সোমবার, ০৪ আগস্ট ২০২৫, ২০ শ্রাবণ ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • বৌদ্ধ ধর্মগুরু সংঘরাজ উঃশাসনা মহাথের’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ানুষ্ঠান

বৌদ্ধ ধর্মগুরু সংঘরাজ উঃশাসনা মহাথের’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ানুষ্ঠান

বৌদ্ধ ধর্মগুরু সংঘরাজ উঃশাসনা মহাথের’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ানুষ্ঠান

রুমা (বান্দরবান) , ১৩ মার্চ, এবিনিউজ : বাংলাদেশ পার্বত্য ভিক্ষু সংঘ নিকায়ে ৫ম তম সংঘরাজ উঃ শাসনা মহাথের’র জাতীয় অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ানুষ্ঠান ১৪ এবং ১৫ মার্চ দুই দিন ব্যাপী মহাসমারোহে অনুষ্ঠিত হচ্ছে বান্দরবানের রুমা উপজেলার মিনঝিড়ি পাড়া বৌদ্ধ বিহারে।

বৃহস্পতিবার বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি নীতি ও ঐতিহ্য অনুসারে সকালে বিশ্বশান্তি কামনায় মঙ্গল সূত্র পাঠের মধ্য দিয়ে এ অনুষ্ঠান শুরু হয়ে শুক্রবার বিকাল ০৩ ঘটিকায় প্রয়াত ভিক্ষুর মুইসাংগ্রো (শবদেহ দাহ) এর মাধ্যমে ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠান সম্পন্ন হবে।

উক্ত বৌদ্ধ ধর্মীয় মাঙ্গলিক কুশল কর্ম অনুষ্ঠানটির শুভ উদ্বোধন করবেন রোয়াংছড়ি কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারের বিহারাধ্যক্ষ ভদন্ত উচাইরিন্দা মহাথের। অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বান্দরবান পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বাবু ক্যশৈহ্লা মারমা।

রুমা উপজেলা চেয়ারম্যান অংথোয়াইচিং মারমা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিতব্য অনুষ্ঠানে দেশ-বিদেশের ভিক্ষু সংঘ এবং অতিথিগণ বৌদ্ধ ধর্ম দেশনা, অনিত্য দর্শন ও সংস্কৃতির উপর আলোকপাত করবেন। প্রাজ্ঞ বৌদ্ধ ভিক্ষু এবং বৌদ্ধ নেতৃবৃন্দের উপস্থিতি ছাড়াও অনুষ্ঠানে হাজারো পূণ্যার্থীর ঢল নামবে বলে জানা গেছে অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া উদযাপন কমিটির কাছ থেকে।

প্রয়াত উঃ শাসনা মহাথের ১৯৩০ সালের জুন মাসে এক মারমা সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। কিশোর বয়সেই তিনি তার গ্রামের বিহারে শ্রমণ হিসেবে প্রবজ্যা গ্রহণ করেন। পরে এক দশক তিনি সাধারণ পড়–য়া শ্রমনত্বের জীবন যাপন করেন এবং বিভিন্ন গুরুর অধীনে পালি ত্রিপিটক শিক্ষা লাভ করেন। এ সময়টিতে তিনি কাটিয়েছেন ভাবনা ও পালি শাস্ত্র পড়ে। বিশ বছর বয়সে ভিক্ষু হিসেবে উপসম্পদা লাভ করার পর থেকে তিনি ত্রিপিটক সম্বন্ধে পড়াশোনার পাশাপাশি সে সময়ের দেশ বিদেশের সন্মানিত ভাবনা গুরুদের কাছ থেকে মূল্যবান নির্দেশনা খোঁজার নিমিত্তে বাংলাদেশ, ভারত ও মায়ানমারের বহু এলাকা চষে বেড়িয়েছেন।

সত্তরের দশকে বিহারের অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের পর তিনি পরিচিতি পান ’ছেয়াদ’ (পরম গুরু) নামে। এরপর থেকে ভিক্ষু ও গৃহীগণ তার কাছে ভাবনা শিখতে আসতে থাকে, ছেয়াদ’র সুনাম ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং তার অধীনে থাকা বিহারটি (বর্তমান মিনঝিড়ি বিহার) স্থানীয় বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছে কেন্দ্রীয় বিহার হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। জীবনের পড়তি বয়সের বছরগুলোতে তিনি অত্যন্ত সাদামাটা জীবন যাপন করতেন, বেশির ভাগ সময় কাটাতেন নির্জনে বিহারের জঙ্গল অংশের কুটিরে।

শেষ জীবন পর্যন্ত তার বর্ষাবাস হয়েছিলো ৬৮টি। ২০০৭ সালে তিনি বাংলাদেশ পার্বত্য ভিক্ষু সংঘের সংঘনায়কের দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন এবং আমৃত্যু সংঘনায়কের দায়িত্বে ছিলেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় রীতি অনুযায়ী বর্ষাবাসের উপর ভিত্তি করে জ্যেষ্ঠতার ভিত্তিতে ভিক্ষু সংঘের ভিক্ষুগণ নিকায় সংঘরাজ হিসেবে অধিষ্ঠিত হয়ে থাকেন।

বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের পরম পূজ্য এই বৌদ্ধ ধর্ম গুরু গত ১৪ জানুয়ারী রাত ০৯ টায় ৮৮ বছর বয়সে তার মিনঝিড়ি বিহারে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

এবিএন/ চনুমং মারমা/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত