বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

একুশের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

একুশের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ২১ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী বলেন, একুশের চেতনায় বাংলাদেশকে একটি উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলাই এই সরকারের লক্ষ্য বলে উল্লেক করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা অনেক দূর এগিয়েছি। ইতোমধ্যে আমাদের নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু যে জাতি রক্ত দিয়ে দেশ স্বাধীন করেছে, তাদের সঙ্গে তো নিম্ন শব্দটি থাকতে পারে না। আমাদের এখন একটি সুযোগ এসে গেছে। যে কয়টি ক্যাটাগরিতে অর্জন থাকলে আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেতে পারি, তার প্রতিটি শর্তই বাংলাদেশ এখন পূর্ণ করেছে। কাজেই আমাদের মর্যাদাটা আরও এক ধাপ ওপরে এগিয়ে নিতে পারবো।’

আজ বুধবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটউশনে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস ও শহীদ দিবস উপলক্ষে চার দিনব্যাপী আয়োজনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।

একুশের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

রক্তের অক্ষরে ভাষার মর্যাদাকে রক্ষার প্রসঙ্গে টেনে এসময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২১ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছি। এটা আমাদের জন্য বিরাট গর্বের। কাজেই এই ভাষার ব্যবহার ও চর্চা ভুলে গেলে চলবে না। বাঙালি হিসেবে সব ঐতিহ্য আমাদের ধারণ করতে হবে। চর্চা করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘জাতির পিতা জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন। তারই পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমি প্রতিবছর জাতিসংঘে বাংলাভাষায় ভাষণ দিয়ে থাকি।’

একুশের পথ ধরে স্বাধীনতা এসেছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘একটা জাতিকে ধ্বংস করার জন্য তার ভাষার ওপর, সংস্কৃতির ওপর আঘাত করা হয়। সেই ষড়যন্ত্রটা পাকিস্তানি শাসকেরা আমাদের ওপর করেছিল। এরই পথ ধরে আমরা মহান মুক্তিযুদ্ধে বিজয় অর্জন করে বাঙালি জাতি হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছি। রাষ্ট্র পেয়েছি।’

একুশের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

তিনি বলেন, ‘১৯৫৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন না করলে পাকিস্তান শাসনতন্ত্রে বাংলা ভাষা মর্যাদা পেতো না। তখন ২১ ফেব্রুয়ারি শহীদ দিবস ঘোষণা করে। শহীদ মিনার গঠন করে। এজন্য বাজেটও করা হয়। তবে আইযুব খান সামরিক শাসন দেওয়ার পর সেটা তখন এগোয়নি।’

পাকিস্তান সরকারের সময় বাংলা ভাষা ব্যবহারে বিভিন্ন বিধি-নিষেধের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘বাংলাভাষা নিয়ে অনেক যন্ত্রণা আমাদের সইতে হয়েছে। ভুক্তভোগী হিসেবে আমাদের বিষয়টি মনে আছে। একসময় আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হলো বাংলা অক্ষরে বাংলাভাষা লেখা যাবে না। আরবি হরফে বাংলা লিখতে হবে, এই দাবির প্রতিবাদ করলো বাঙালিরা। তারপর বলা হলো, রোমান হরফে বাংলা লিখতে হবে। এরও প্রতিবাদ হলো। তারপর এলো রবীন্দ্রনাথ পড়া যাবে না। তিনি হিন্দু। এ জন্য তার লেখা পড়লে আমাদের মুসলমানিত্ব নষ্ট হয়ে যাবে। জাতীয় কবি নজরুল ইসলামের লেখাগুলোকে মুসলমানি ভাষা দেওয়া হবে। তার ‘মহাশ্মশান’ হয়ে গেলো ‘গোরস্থান’। ‘সকালে উঠিয়া আমি মনে মনে বলি’কে পরিবর্তন করা হলো। লেখা হলো, ‘ফজরে উঠিয়া আমি দেলে দেলে বলি।’ আমাদের ছাত্রজীবনে কত রকমের যন্ত্রণাভোগ করেছি, তা বুঝতে পারছেন।’’

একুশের চেতনায় দেশকে গড়ে তোলাই সরকারের লক্ষ্য: প্রধানমন্ত্রী

শ্রীলঙ্কায় এবার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের প্রসঙ্গ টেনে সরকার প্রধান বলেন, ‘আমরা সেখানে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালনের কিছু কিছু চিত্র দেখেছি। এজন্য সত্যিই আমরা আনন্দিত। জাতিসংঘ সদস্যভুক্ত সব দেশে যেন এই দিবসটি পালিত হয়, আমরা এর জন্য তথ্য সব জায়গায় পাঠিয়েছি। আমি মনে করি, আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট থেকেও প্রতিবছর এ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া উচিত। তাহলে সবাই বিষয়টি জানতে পারবে।’

বাংলাদেশ শিগগিরই উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি পাচ্ছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ার জন্য যত শর্ত রয়েছে, তার সবই বাংলাদেশ পূর্ণ করেছে। আমরা উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে নিজেদের অবস্থানটাকে উন্নত করতে পারবো। সেই পর্যায়ে এসে গেছি। ইনশাআল্লাহ সেই ঘোষণা আপনারা শিগগিরই পাবেন।’

এবিএন/জনি/জসিম/জেডি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত