
বিজয়নগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), ১৮ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বিজয়নগর উপজেলায় অধিকাংশ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নেই। পুরো উপজেলায় ২৩৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শহীদ মিনার রয়েছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানে। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কোনো কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বাঁশ,বেত, কলাগাছ, কাগজ দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার নিমার্ণ করে দিবসটি উদযাপন করা হয়। আবার অনেক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দিবসটি উদযাপনও করা হয় না।
উপজেলা প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, উপজেলায় ১০০টি সরকারি প্রাথমিক, একটি নি¤œ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ২২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ৪টি কলেজ ও ৭টি মাদ্রাসা রয়েছে। এ ছাড়া ৯৮টি কিন্ডারগার্টেন রয়েছে। এর মধ্যে উপজেলার ৪টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও তিনটি কলেজে শহীদ মিনার রয়েছে। এ বিষয়ে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. মাজহারুল হুদা বলেন, উপজেলায় স্থানীয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় কয়েকটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে।
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ১০০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে স্থানীয় ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তায় মাত্র ৪টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শহীদ মিনার নির্মাণ করা হয়েছে। বিদ্যালয়গুলো হলো উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের হরষপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুধন্তী ইউনিয়নের আলীনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতবর্গ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও পাহাড়পুর ইউনিয়নের খাটিংগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
উচ্চ মাধ্যমিক (কলেজ) পযার্য়ে উপজেলার চম্পকনগর মডেল স্কুল এন্ড কলেজ, কাজী মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় কলেজ, ইসলামপুর আলহাজ্ব কাজী রফিকুল ইসলাম স্কুল এন্ড কলেজ ছাড়া আর কোনো কলেজে শহীদ মিনার নেই। আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস এলে বাকি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে কলাগাছ, বাঁশ,বেত দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়।
ইতিমধ্যে উপজেলার কাজী শফিকুল ইসলাম বিশ^বিদ্যালয় কলেজে সম্প্রতি নির্মাণ করা শহীদ মিনার আগামী ২১ ফেব্রুয়ারি ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনের সংসদ সদস্য র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী এমপি উদ্ধোধন করবেন। এছাড়া উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের এক্তারপুর আর্দশ উচ্চ বিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের নিমার্ণ কাজ চলছে বলে জানা গেছে।
উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, উপজেলার হরষপুর ইউনিয়নের নিদারাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সোনামুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাচঁগাও সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বাগদিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, বড়চাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, মেঘশিমুইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাইপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। পত্তন ইউনিয়নের আদমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,
নোয়াগাঁও সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পাহাড়পুর ইউনিয়নের ভিটিদাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সেজামুড়া গ্রামের হুমায়ূন কবীর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, বুধন্তি ইউনিয়নের শেমড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কেনা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়। চম্পকনগর ইউনিয়নের আড়িয়ল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চান্দুরা ইউনিয়নের চান্দুরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, জালালপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সহদেবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, দক্ষিণ লক্ষীমুড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শহীদন মিনার নেই। উপজেলার বিষ্ণুপুরের অবস্থিত পূর্বাচল কলেজেও কোনো শহীদ মিনার দেখা যায়নি।
এছাড়াও কিন্ডারগার্টেন স্কুল গুলোর মধ্যে চান্দুরা ইউনিয়নের জালাপুর বাজারের অবস্থিত রয়েল প্রি-কিন্ডার গার্টেন, ইছাপুরা ইউনিয়নের বেগম মরিয়ম মডেল স্কুল, হরষপুর ইউনিয়নের বুল্লা শাহ আলম শিশু একাডেমী, বড়চাল প্রভাতী কিন্ডার গার্টেন, হরষপুর অবিনাশ শিশু একাডেমী, শামসুজ্জামান মডেল স্কুল, চাইল্ড হোড মডেল স্কুল, আল রশিদ মেমোরিয়াল কিন্ডার গার্টেন, পাঁচগাও বালিকা বিদ্যালয়, পাহাড়পুর ইউনিয়নের, রেনেঁসা একাডেমী, এম এ গণি আইয়িাল একাডেমী, শাহনেওয়াজ আইডিয়াল একাডেমী, চাইল্ড কেয়ার একাডেমী, শামসুল আলম সুন্নিয়া দাখিল মাদ্রাসা, ফোকাস আইডিয়াল কিন্ডার গার্টেন, সানফ্লাওয়ার কিন্ডার গার্টেন, পাওয়ারসেল কিন্ডার গার্টের, হানিফ অক্সফোর্ড কিন্ডার গার্টেন, শাহজাহান আইডিয়াল একাডেমীতে কোনো শহীদ মিনার নেই।
নিদারাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক (ভারপ্রাপ্ত) মাছুমা আক্তার জানান, সরকারিভাবে বরাদ্দের অভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে শহীদ মিনার তৈরি করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কলাগাছ, বাঁশ বেত দিয়ে অস্থায়ীভাবে শহীদ মিনার বানিয়ে শিক্ষার্থীরা ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। তাছাড়া ওই দিনে চিত্রাংকন, রচনা প্রতিযোগিতারসহ নানা রকম আয়োজনের পাশাপাশি দোয়া মাহফিলেরও আয়োজন করা হয়ে থাকে।
এব্যাপারে উপজেলার আওয়ামীলীগরে সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট তানভীর ভূঁইয়ার জানান, পর্যায়ক্রমে পরিকল্পনা করে উপজেলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শহীদ মিনার নিমার্ণ করা হবে।
এবিএন/এস.এম.টিপু চৌধুরী/জসিম/তোহা