাদার সরেজমিন তাদের বাড়িতে আসেন ও জবানবন্দী লিপিবদ্ধ করেন। এ সময় স্থানীয় পৌর কাউন্সিলর খান জামাল উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন। বাদী সাংবাদিক খলিলের বাসা দেখিয়ে বলেন তারা উভয়ে একই পাড়ার বাসিন্ধা ও তার বাবা মোশারেফ হোসেন মৃধাকেও তারা চেনেন।
এ মামলায় আমি তাকে আসামী করিনী বলে তদন্ত কর্মকর্তাকে জানিয়েছি। তবে তাকে চার্জশীটভুক্ত করা বা গ্রেফতার করার বিষয়ে আমি কিছুই জানিনা।
এবিএন/আজমীর হোসেন তালুকদার/জসিম/এমসি