![প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে চলছে কাঁকড়া নিধন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/02/24/abnews-24.bbbbbbbbbbbbbbbbb_127423.jpg)
কয়রা (খুলনা), ২৪ ফেব্রুয়ারি, এবিনিউজ : জানুয়ারি-ফ্রেব্রুয়ারি কাঁকড়ার প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনে কাঁকড়া ধরা নিষিদ্ধ থাকলেও বন বিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে এক শ্রেণীর অসাধু জেলে বনের ভেতরের বিভিন্ন নদী খাল থেকে অবাধে কাঁকড়া আহরন করেছে। এ সকল কাঁকড়া স্থানীয় ফড়িয়াদের মাধ্যমে ডিপোয় সরবরাহ করছে জেলেরা। ডিপো মালিকরা মজুদকৃত কাঁকড়া প্রতিদিন মিনি ট্রাক ও নছিমনে ভর্তি করে পাইকগাছা আড়ত, কপিলমুনি বাজার, চুকনগর ও খুলনা সহ অন্যত্র নিয়ে উচ্চমূল্যে বেচা বিক্রি অব্যাহত রেখেছে ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, প্রজননের সময়কাল হিসেবে প্রতি বছর জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দু’মাস বন বিভাগ কাঁকড়া ধরার পাশ পারমিট বন্ধ রাখে। তা সত্বেও অগনিত জেলে বিনা পারমিটে সুন্দরবনে প্রবেশ করে মা কাঁকড়া আহরন করে ১ হাজার থেকে ১২শ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে আর্থিক ফায়দা লুটে নিচ্ছে। মাঠ পর্যায়ের বনরক্ষীরা বিষয়টি জানাশোনার পরও সুন্দরবনের ভেতরে অবৈধ উপায়ে কাঁকড়া আহরনকারী অসাধু জেলেদের বিরুদ্ধে উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহন না করায় জনমনে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। কয়রা সদর, জোড়শিং বাজার, কাটকাটা, ৬নং কয়রা, দেউলিয়া বাজার, চাঁদালি, আমাদি, গিলাবাড়ি, বানিয়াখালি, হড্ডা, ফুলতলা খোড়লকাটি বাজার সহ অন্যত্র সচরাচর পথে ঘাটে ড্রাম ও ঝুড়ি ভর্তি কাঁকড়ার আনাগোনার শেষ নেই।
কাটকাটা বেড়িবাঁধ সংলগ্ন তারক ও প্রভাষ মন্ডলের ডিপোয় দাদনভুক্ত বেশ কয়েকজন জেলে প্রতিনিয়ত সুন্দরবন থেকে কাঁকড়া আহরন শেষে মজুদ করে। পরে সেখান থেকে ড্রাম ভর্তি কাঁকড়া নছিমনে কয়রা সদর ও পাইকগাছার ডিপোয় নিয়ে যেতে দেখা গেছে। প্রশাসনের লোকজনের সামনে দিয়ে প্রজনন মৌসুমে অহরহ কাঁকড়া পরিবহন করা হলেও অসাধু চক্রের বিরুদ্ধে তেমন কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেই বললে চলে। অবশ্য আংটিহারা কোস্টগার্ড গত কয়েকদিনে জোড়শিং মোকাম ও শাকবাড়িয়া নদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৬শ কেজি কাঁকড়া জব্দ করে নদীতে অবমুক্ত করেছেন। সুন্দরবনের সম্পদ অবৈধচক্রের হাত থেকে পাচার ঠেকাতে উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় একাধিকবার আলোচিত হলেও পাচার রোধে তেমন কোন অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না।
প্রজনন মৌসুমে মা কাঁকড়ার পাচার ঠেকাতে ডিপোগুলোয় ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনার দাবী করেছেন এলাকার বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষেরা। উপজেলা কাঁকড়া সমিতির সভাপতি অসীম কুমার জানিয়েছেন জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি দু’মাস কাঁকড়ার প্রজনন মাস বিবেচনায় এনে তিনি তার ডিপো বন্ধ রেখেছেন। তবে অন্যান্য ব্যবসায়িরা নির্দেশনা না মেনে প্রজনন মাসে বনের কাঁকড়া ক্রয় করে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। লোকালয়ে যে সকল প্রজেক্টে কাঁকড়ার চাষ হচ্ছে সে সকল কাঁকড়া বেচাবিক্রিতে বাঁধা নেই বলে তিনি জানান।
এ ব্যাপারে খুলনা রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক মোঃ শোয়াইব খান বলেন, প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের কাঁকড়া আহরন করা নিষিদ্ধ। কোথাও কাঁকড়া দেখতে পেলে সেটা সুন্দরবনের ছাড়া অন্য জায়গার হতে পারে। যে সকল ডিপোয় বনের কাঁকড়া কেনা বেচা হচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
এবিএন/শহিদুল্লাহ/জসিম/তোহা