![আমাদের ঐতিহ্য-সংস্কৃতিকে যথাযথ মর্যাদা দিতে হবে : প্রধানমন্ত্রী](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/20/pm_126754.jpg)
ঢাকা, ২০ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের গৌরবময় ইতিহাস ও কৃষ্টিকে কেউ যেন ভুলে না যায় সে জন্য তা সংরক্ষণ এবং মর্যাদা দেয়ার আহবান জানিয়েছেন।
আজ মঙ্গলবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে একুশে পদকপ্রাপ্তদের মধ্যে পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।
বাংলাদেশকে ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে সবার সহযোগিতা কামনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে এবং বিশ্বের দরবারে আমাদের ভাষা ও সংস্কৃতির ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে সবার সহযোগিতা দরকার। এ ছাড়া আগামী প্রজন্মের কাছে দেশের ঐতিহ্য তুলে ধরতে আমাদের ঐতিহ্য সংরক্ষণ করতে হবে। আমরা সব সময় বঙ্গবন্ধু আদর্শ নিয়ে এগিয়ে যেতে চাই। যে বাংলাদেশ ক্ষুধা ও দারিদ্রে জর্জরিত ছিল তা থেকে আমরা অনেকটা মুক্ত পেয়েছি। আমরা বিশ্ব দরবারে মাথা উঁচু করে থাকতে চাই। সেই চেষ্টাই করে যাচ্ছি। বাংলা নববর্ষ পালনের স্বীকৃতি কিন্তু এমনি এমনি আসেনি। এর জন্য আমাদের বিভিন্ন কর্মসূচি দিতে হয়েছিল।
শেখ হাসিনা বলেন, আমাদের ইতিহাসও বিকৃতি করা হয়েছে। বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসেবে বিশ্বে যে মর্যাদা পাওয়ার কথা ছিল তা হারাতে বসেছিলাম। কারণ ১৯৭৫ সালে জাতির জনককে হত্যা করা হয়। অনেক সংগ্রামের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। আমরা যেন নিজেদের ভাষা ও ঐতিহ্যকে ভুলে না যাই। তবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মেলাতে নতুন ভাষা ও সংস্কৃতির সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। তার পরও নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতি ঠিক রেখে এগিয়ে যাওয়া যায়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমিও প্রতিবছর বাংলায় ভাষণ দেই। এখন বিশ্বের অনেক দেশ ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন করে। এ ছাড়া বিভিন্ন ভাষা নিয়ে গবেষণা ও সংরক্ষণ করতে আমরা আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠা করি। তবে বিএনপি-জামায়াত সরকার সেটা বন্ধ করে দেয়।
এ সময় তিনি শীতলপাটি ও নকশিকাঁথার আন্তর্জাতিক স্বীকৃতিতে আওয়ামী লীগ সরকারের অবদানের কথা তুলে ধরেন। এ ছাড়া বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণেরও আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির কথা তুলে ধরেন, যা বাঙালি জাতির জন্য গৌরবের বলে উল্লেখ করেন।
স্বাধীনতার অর্জন যেন কোনোভাবেই নস্যাৎ না হয় সেদিকে সবাইকে সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
এর আগে ২০১৮ সালে ‘একুশে পদক’ প্রাপ্ত দেশের ২১ জন গুণীর হাতে পদক তুলে দেন তিনি।
একুশে পদকপ্রাপ্তরা
সমাজসেবায় এবার সম্মানজনক এ পদক পাচ্ছেন নিরাপদ সড়কের জন্য সামাজিক আন্দোলন গড়ে তোলা ইলিয়াস কাঞ্চন।
ভাষা আন্দোলনে প্রয়াত আ জ ম তকীয়ুল্লাহর সঙ্গে একুশে পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন অধ্যাপক মির্জা মাজহারুল ইসলাম।
প্রয়াত হুমায়ূন ফরীদিকে (হুমায়ূন কামরুল ইসলাম) অভিনয়ের জন্য পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
সংগীতে পদক পাচ্ছেন শেখ সাদী খান, সুজেয় শ্যাম, ইন্দ্র মোহন রাজবংশী, মো. খুরশীদ আলম ও মতিউল হক খান।
নৃত্যে মীনু হক, নাটকে নিখিল সেন (নিখিল কুমার সেনগুপ্ত), চারুকলায় কালিদাস কর্মকার এবং আলোকচিতে গোলাম মুস্তাফা এবার একুশে পদক পাচ্ছেন।
সাংবাদিকতায় রণেশ মৈত্র, গবেষণায় প্রয়াত ভাষাসৈনিক অধ্যাপক জুলেখা হক, অর্থনীতিতে মইনুল ইসলাম, ভাষা ও সাহিত্যে সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, সাইফুল ইসলাম খান (কবি হায়াৎ সাইফ), সুব্রত বড়ুয়া, রবিউল হুসাইন ও মরহুম খালেকদাদ চৌধুরী পদকের জন্য মনোনীত হয়েছেন।
এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ