শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

দৌলতপুরে ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী দিয়ে চলছে আট বছর

দৌলতপুরে ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী দিয়ে চলছে আট বছর

দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) , ১৯ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলীর পদটি শূন্য রয়েছে দীর্ঘ ৮ বছর। ঐ পদে ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলী হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান। যে কারণে মুখ থুবড়ে পড়েছে এখানকার সড়ক ব্যবস্থা ও অবকাঠামো উন্নয়ন। প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত বরাদ্ধ পাওয়া গেলেও জিল্লুর রহমানের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে কাজের মান অত্যান্ত খারাপ হওয়ায় ভেস্তে যাচ্ছে সরকারের উন্নয়ন কর্মকান্ড।

দু-বার এখানে নতুন উপজেলা প্রকৌশলী পোষ্টিং দেয়া হলেও জিল্লুর রহমান দায়িত্ব না দিয়ে প্রভাব খাটিয়ে সে সকল পোষ্টিং অর্ডার স্থগিত করেছে। এ কারণে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লর রহমানের ভুমিকা নিয়ে খোদ প্রকৌশল দপ্তর সমুহে প্রশ্ন উঠেছে।

প্রাপ্ততথ্যে জানাগেছে, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমান ২০১০ সালের ৩ মার্চ দৌলতপুর এলজিইডিতে যোগদান করেন। তখনকার উপজেলা প্রকৌশলী বদলি হওয়ায় তিনি ক্ষমতার দাপটে ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। দায়িত্ব নেবার পর থেকেই দুর্নীতি অনিয়মের আশ্রয় নিয়ে কতিপয় ঠিকাদারের সাথে যোগসাজস করে কাজ না করে বিল উত্তেলন, নিম্নমানের কাজ করে ঠিকাদারের সাথে ভাগবাটোয়ারা, সিংহভাগ কাজের প্রাক্কলনের চেয়ে ৭ থেকে ২৫ ভাগ পর্যন্ত বরাদ্ধ বাড়িয়ে এনে ভাগাভাগি করে নেবার অভিযোগ উঠে। প্রতিবছর উপজেলার গ্রামীণ সড়ক গুলো মেরামত ও পুনঃ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ ব্যয় হলেও দু-এক মাসের মধ্যেই তা চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারী সিংহভাগ কমিশন নিয়ে গোপন টেন্ডারে ২৮ লক্ষ টাকার কাজ পছন্দের ঠিকাদার কে দিয়ে করানোসহ সম্প্রতি উপজেলা ক্যাম্পাসে শিক্ষাভবন সম্প্রসারণে ঠিকাদরের সাথে যোগসাজসের অভিযোগের খবর সে সময় বিভিন্ন সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছে।

২০১৩ সালের ২০ জুন এলজিইডি/সিই/ই-৩৭/২০০৬/৪৮৮৪ নং স্বারকে খুলনা জেলার পাইকগাছা উপজেলা প্রকৌশলী নিরাপদ পাল কে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসাবে বদলী করা হলে ৩০ জুন তিনি দৌলতপুরে যোগদান করেন। কিন্তু উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লর রহমান নতুন প্রকৌশলী নিরাপদ পাল কে দায়িত্ব না বুঝিয়ে দিয়ে পরদিন ঢাকা চলে যান। এরপর ঐ বছর ৮ জুলাই এলজিইডি/সিই/ই-৮৫/২০১০/৫২৩২ নং স্বারকে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী নিরাপদ পালকে প্রেষণে স্থানীয় সরকার বিভাগের (এলজিইডি) প্রধান কার্যালয়ে ন্যস্ত হয়। সর্বশেষ, গত ৯ জানুয়ারী ২০১৮ ইং তারিখে এলজিইডির প্রধান প্রকৌশলী আবুল কালাম আজাদ স্বাক্ষরিত স্বারক নং ৪৬.০২.০০০০.০০১.৯৯.১৮৭.২০১৭-২১৪ আদেশে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কর্মরত উপজেলা প্রকৌশলী জহুরুল ইসলাম কে দৌলতপুর উপজেলা প্রকৌশলী হিসাবে বদলী করা হলেও সে আদেশ স্থগিত করা হয়েছে।

একাধিক সুত্র জানিয়েছে জিল্লুর রহমান এ আদেশ হাতে পাওয়ার পর ঢাকায় গিয়ে মোটা অংকের অর্থের বিনিময়ে আবারো সেই বদলী আদেশ স্থগিত করেছেন। ফলে, উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লুর রহমানের খুটির জোর সম্পর্কে দৌলতপুরবাসীর মনে নানা প্রশ্ন উঠেছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ঠিকাদার ও সংশ্লিষ্ট একাধিক সুত্র জানায়, জিল্লর রহমান নিজেকে আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির এক প্রভাবশালী নেতার কখনও ভাগ্নে আবার কখনও ভাতিজা পরিচয় দিয়ে থাকেন। এ বিষয়ে উপ-সহকারী প্রকৌশলী জিল্লর রহমানের কাছে জানতে চাইলে তিনি এ ব্যাপারে কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। এলজিইডির একাধিক সুত্র জানায়, নতুন প্রকৌশলীদের দায়িত্বভার না দেয়া এবং ভারপ্রাপ্ত হিসাবে জিল্লর রহমানের ঐ পদে থাকাটা মেটেও সমীচিন নয়।

এবিএন/জহুরুল হক/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত