
রুমা (বান্দরবান), ১৩ মার্চ, এবিনিউজ : বান্দরবানের রুমা একটি প্রত্যন্ত উপজেলা, সরকারী নাগরিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান সমূহের বিভিন্ন পর্যায়ের দপ্তরের সেবাগুলো প্রদান করার পথে এই দূর্গমতা একটি বড় প্রতিবন্ধকতা। তাছাড়াও রয়েছে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দায়িত্বের প্রতি অবহেলা, জনবল সংকট এবং অবকাঠামোগত নানা সমস্যা।
উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিসের কার্যক্রম প্রায় নেই বললেই চলে, একতলার জীর্ণ অফিস ভবন দেখে বোঝার উপায় নেই এটি সরকারী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অফিস; অফিসের কোন সাইনবোর্ডও নেই, মাসের প্রায় সময়ই তালাবদ্ধ অবস্থায় দেখা যায়। বিগত দুই মাসের বিভিন্ন সময় গিয়েও অফিস খোলা অবস্থায় পাননি।
জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলীর পদটি শূন্য পড়ে আছে, রুমা উপজেলার দায়িত্ব পালন করছেন লামা উপজেলার একজন প্রকৌশলী। মেকানিক দুটি পদের দুটিই শূন্য। লামায় অবস্থানরত প্রকৌশলীর সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘অফিসের স্টাফরা সবাই ফিল্ডে অবস্থান করছে, তাই অফিস বন্ধ।’
কিন্তু তার কথার কোনো সত্যতা পাওয়া যায়নি, ফিল্ড স্টাফ রেদামং মারমা এবং শৈহ্লাচিং মারমা তখন যার যার বাড়ি অবস্থান করছিলেন। অফিসে গিয়ে দাড়োয়ান ইদ্রিছ মিয়াকে পাওয়া যায়, সে সময় অফিসের অভ্যন্তরে দেখা যায় দুটি জীর্ণ ছেড়া চেয়ার, একটি ধুলোমলিন টেবিল এবং একটি ফাইল কেবিনেট ছাড়া আর কিছু নেই, দেখলে মনে হয় পরিত্যক্ত কয়েদ খানা।
বর্তমানে স্যানিটেশনের কাজ বন্ধ রয়েছে, নলকূপ স্থাপন এবং সংস্কারের কাজও বন্ধ। এদিকে উপজেলার বেশিরভাগ টিউবওয়েল বিকল হয়ে পড়ে আছে, তীব্র পানি সংকটে ভুগছে জনসাধারণ। নিরুপায় হয়ে মাঝে মাঝে ভুক্তভোগী জনসাধারণ নিজেরা উদ্যোগ নিয়ে টাকার বিনিময়ে দাড়োয়ান ইদ্রিছ মিয়াকে দিয়ে বিকল টিউবওয়েল সংস্কার করতে বাধ্য হয়।
বিগত ২০১৫ সালের ১২ জুন রুমায় নিরাপদ পানি সরবরাহের লক্ষ্যে পানি সরবরাহ ট্যাংক তৈরি কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়, ট্যাংক তৈরির কাজ সম্পন্ন হলেও আজ অবধি সরবরাহ লাইন এবং বিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হয়নি, যদিও উপজেলা প্রশাসন গত মাসের (ফেব্রুয়ারি) শেষের দিকে পানি সরবরাহ চালু করার ঘোষণা দিয়েছিলো।
রুমার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, কোথাও জনসাধারণ নিত্যদিনের প্রয়োজনীয় নিরাপদ পানি সংগ্রহ করতে পারছেন না। একদিকে অপর্যাপ্ত সক্রিয় রিংওয়েল এবং নলক’প, অপরদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে অকেঁজো নষ্ট রিংওয়েলগুলো যেগুলোর সংস্কারও আর সম্ভব নয়।
অপরিকল্পিতভাবে রিংওয়েল তৈরির কারণে অল্প সময়েই নষ্ট হয়ে যায় বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। জনগুরুত্বপূর্ণ একটি প্রতিষ্ঠানের এমন হ-য-ব-র-ল অবস্থায় অতিষ্ট রুমার জনসাধারণ।
এবিএন/চনুমং মারমা/জসিম/এম