![ময়মনসিংহে শাওন হত্যাকান্ড: প্রকাশ্যে কর্মসূচীতে নেই ছাত্রলীগ](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/12/abnews-24.bbbbbbbbbbbb_129951.jpg)
ময়মনসিংহ, ১২ মার্চ, এবিনিউজ : ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক আল রাফী শাওন হত্যার ঘটনায় রহস্য দিনদিন বাড়ছে। শাওন হত্যার বিচার দাবীতে “ময়মনসিংহ শহরবাসী” ব্যনারে আজ সোমবার দুপুরে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্টিত হয়। মিছিলটি ময়মনসিংহ রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বর থেকে শুরু হয়ে গাঙ্গিনারপার মোড়ে এসে রাস্তা আধ ঘন্টা সড়ক অবরোধ করে আবস্থান করে পরে মিছিলটি টাউন হল মোড় এলাকায় গিয়ে শেষ হয়। মিছিল থেকে শাওন হত্যার বিচার ও জড়িতদের শাস্তি দাবী করা হয়। মিছিলে কারা অংশগ্রহন করেছে তাদের নামও জানা যায়নি।
এদিকে, ছাত্রলীগসহ আওয়ামীলীগের বিভিন্ন অংগসংগঠন ও শাওন এর পরিবার এবং পুলিশের ভূমিকায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। গুলিবিদ্ধ হওয়ার ১৫ দিনেও পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করেনি এমনকি হত্যায় ব্যবহৃত অস্ত্রটিও উদ্ধার হয়নি। ছাত্রললীগসহ অঙ্গ সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে শাওন হত্যার ক্ষোভ প্রকাশ ও বিচার দাবী করছে কিন্তু কেউই প্রকাশ্যে আসছে না।
উল্লেখ্য, শাওন হত্যাকান্ড নিয়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ কর্মসূচি ঘোষনা করলেও পরর্বতীতে তা পালন হয়নি। গত রবিবার (১১ মার্চ) শাওন হত্যার প্রতিবাদ ও বিচার দাবিতে “ময়মনসিংহ সচেতন ছাত্র সমাজ ও শাওন স্মৃতি সংসদ” এই দুই সংগঠনের ব্যনারে শাওন হত্যার বিচার দাবীতে মানববন্ধন করেছে এবং সোমবার “ময়মনসিংহ শহরবাসী ” ব্যনারে দুপুরে ময়মনসিংহ রেলওয়ে কৃষ্ণচূড়া চত্বর থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়েছে। ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে, বিভিন্ন সংগঠনের ব্যানারে ও ও ফেসবুকে শাওন হত্যার বিচার দাবী করা হচ্ছে কিন্তু রাজপথে “ছাত্রলীগ গেলো কই”?
প্রভাবশালী খুনিদের ভয়ে শাওনের পরিবার থানা পুলিশে কোনও অভিযোগ করতে সাহস পাচ্ছে না বলেও ময়মনসিংহে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী ও সমর্থকসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে গুঞ্জন রয়েছে। নানা কানাঘুষা আর শাওনের মৃত্যু নিয়ে ধু¤্রজাল সৃষ্টি করেছে। তবে বাবার বক্তব্য থেকে আঁচ করা যাচ্ছে শাওনের মৃত্যুর ঘটনাটি স্বাভাবিক নয়। শাওন যে খুনের শিকার হয়েছে তার বাবার বক্তব্য থেকে এটিই স্পষ্ট।
শাওনের পরিবার হত্যাকান্ডের বিচার প্রশ্নে গণমাধ্যমকর্মীদের এড়িয়ে চলায় নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাদের দাবি, দলীয় অন্তর্কোন্দলের জেড়েই শাওনকে হত্যা করা হয়ে থাকতে পারে। শাওন ময়মনসিংহ জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান প্রস্তাবিত জেলা আওয়ামী লীগের কমিটির যুগ্ম সম্পাদক আব্দুল কদ্দুছের একমাত্র ছেলে।
গুলিবিদ্ধ হয়ে ১১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পরও পুলিশ কোনও রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি। মামলা তো দূরের কথা, ময়নাতদন্ত ছাড়াই গত শুক্রবার শাওনের লাশ দাফন করা হয়। কাউকে গ্রেফতারও করতে পারেনি পুলিশ। উদ্ধার হয়নি হত্যায় ব্যবহৃত আগ্নেয়াস্ত্র।
ময়নাতদন্ত ছাড়াই শাওনের লাশ হাসপাতাল থেকে বের করে এনে দাফন করায় প্রভাবশালী খুনিদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক বিচার হবে কিনা এ নিয়েও সন্দিহান অনেকে।
ময়মনসিংহ কোতোয়ালী মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বলেন, ‘রবিবার পর্যন্ত শাওনের পরিবার থেকে থানায় কোনও অভিযোগ দেওয়া হয়নি। ময়নাতদন্ত ছাড়াই লাশ দাফনের জন্য অনুমতি চেয়ে এবং এ বিষয়ে কোনও মামলা করবে না মর্মে পরিবারের পক্ষ থেকে জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বরাবর আবেদন করা হয়েছে। তবে হত্যাকান্ডের পর থেকেই পুলিশ কাজ করছে এবং এর রহস্য উদঘাটনে জোর তৎপরতা রয়েছে।’
উল্লেখ্য,গত ২৫ ফেব্রুয়ারী রবিবার মধ্যরাতে নগরীর জেলা পরিষদের সামনে তাকে গুলি করা হয়। ময়মনসিংহে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক আল-রাফী শাওন গুলিবিদ্ধ অবস্থায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন থাকার পর তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় স্থানান্তর করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে ঢাকার ইবনেসিনা হাসপাতালে দীর্ঘ ১১দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর মারা যায় শাওন ।
এবিএন/মঈন উদ্দিন রায়হান/জসিম/তোহা