শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • জলঢাকার গায়েবী মসজিদ সংরক্ষনে নেই কোন কার্যকারি পদক্ষেপ

জলঢাকার গায়েবী মসজিদ সংরক্ষনে নেই কোন কার্যকারি পদক্ষেপ

জলঢাকার গায়েবী মসজিদ সংরক্ষনে নেই কোন কার্যকারি পদক্ষেপ

জলঢাকা, নীলফামারী, ১৪ মার্চ, এবিনিউজ : মহান সৃষ্টিকর্তার অলৌখিক নিদর্শন স্বরুপ এক রাতের মধ্যেই নির্মানাধিন গায়েবি মসজিদ রয়েছে নীলফামারীর জলঢাকা উপজেলায়। শত শত বছর পূর্বের এই গায়েবী সমজিদটি সংরক্ষনে কোন কার্যকারি পদক্ষেপ গ্রহন করেনি স্থানীয় সমাজপতি সহ মেম্বার চেয়ারম্যান কিংবা স্থানীয় সরকার। ফলে দৃষ্টিনন্দঁন ওই গায়েবী মসজিদটি দিনদিন লোক চক্ষুর আড়ালে চলে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে হাড়িয়ে যাচ্ছে মহান সৃষ্টিকর্তার নিদর্শন স্বরুপ এই মসজিদটির স্মৃর্তিকথা।

এই গায়েবী মসজিদকে ঘিরে অসংখ্যো স্মৃর্তি কথা বিদ্যামান রয়েছে স্থানীয়দের মধ্যে। বর্তমান প্রজ্বন্মের যে কেউ সেই কল্পকথা শুনলে শিউরে উঠে এবং কৌতহল বসতো বাস্তবেই দেখার জন্য ব্যাকুল হয়ে পড়ে মসজিদটি। জলঢাকা পৌর শহর থেকে মাত্র দশ কিলোমিটার দুরে এই নিদর্শন গায়েবী মসজিদটির অবস্থান। উপজেলার ২নং ডাউয়াবাড়ি ইউনিয়নের শিদ্দেশ্বরী গ্রামের ৩নং ওয়ার্ড মসজিদ পাড়ায় এই মসজিদটি অবস্থিত।

মসজিদটির পাস দিয়ে বয়ে গেছে বৃহঃ তিস্তা নদী। স্থানীয়রা জানান, তিস্তা নদীতে সব কিছু নষ্ট হলেও মসজিদটি সম্পুর্ন রুপে ঠিক থাকে। প্রাপ্তসুত্র অনুযায়ি ৫৮ শতক জমির উপর নির্মিত গায়েবী মসজিদটিতে প্রাচিন আমলের আট ফুট বিশিষ্ট তিনটি বড় বড় গম্বুজ রয়েছে এবং গম্বুজের কিনারে কিনারে বারোটি মিনার রয়েছে। যা মসজিটিকে দৃষ্টিনন্দঁন করে তুলেছে। দুর থেকে মসজিদটি তাকাঁলে মনে হয় এটি কোন রাজ প্রাসাধের ধ্বংবশেষ।

গায়েবী মসজিদটি দীর্ঘ ২৫ ফুট ও প্রস্ত প্রায় ১২ ফুট। মসজিদটিতে যে ইট ব্যবহার করা হয়েছে তা ১৪ ইঞ্চির একটু বেশি। মসজিদের ভিতরে ইমারতের তৈরী দেয়াল পিষ্টে আরবি হরফে লেখা রয়েছে ইসলামের কিছু বানী। যা এখনো স্পর্ট আকারে বুঝানো যায়। সব চেয়ে মজার বিষয় হলো উক্ত মসজিদটির আশপাশে খনন করলে এখনো ওই সকল ইট পেয়ে থাকেন স্থানীয়রা। গায়েবী এই মসজিদটির দীর্ঘ ২৫ বৎসর ধরে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন পার্সবতী বাসিন্দা মৃত্য আজিমুদ্দীনের পুত্র মোসলেম উদ্দীন ( ৭২ )। কথা হয় তার সাথে।

মোসলেম উদ্দীন একান্ত সাক্ষাত কালে জানান, আসে আমরা কেউ জানি না মসজিদটি কত সালে নির্মিত হয়েছে। এমনকি এই মসজিদটি কার জমিতে নির্মিত হয়েছে। তিনি জানান এই জমির প্রকৃত কোন মালিক নেই। আমার দাদার দাদার আমল থেকেই সুনে আসছি এটি গায়েবী মসজিদ। এক রাতের মধ্যেই মহান সৃষ্টিকর্তার নিদর্শন স্বরুপ তৈরী হয়েছে এই পবিত্র মসজিদটি। এটি মুলত গায়েবী মসজিদ নামেই পরিচিত। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে জানান, কুদরতী এই মসজিদটিতে কোন প্রকার সরকারি বা বেসরকারী অনুদান আসে না। এটির পর কত কত মসজিদ নির্মান হয়েছে। তার কোন ইয়াত্তা নেই।

কিন্তূ মহান আল্লাহ্ পাকের নির্মানাধীন এই গায়েবী মসজিদটি সংরক্ষনে কারো কোন ভুমিকা নেই। মসজিদটির খাদেম নুর আমিন ( ৭০ ) জানান, মুষ্ঠির চাউল, ওয়াক্তি সালাতের দান ও কমিটির পক্ষ থেকে কিছু অর্থকরি ব্যয় করে মসজিদটি সামনের দিকে বাড়িয়ে নিয়ে সক্ষম হয়েছি। আল্লাহ্ পাকের নিদর্শন এই মসজিদে শিশুরা সকাল বিকাল মক্ত্যব পড়েন। তিনি বলেন তৎকালিন জামায়াতের এমপি মিজানুর রহমান সম্ভাবত দুই বাইন ঢেউ টিন অনুদান দিয়েছিলো এবং বর্তমান এমপি একটি সোলার দিয়েছেন। এছাড়া কেউ কোন কিছুই দেয়নি।

প্রাচিনতম এই মসজিদটিতে যদি স্থানীয় সমাজপতিরা সহ সরকারি বে-সরকারী সাহায্য আসতো তবে এই মসজিদটিকে সম্পুর্ন রুপে সংরক্ষন করা যেতো। মসজিদের শিক্ষক হাফেজ কারী মুহাম্মাদ শরিফুল ইসলাম জানান, মসজিদটির যে নাম ডাক ও ঐতিহ্য রয়েছে সে রকম কোন কার্যকারী পদক্ষেপ নেই। আল্লাহ্ পাকের নিদর্শন স্বরুপ এই গায়েবী মসজিদটি সরংরক্ষনে সকলের সহানুভুতি কামনা করেন তিনি।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মসজিদটিতে সালাত আদায়ের জন্য মুসল্লিদের নেই উজু খানা, প্রাচিনতম নলকুপ ব্যবহার করতে হয় মুসল্লিদের। এছাড়াও নামাজের জন্য নেই পর্যাপ্ত ব্যবস্থা। মসজিদটির নেই কোন বাউন্ডারী, পায়খানা কিংবা মলমুত্রের নির্দিষ্ঠ স্থান। তিস্তার তীরবর্তি মানুষ ও স্থানীয় বাসিন্দারেরা এখানে পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় সহ শুক্রবারের নামাজ কায়েম করে থাকেন। উক্ত মসজিদের মুসল্লিগন স্থানীয় সমাজপতি সহ সরকারের দৃষ্টি আক্রশন করেছেন যাতে মহান সৃষ্টিকর্তার নিদর্শন স্বরুপ নির্মানাধিন এই গায়েবী মসজিদটি বিলুপ্ত হয়ে না যায়।

এবিএন/মোঃ হাসানুজ্জামান সিদ্দিকী হাসান/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত