শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

চিরিরবন্দরে আমগাছে দুলছে থোকায় থোকায় মুকুল

চিরিরবন্দরে আমগাছে দুলছে থোকায় থোকায় মুকুল

চিরিরবন্দর (দিনাজপুর) , ১৫ মার্চ, এবিনিউজ : ঋতুরাজ বসন্তের আগমনে প্রকৃতির অপরুপ সাজে ব্যাকুল হয়ে ওঠে মানুষের হৃদয়। রঙিন বন-বনানী। ঝরাপাতার দিন শেষে গাছে গাছে গজিয়েছে নতুন পাতা আর ফুলকুড়ি। ফুলের সমারোহে বর্ণিল সাজে সেজেছে প্রকৃতি। শিমুল, জারুল, পলাশ, চম্পা প্রকৃতিতে জাগায় প্রাণের হিল্লোল।

চিরিরবন্দর উপজেলায় ফাল্গুনের হাওয়ায় থোকায় থোকায় দুলছে আমের মুকুল। আমগাছের কচি ডগাভেদ করে সবুজপাতার ফাঁকে হলদে মুকুলগুচ্ছগুলো যেন উঁকি দিয়ে হাসছে। বাগানের শুনশান নিরবতা ভেদ করে মৌমাছির গান শোনা যাচ্ছে। চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে আমের মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। এখানকার বাতাস এখন আমের মুকুলের মৌ মৌ গন্ধে ভরপুর। শহর থেকে গ্রাম-গঞ্জের সর্বত্রই আমগাছগুলো তার মুকুল নিয়ে হলদে রঙ ধারণ করে সেজেছে এক অপরুপ সাজে।

মুকুলের ম-ম গন্ধে মানুষের মন-প্রাণকে বিমোহিত করে তুলেছে। মুকুলে মুকুলে ঢেকে গেছে চিরিরন্দর উপজেলার সব আমগাছগুলো। সরেজমিন উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, গাছে গাছে মুকুলের সমারোহ। কোন কোন গাছ একেবারেই মুকুলে ছেয়ে গেছে। বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না হলে এবং আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এবছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন বাগান মালিকরা। মুকুলের আধিক্য দেখে ভালো ফলনের আশায় বুক বেঁধেছেন উপজেলার মানুষ। আমের মুকুলে কৃষকের আগামীর স্বপ্ন দোল খাচ্ছে। সেই সোনালী স্বপ্নকে বুকে ধারণ করেই বাগান পরিচর্যা করছেন আমচাষিরা।

হাড়িভাঙ্গা, খিড়সাপাতি, মোহনা, রাজভোগ, রূপালী, আম্রপালী, ল্যাংড়া, গোপালভোগ, সূর্যপূরী, আসিনিয়া, ছাতাপড়া, ফজলী, চিনি ফজলী, সুরমাই, মিশ্রীভোগসহ দেশিয় জাতের আমের মুকুলে ভরে গেছে আমগাছগুলো। বৈশাখ মাসে আমপাকা শুরু হয় এবং আশ্বিন-কার্তিক মাসের শেষ পর্যন্ত বাজারে আম পাওয়া যাবে। কিন্তু এরই মধ্যে আমবাগান নিয়ে বেচাকেনা শুরু হয়েছে। আমবাগান নিয়ে ৬ মাস যাবত এ ব্যবসা চলবে। আগাম বিক্রি হচ্ছে অনেক আমবাগান। আম বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হবার স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। আমবাগান বা ব্যক্তি মালিকানায় গড়ে ওঠা প্রায় প্রতিটি গাছেই কম বেশি মুকুল ধরেছে।

আমচাষি উপজেলার নশরতপুর গ্রামের মো. রফিকুল ইসলাম জানান, এবছর আমার আমগাছে প্রচুর পরিমাণে মুকুল ধরেছে। এখন পর্যন্ত আমের মুকুলে কোন রোগবালাই আক্রমণ করেনি। আবহাওয়াও ভালো। যদি কোন প্রাকৃতিক দূর্যোগ না আসে আশা করছি ফলন ভালো হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মাহমুদুল হাসান জানান, উপজেলায় এবছর আমের উৎপাদন ভালো হবে। এবছর আমের মুকুল ধরার সময় প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ এখন পর্যন্ত দেখা দেয়নি। এমনকি তেমন কোন রোগবালাইও নেই। অন্য বছরের তুলনায় আছে বাড়তি সর্তকতাও। প্রাকৃতিক কোন দূর্যোগ না হলে কৃষকরা আমের ভালো ফলন পাবেন বলে তিনি মনে করেন। তিনি আরো বলেন, আমচাষে সহজেই লাভবান হওয়া যায়। অনেকেই ফসলি ও পতিত জমিতে আমবাগান করতে এগিয়ে আসছেন। প্রতিবছরই আমচাষের জমি বৃদ্ধি পাচ্ছে।

এবিএন/মো. রফিকুল ইসলাম/জসিম/নির্ঝর

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত