![‘খালেদা জিয়া দুর্নীতি করেছেন বলেই শাস্তি ভোগ করছেন’](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/22/pm-rajshahi-abn_127111.jpg)
রাজশাহী, ২২ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘বেগম জিয়া দুর্নীতি করেছেন বলেই শাস্তি ভোগ করছেন’।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজশাহীর আলিয়া মাদ্রাসা মাঠে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় তিনি এ কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিএনপি-জামায়াত যেখানে সন্ত্রাস কায়েম করে, আওয়ামী লীগ সেখানে জনগণের জন্য উপহার নিয়ে আসে।
এর আগে বিকেল ৩টা ৫০মিনিটে জনসভা মঞ্চের পাশে রাজশাহীর উন্নয়ন প্রকল্পগুলোর নাম ফলকের ভিত্তিপ্রস্তরের উন্মোচন ও উদ্ধোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর ৩টা ৫৫ মিনিটে জনসভা মঞ্চে আসন গ্রহণ করেন তিনি এবং মঞ্চে ওঠে জনতাকে হাত উচিয়ে অভিবাদন জানান।
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় খালেদা জিয়ার সাজার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বেগম খালেদা জিয়া গ্রেপ্তার হয়েছেন। কেন গ্রেপ্তার হয়েছেন? এতিমের টাকা ১৯৯১ সালে এতিমখানা তৈরি করবে বলে বিদেশ থেকে টাকা এনেছে। কিন্তু এতিমখানা কই? কেউ এতিমখানার ঠিকানা জানে না।’
‘টাকা নয় ছয় করে লুটপাট করে খেয়েছে। আর ২৭ বছর পরে বলে, টাকা তো আছে, সুদে আসলে বেড়েছে। এতিমের টাকা এতিমের কাছে যায় নাই। সে টাকা লুট করে খেয়ে নিয়েছে।’
মামলা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এই মামলা দিয়েছে কে? মামলা দিয়েছে তত্ত্বাবধায়ক সরকার। সেই মামলায় সাজা দিয়েছে, আজকে তাকে গ্রেপ্তার করেছে। লুট করা, চুরি করা, এটা তাদের চরিত্র।’
‘বিএনপি-জামায়াত যখন সরকারে ছিল পাঁচ বার বাংলাদেশ বিশ্বে দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। আমেরিকার ফেডারেল কোর্ট তার (খালেদা জিয়া) ছেলে (তারেক রহমান) যে চুরি করেছে, ঘুষ খেয়েছে সে কথাটা তারাই বলেছে। সিঙ্গাপুর কোর্ট সেই একই কথা (আরাফাত রহমান কোকোর ঘুষ) বলেছে। এই টাকা দেশের কাজে লাগেনি, বিদেশে পাচার করেছে।’
খালেদা জিয়ার মু্ক্তির দাবিতে আন্দোলনকারী বিএনপি নেতাদের কটাক্ষ করেন প্রধানমন্ত্রী। বলেন, ‘আজকে বিএনপি নেতারা আন্দোলন করে। কিসের আন্দোলন? টাকা চুরি করে তাদের নেত্রী জেলে গেছে। আন্দোলন চোরের জন্য?’
‘এতিমের টাকা চুরি করে খাওয়া কোরআন শরিফেও নিষেধ আছে। কোরআন শরিফেও বলা আছে, এতিমের টাকা চুরি করো না, এতিমকে দাও।’
‘২৭ বছরে এতিমের ভাগ এতিমকে দিতে পারে নাই। সেই টাকা তার নিজের কাছে রেখে দিয়েছে। আর তারই শাস্তি আজকে সে ভোগ করছে।’
‘আমার এটাই প্রশ্ন, এতিমখানার ঠিকানাটা কোথায়, সেটা দিতে পার নাই, সেখানে কয়জন এতিম আছে, তার কোনো সংখ্যা নাই। এতিমরা কি এতটা টাকাও পেয়েছে এ পর্যন্ত? পায় নাই?’
‘তারা বলে এতিমের টাকা সুদে আসলে বেড়েছে। কিন্তু সুদের টাকা খেয়েছে কে? ভোগ করেছে খালেদা জিয়া আর তার পরিবার আর দলের লোকজন। এতিমের তো কোনা ভাগ্যে পরিবর্তন হয়নি। তাদেরকে বঞ্চিত করেছে।’
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কল্যাণ ট্রাস্টের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই কেয়ারটেকার সরকার তন্নতন্ন করে খুঁজেছে, কোনো অনিয়ম পায় কি না, আমাকে কোনোভাবে বাঝাতে পারে কি না। কিন্তু তারা সেখানে পায় নাই। আমি বলেছিলাম, আপনারা ভালোভাবে তদন্ত করে দেখেন।’
‘জনগণের জন্য কাজ করতে আসি, জনগণের সম্পদ কেড়ে নিতে না।’
‘পৈত্রিক সূত্রে যে বাড়ি পেয়েছি, জনগণকে দান করে দিয়েছি। যে অর্থ পেয়েছি, ট্রাস্ট করে এ দেশের ছেলে মেয়েদের শিক্ষার জন্য বৃত্তি দিচ্ছি।... আমরা তো এতিমের টাকা মেরে খাইনি, আমরা মানুষকে দিয়েছি।’
সরকারের বয়স্ক, বিধবা, অন্তঃসত্ত্বা দরিদ্র নারীর ভাতা চালুর বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘প্রায় ৬৪ লাখ মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভাতা পায়।... দুই কোটি তিন লক্ষ শিক্ষার্থীকে প্রতি মাসে বৃত্তি দিচ্ছি।’
‘আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন হয়, কল্যাণ হয়। আর বিএনপির কী করে সেটা বিচার করে দেখেন। কেউ যদি এতিমের টাকার লোভ সামলাতে না পারে, তো তারা দেশের মানুষটাকে দেবেটা কী?’
খালেদা জিয়া পরিবারের অঢেল সম্পদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তাদের ছিল টা কী? ৮১ সালে যখন জিয়া মারা গেল তখন বলল, জিয়া পরিবারের কিছু নাই। আছে ভাঙা সুটকেস আর ছেড়া গেঞ্জি। আজকে তারা শত শত কোটি টাকার মালিক কীভাবে জানি না। আজকে বিদেশও টাকা পাচার করে।’
‘কত কিছু তারা করেছে, কোকো ওয়ান, কোকো টু থেকে কোকো ছয় পর্যন্ত লঞ্চ, ড্যান্ডি ডায়িং ইন্ডাস্ট্রি থেকে কত কিছু করেছে। ব্যাংকের থেকে নয়শ কোটি টাকা ঋণ নিয়ে তা ফেরত পর্যন্ত দেয় নাই।’
এবিএন/জনি/জসিম/জেডি