![চিলমারীতে নারী শ্রমিকরা মজুরি বৈষম্যের শিকার](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/16/kurigram-nari-worker_130615.jpg)
চিলমারী(কুড়িগ্রাম) , ১৬ মার্চ, এবিনিউজ : কুড়িগ্রামের চিলমারীতে এখনো মজুরি বৈষম্যের শিকার নারী শ্রমিকরা। বিশেষ করে ব্যবসায় বানিজ্য ও কৃষি খাতগুলোতে নারী শ্রমিকরা এখনো পুরুষ শ্রমিকের চেয়ে কম মজুরি পাচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে নারী শ্রমিকদের কাজে নিয়োগ করতে চায় না মালিক পক্ষ। নিয়োগ করলেও মজুরি কম দেয়।
জাতিসংঘের নিয়মানুযায়ী কর্মক্ষেত্রে নারী পুরুষের জন্য সমান সুযোগ দেয়াসহ যোগ্যতা অনুযায়ী তাদের সমান মজুরি দেয়ার বিধান রয়েছে। যোগ্যতা সমান থাকলে কাজ ও মজুরির ক্ষেত্রে নারী ও পুরুষের মধ্যে কোন বৈষম্য রাখা যাবে না। কিন্তু জাতিসংঘের এই বিধানটি আমাদের দেশে চালু হয়নি। দেশের অনেক জায়গায় কিছুটা সমতা থাকলেও চিলমারীতে প্রায়ই মজুরি বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন নারী শ্রমিকরা।
লক্ষ করা গেছে, দৈনন্দিন কাজে সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করে যেখানে একজন পুরুষ শ্রমিক মজুরি পায় ২৫০-৩০০ টাকা সেখানে একজন নারী শ্রমিক একই কাজ করে পাচ্ছে ১০০-১৫০ টাকা। কৃষিকাজ, নির্মাণকাজ, গৃহশ্রম, চাতালের কাজ ও ব্যবসায় প্রতিষ্ঠানের কাজসহ অপ্রাতিষ্ঠানিক কোন কাজেই নারীরা পুরুষের সমান মজুরি পায় না। সমান মজুরি না পেলেও নারী শ্রমিকরা হাসি মুখে সারাদিন আন্তরিকতার সহিত কাজ করে থাকে।
শনিবার বিকালে উপজেলার জোড়গাছ এলাকায় গিয়ে বাদাম বাছাই করতে দেখা যায় কয়েকজন নারী শ্রমিককে। এদের মধ্যে জোড়গাছ পুরাতন বাজার হিন্দুপাড়ার মৃত রুহিনি কান্ত বর্মনের স্ত্রী কাগজী বালা জানায় সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত কাজ করার পর মালিক নাস্তা খাওয়ার জন্য ১০টাকাসহ মোট ১৪০ টাকা দেন। একই সাথে একই কাজে নিয়োজিত পুরুষ শ্রমিক রাজু মিয়া পায় ৩০০ টাকা। এমন বৈষম্যের প্রসঙ্গে জানতে চাইলে কাগজী বালা বলেন, বাড়তি মজুরি চাওয়ার সুযোগ নেই। বাড়তি মজুরি চাইলে কাজ দেবে না মালিক। অন্যদের দিয়ে কাজ করাবে। সারাদিন কাজ করে যা পাই তাই দিয়ে একা মানুষ দিন চলে যায়।
একই কথা জানালেন,বিভিন্ন ব্যবসায়ীর ঘরে বাদাম বাছাইয়ের কাজে নিয়োজিত মিলন রাণী,মিনু বালা, জয়ন্তী রাণী, পূর্ণিমা রাণী, ভারতি রাণী, হালিমা, ফজিলা, জেলেকা, করিমন ও নুরিমাসহ আরো অনেকে। তবে মজুরি কম পাওয়ায় তাদের মধ্যে হতাশা বিরাজ করছে। মজুরি বৈষম্যের অবসান হোক এমনটাই দাবি নারী শ্রমিকদের। এসময় বাদাম বাছাইয়ে কাজে নিয়োজিত দু’জন পুরুষ শ্রমিকের দেখা মেলে। রাজু মিয়া ও ভেলকু। তারা দু’জনই দিন শেষে মজুরি পায় ৩’শ টাকা করে।
এপ্রসঙ্গে বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক আঃ বাকী নয়ানজি বলেন, মহিলা শ্রমিকরা সারাদিন শুধু বাদাম বাছাই করে এবং পুরুষ শ্রমিক তা বস্তাবন্দিসহ বিভিন্ন জায়গায় আনা-নেয়া করে এজন্য পুরুষ শ্রমিকের মজুরি বেশী।
এবিএন/গোলাম মাহবুব/জসিম/নির্ঝর