বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

পোরশায় কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে আম

পোরশায় কৃষকদের ভাগ্য বদলে দিয়েছে আম

পোরশা (নওগাঁ), ১০ মার্চ, এবিনিউজ : আম বদলে দিয়েছে নওগাঁর পোরশা উপজেলার কৃষকদের ভাগ্য। আগে ধান ছিল এ উপজেলার প্রধান অর্থকারী ফসল। আর এখন আম হছে এখানকার প্রধান অর্থকারী ফসল। এখানে ধানের তুলনায় আমে প্রচুর টাকা আয় হচ্ছে। তাই এ উপজেলার কৃষকরা আবাদী জমিতে এখন আম গাছ রোপনে ঝুঁকে পড়েছেন।

তবে আম গাছের নিচে বিভিন্ন জাতীয় ফসল চাষ করতে পাচ্ছেন কৃষকরা। ফলে এখানকার কৃষকদের আয়ের উৎস বেড়ে গেছে। বর্তমান সময়ে পোরশার সকল আম বাগানে মুকুলে ভোরে গেছে। এবছর আমের বাম্পার ফলনের আশা করছেন চাষীরা।

জানা যায়, পোরশা উপজেলায় বানিজ্যিকভাবে গত ২০ বছর পূর্ব থেকে আমগাছ রোপন শুরু করা হলেও, গত ২০০৫ সাল থেকে এ উপজেলার কৃষকরা ব্যাপক ভাবে আম গাছ রোপন করা শুরু করেন। বর্তমান সময়ে কৃষকরা আমগাছ রোপন করতে ব্যাপকভাবে ঝুঁকে পড়েছেন।

কৃষকদের দেয়া তথ্য মতে, এখন ১ বিঘা (৩৩ শতক) আবাদী জমিতে ধান হয় ১৫-২০ মোন। যার মূল্য ১৫-২০ হাজার। ধান চাষ করতে প্রতি বিঘা জমিতে খরচ হয় প্রায় ৮ হাজার টাকা। খরচ বাদ দিয়ে কৃষকদের হাতে থাকে প্রায় ৭ হাজার থেকে ১২ হাজার টাকা।

তবে কৃষকদের মতে এবছর ধানের দাম ভাল পাওযায় ধান চাষ করে লাভবান হয়েছেন তারা। আর অন্যান্য বছরের মতো এ বছর যদি ধানের দাম কম হতো তাহলে লোকসান অথবা লাভ না হয়ে সমান সমান অবস্থায় থাকতো বলে অভিমত কৃষকদের।

অপরদিকে আমচাষীদের দেয়া তথ্য মতে, ১ বিঘা (৩৩ শতক) জমিতে বড় সাইজের আমগাছ রোপন করা যায় প্রায় ২০ পিস। আর আমরূপালী জাতীয় গাছ হলে বিঘাপ্রতি প্রায় দেড় শতাধিক আম গাছ রোপন করা যায়।

প্রতি বিঘা আমের বাগানে খরচ বাদে লক্ষ লক্ষ টাকা আয় কর যায় বলে জানান আম চাষীরা। যে কারনে এ উপজেলার কৃষকরা ধানের চাষাবাদ ছেড়ে দিয়ে এখন আমের উপর ঝুকেছেন।

উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, পোরশা উপজেলায় মালিকানাধীন জমির পরিমান প্রায় ৫০ হাজার একর। এর মধ্যে আমের বাগান তৈরি হয়েছে প্রায় ১০হাজার একর। তবে আম চাষীদের হিসাব মতে, পোরশা উপজেলার মোট জমির পরিমানের প্রায় অর্ধেকের বেশি জমিতে ছোড়, বড়, মাঝারীসহ সকল ধরনের সাইজের আম গাছ রোপন করা হয়েছে।

আম গাছ রোপন করাকে ঘিরে উপজেলার বিভিন্ন স্থানে তৈরি হয়েছে অনেক নার্সারী। যারা আম গাছ রোপন করছেন তারা নার্সারী থেকে গাছ কিনে এনে জমিতে রোপন করছেন।

উপজেলার বড় রনাইল মরাকাঠা গ্রামের নার্সারী মালিক মনছুর রহমান জানান, পোরশা উপজেলায় চাষকৃত আমের মধ্যে নেংড়া, খিরসাপাত, গোপালভোগ, লখনা, আশ্বিনা, ফজলী, আমরূপালীসহ বেশ কয়েক জাতের আম গাছ রোপন করছেন আম চাষীরা।

উপজেলার সহড়ন্দ গ্রামের একজন আমচাষী জানান, তিনি তার দেড় বিঘা জমিতে ধান পেতেন ২২-২৫ মণ, যার বর্তমান মূল্য ২২ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা। বেশ কয়েক বছর পূর্বে ঐ জমিতে লাগানো হয়েছে আম গাছ। বর্তমানে ঐ জমির আম গাছ থেকে প্রতি বছর আয় করেন তিনি প্রায় ৭০ হাজার থেকে ১ লক্ষ টাকা।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মাহফুজ আলম ও উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল হাই জানান, পোরশায় প্রতি বছর আম গাছ রোপনের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। এজন্য প্রতি বছর আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রাও বাড়ছে। আগামীতে চাঁপাইকেও ছাড়িয়ে যেতে পারে পোরশার আম।

তারা বলছেন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে গত বছরের তুলনায় এবছর ব্যাপক আম উৎপাদন হবে। আর কিছুদিন পর এ বছরের আমের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হবে বলেও তারা জানান।

এবিএন/ডিএম রাশেদ/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত