বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ কমেছে প্রায় ৫শ হেক্টোর জমির
বিএডিসি উচ্চ মূল্যে পেঁয়াজ বীজের ভাল্ব বিক্রির কারণে

ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ কমেছে প্রায় ৫শ হেক্টোর জমির

ফরিদপুরে পেঁয়াজ বীজের আবাদ কমেছে প্রায় ৫শ হেক্টোর জমির

ফরিদপুর, ১২ মার্চ, এবিনিউজ : ফরিদপুর জেলার উৎপাদিত পেঁয়াজ বীজ প্রায় সারা দেশের চাহিদা পুরণ করে থাকে। ফরিদপুর জেলার মাটি ও আবহাওয়া পেঁয়াজ বীজ উৎপাদনের জন্য উপযোগী হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পায় এই অঞ্চলে পেঁয়াজ বীজের আবাদ। কিন্তু চলতি বছর বীজ আবাদের শুরুতেই চাষিরা বিপাকে পড়ে পেঁয়াজের ভাল্ব ক্রয় করতে গিয়ে। বিএডিসি ভাল্ববের উচ্চ মূল্য নিধারণ করায় অনেক কৃষক চলতি বছর পেয়াজ বীজ আবাদ করতে পারেনি। ফলে ফরিদপুর জেলায় গতবছরের চেয়ে প্রায় ৫শ হেক্টোর জমিতে পেঁয়াজ বীজের আবাদ কম হয়েছে। ফলে চলতি বছর বীজের উৎপাদনও কম হবে।

পেঁয়াজ বীজ চাষী আকবর খান জানায়, পেঁয়াজ বীজ একটি লাভ জনক ফসল। আর সে কারণেই আমরা দীর্ঘদিন ধরে বীজের আবাদ করে থাকি। গতবছর ১০বিঘা জমিতে বীজের আবাদ করে ভাল লাভবান হয়েছিলাম। কিন্তু চলতি বছর বীজের আবাদ করতে পারিনি কারণ বিএডিসি চলতি বছর পেঁয়াজের ভাল্ববের দাম অনে বেশি নিয়েছে। আর সে কারনেই বীজের আবাদ করতে পারিনি। চাষী আকবর খান আখ্যেপ করে বলেন, বিএডিসি একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান। কিন্তু বিএডিসি চাষীদের কোন সেবাই দেয়না। চাষীদের কাছ থেকে ১৪শ টাকা দরে ভাল্ব ক্রয় করে ঐ চাষীদের কাছেই ৩হাজার টাকা দরে বিক্রিয় করেছে এবং ওজনেও কম দিয়েছে।

পেঁয়াজ বীজের মাঠ ঘুরে দেখা গেছে কৃষকেরা এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন বীজ ক্ষেত পরিচর্যা ও আগাছা বাছাইর কাজে। সারা মাঠ জুড়ে পেঁয়াজ বীজের সাদা ফুলে ছেয়ে গেছে আর মৌ মাছি মধু সংগ্রহে ব্যস্ত আছে। কৃষকের আশা এবছরও পেঁয়াজের বীজের বাম্পার ফলন হবে। তবে তারা বলছেন, যদি সরকারী হস্তক্ষেপে ন্যায্য মূল্য মিলে তবেই কৃষকের মুখে সস্তির হাসি ফুটবে।

ফরিদপুর জেলার উৎপাদিত বীজের সুখ্যাতি রয়েছে সারা দেশে। চলতি বছর ফরিদপুর জেলার ৯টি উপজেলাতেই কম-বেশী পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে সদর উপজেলার অম্বিাকাপুর ইউনিয়নে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ব্যাপক চাষ হয়েছে। এছাড়া ভাঙ্গা, সদরপুর, নগরকান্দা, সালথা, চরভদ্রাশন, আলফাডাঙ্গাসহ সব উপজেলাতেই পেঁয়াজ বীজের আবাদ হয়ছে। আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পর মাঠ থেকে বীজ কৃষকের ঘরে আসবে। আর কোন প্রকার প্রাকিতিক দুর্যোগ না হলে বাম্পার ফলন পাবেন তারা।

কৃষক বক্তার খান জানায়, পেঁয়াজ বীজ একটি লাভ জনক ফসল। তবে এতে ঝুকিও আছে। চলতি বছর আমি ১৫একর জমিতে বীজ আবাদ করেছি। আবহাওয়া ঠিক থাকলে অনেক লাভবান হতে পারব। আর পেঁয়াজ বীজ চাষে সোনালী ব্যাংক ৪%সুদে ঋণ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে। সোনালী ব্যাংক সহজ শর্তে ঋণ দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করছে।

এদিকে পেঁয়াজ বীজ মাঠ পরিদর্শন করেছেন সোনারী ব্যাংক ফরিদপুর অঞ্চলের জেনারেল ম্যানেজার মো. জহিরুল ইসলাম। তিনি পেঁয়াজ বীজের মাঠ দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশকরেন এবং আগামীতে সোনালী ব্যাংক থেকে পর্যাপ্ত পরিমানে ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থা করার আশ্বাস প্রদান করেন। একই সাথে ঋণের সময় বৃদ্ধি করার কথাও বলেন। এসময় তার সাথে ছিলেন ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শামচুল হক, কৃষক বক্তার খান, আকবর খানসহ এলাকার পেঁয়াজ বীজ চাষীরা উপস্থিত ছিলেন।

ফরিদপুর সদর উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল বাশার জানান, ফরিদপুরের পিয়াজের বীজের খ্যাতি দেশব্যাপী। এই অঞ্চলের চাষীরা এই বীজকে কালো সোনা হিসাবে তুলেনা করেন। কারন এই বীজের চাষ করে অনেক বেকার যুবক তাদের বেকারত্ব দূর করে এখন স্বাবলম্বি হয়েছে।

ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ কার্তিক চন্দ্র চক্রবর্তী বলেন, পেঁয়াজ বীজকে কাল সোনা বলা হয়। কারন এটা উচ্চ মূল্যের ফসল। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কৃসকেরা পেঁয়াজ বীজ উৎপাদন করে বেশী লাভ বান হয়, যার জন্য এটিকে কাল সোনা বলা হয়। তবে উৎপাদনের ক্ষেত্রে কিছু ঝুকিও আছে। ফরিদপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে পেঁয়াজ বীজ চাষীদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়ে থাকে।

এদিকে ফরিদপুর বিএডিসির বীজ ভবনের উপ-পরিচালক (ক: গ্রো:) মো. শফিকুল ইসলাম খান বলেন, কৃষকদের অভিযোগ ঠিক না। কৃষকদের নিকট থেকে ১৪শ টাকা মন পেঁয়াজ বীজের ভাল্ব ক্রয় করার পর বাছাই করা, শুকানো এবং প্রায় ৮মাস হিমাগারে রেখে বীজ সংরক্ষণ করা হয়। এতোসব করতে যে খরচ হয়েছে তাতে বিএডিসি কম মূল্যেই কৃষকদের বীজের ভাল্ব দিয়েছে। বিএডিসি কৃষকদের স্বার্থেই কাজ করে।

এবিএন/কে. এম. রুবেল/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত