![বুড়িমারীতে চাঁদাবাজি বন্ধে প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ চাইলেন এমপি](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/21/abnews-24.bbbbb_126921.jpg)
লালমনিরহাট, ২১ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থল বন্দরে ট্রাকষ্ট্যান্ডে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ তুলেছেন লালমনিরহাট-১ (হাতীবান্ধা-পাটগ্রাম) আসনের সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন। ওই চাঁদাবাজির কারণে স্থল বন্দরে অরাজকতা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে উল্লেখ করে তিনি তা বন্ধের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। গত ১৩ ফ্রেব্রুয়ারী এ সংক্রান্ত একটি অভিযোগ পত্র প্রধানমন্ত্রী বরাবর প্রেরণ করেন ওই আসনের এমপি, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি মোতাহার হোসেন। এ সব ঘটনায় গত সোমবার বাংলাদেশ শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও কাস্টমসের রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আহসানুল হক বুড়িমারী স্থল বন্দর পরিদর্শন করেছেন।
অভিযোগ পত্রে মোতাহার হোসেন এমপি উল্লেখ করেন, বুড়িমারী স্থল বন্দরে প্রতিদিন ১ হাজার থেকে ১২ শত ট্রাক লোড ও আনলোড হয়। ওই সকল ট্রাক প্রতি শ্রমিক কল্যাণে ৩৫ টাকা চাঁদা নেয়ার কথা। কিন্তু কতিপয় শ্রমিক ৩৫ টাকার রশিদ দিয়ে ট্রাক প্রতি ৫ থেকে ৮ শত টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। প্রতিদিন ৫ থেকে ৮ লক্ষ টাকা চাঁদাবাজি হচ্ছে। যা কোন ভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। ফলে বুড়িমারী স্থল বন্দরে ব্যাপক অরাজকতা বিরাজ করছে ও সরকারের ভাবমুর্তি নষ্ট হচ্ছে। কারা এ চাঁদাবাজির সাথে জড়িত তাদের নাম উল্লেখ করেন নাই অভিযোগ পত্রে মোতাহার হোসেন এমপি। তবে স্থানীয় আওয়ামীলীগের এক নেতা দাবী করেন, চাঁদাবাজির সাথে জেলার এক উপজেলা চেয়ারম্যান ও মটর মালিক সমিতির এক নেতা জড়িত।
এ ছাড়া সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন প্রধানমন্ত্রী বরাবর অপর একটি অভিযোগ পত্রে উল্লেখ করেন, বুড়িমারী স্থল বন্দরে পণ্য হ্যান্ডলিং (ম্যনুয়ালী) কাজে অনিয়মের মাধ্যমে শ্রমিকদের কোটি কোটি টাকা একটি ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান আতœসাত করছেন। প্রতিষ্ঠানটি আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও) এর কনভেনশন অনুযায়ী হ্যান্ডলিং শ্রমিকদের কল্যাণ নিশ্চিত করছে না। যা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা প্রয়োজন। তিনি বেশ কিছু দিন আগেও বুড়িমারী স্থল বন্দরে শ্রমিক কল্যাণের ব্যানারে কতিপয় বিএনপি-জামাতের চিহ্নিত শ্রমিকরা অবৈধ ভাবে ট্রাক থেকে চাঁদাবাজি করে সরকারের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করছে এ অভিযোগ এনে পুলিশের রংপুর অঞ্চলের ডিআইজিকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য একটি পত্র প্রেরণ করেন।
বুড়িমারী স্থল বন্দরের এসব অনিয়ম ও দুর্নীতির খোঁজ খবর নিতে গত সোমবার বাংলাদেশ শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও কাস্টমসের রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আহসানুল হকের নেতৃত্বে একটি দল স্থল বন্দর পরিদর্শন করেছেন। এ সময় তারা স্থল বন্দরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সিএন্ডএফ এজেন্টদের সাথে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। ওই প্রতিনিধি দলটি স্থল বন্দরের বিভিন্ন ফাইল-পত্র দেখেন।
বুড়িমারী স্থল বন্দরের সিএন্ডএফ এজেন্ট ও বুড়িমারী ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের আহবায়ক তাহাজুল ইসলাম মিঠু বলেন, জেলার একজন উপজেলা চেয়ারম্যান ও একজন মটর মালিক সমিতির নেতাসহ কতিপয় বিএনপি-জামাতের শ্রমিক সিন্ডিকেট করে চাঁদাবাজিসহ স্থল বন্দরের অনিয়ম করছে। ওই চাঁদাবাজির টাকায় বিএনপি-জামাতের লোকজনকে পুর্ণবাসন করছে আওয়ামীলীগের নেতারা। ফলে আমরা ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে বিভিন্ন বাঁধার সম্মুখীন হচ্ছি।
বুড়িমারী স্থল বন্দর শ্রমিক কল্যাণ ইউনিয়নের সভাপতি আওলাদ হোসেন ট্রাকে চাঁদা আদায়ের বিষয়ে কোন কথা বলতে রাজি হয়নি। বাংলাদেশ শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার জিয়া উদ্দিন আহম্মেদ ও কাস্টমসের রংপুর বিভাগীয় কমিশনার আহসানুল হক বলেন, বার বার বুড়িমারী স্থল বন্দরে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। পুরো বিষয়টি শুল্ক গোয়েন্দা বিভাগ ও কাস্টমস থেকে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
স্থানীয় সংসদ সদস্য মোতাহার হোসেন বলেন, চাঁদাবাজি কারণে বুড়িমারী স্থল বন্দরে অতিষ্ট লোকজন আমার কাছে অভিযোগ নিয়ে আসছে। তাই আমি ওই এলাকার এমপি হিসাবে সরকারের ভাবমূর্তি রক্ষা করতেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর অভিযোগ করেছি।
এবিএন/আসাদুজ্জামান সাজু/জসিম/তোহা