বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার দুই আসামীকে ছাড় দেওয়ার অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে মায়ের লিখিত অভিযোগ

স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার দুই আসামীকে ছাড় দেওয়ার অভিযোগ

স্কুলছাত্রী অপহরণ ও ধর্ষণ মামলার দুই আসামীকে ছাড় দেওয়ার অভিযোগ

কিশোরগঞ্জ, ১৯ মার্চ, এবিনিউজ : কিশোরগঞ্জ জেলার কটিয়াদী এলাকা থেকে দশম শ্রেণির স্কুল ছাত্রীকে তুলে নিয়ে চট্টগ্রামে দিনের পর দিন ধর্ষণ করেছে। স্কুল ছাত্রীর মা মামলা করলে পুলিশ ভিকটিমকে উদ্ধার করে।

পুলিশ তিন আসামীকে আটক করেছে। তাদের বিরুদ্ধে তদন্তে অপরাধের প্রমাণ পাওয়া গেছে মর্মে আদালতে আসামীর চালানপত্রে পুলিশ উল্লেখও করেছেন। কিন্তু মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে দুই আসামীকে মামলার অভিযোগপত্র থেকে বাদ দেয়া হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

স্কুল ছাত্রীর মা আজ সোমবার সকালে শহরের জেলা প্রেস ক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলন ডেকে তার লিখিত বক্তব্যে এই অভিযোগ তুলে ধরেন।

মামলার এজাহার, বাদীর লিখিত বক্তব্য ও পুলিশের চালানপত্রে দেখা যায়, কটিয়াদী উপজেলার আতরতোপা গ্রামের ছাত্রীটি গচিাহাটা পল্লী একাডেমিতে দশম শ্রেণিতে পড়ে। গত বছর ১৩ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাইভেট পড়ার জন্য বাড়ি থেকে মেয়েটি স্কুলে যাচ্ছিল। কিন্তু পার্শ্ববর্তী পোস্ট অফিসের সামনে থেকে একই গ্রামের মৃত বুধু মিয়ার ছেলে মেয়েটির খালাত ভাই শাহ পরান (২০) অন্য সহযোগীদের সহায়তায় তাকে সিএনজিতে তুলে মুখ চেপে ধরে পালিয়ে যায়।

পরবর্তীতে মেয়েটি অন্য একজনের মোবাইলে জানায়, তাকে চট্টগ্রামে আটকে রেখে বিয়ের প্রলোভন দেখাচ্ছে এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করা হচ্ছে। এ কাজে সহায়তা করছে শাহ পারানের বড়ভাই মোস্তফা মিয়া (২৮) ও শাহ পরানের ভগ্নিপতি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম (৩৫)।

খবর পেয়ে ভিকটিমের পরিবার চট্টগ্রামে গিয়েও মেয়ের সন্ধান না পেয়ে গত ১ অক্টোবর কটিয়াদী থানায় ভিকটিমের মা বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে শাহ পরান, তার ভই মোস্তফা ও ভগ্নিপতি রফিকের বিরুদ্ধে মামলা (নং ১) দায়ের করেন।

এলাকার গচিহাটা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের পরিদর্শক আবুল হোসেনকে তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ দিলে তিনি ৪ অক্টোবর রাতে চট্টগ্রামের পশ্চিম মাদরবাড়ি এলাকার একটি ভাড়া বাসা থেকে ভিকটিমকে উদ্ধার করেন এবং প্রধান আসামী শাহ পরাণকে গ্রেফতার করেন। সেই সঙ্গে পাশের অন্য এক ভাড়া বাসা থেকে শাহ পারাণের ভাই মোস্তফা ও ভগ্নিপতি রফিককেও গ্রেফতার করেন। তারা চট্টগ্রামে থেকে ব্যবসা করেন।

পরদিন তিন আসামীকে কিশোরগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। আদালতে আসামীদের চালানপত্রে পরিদর্শক আবুল হোসেন ঘটনায় তিন আসামীর সংশ্লিষ্টতার বিষয়েই পরিষ্কার উল্লেখ করেছেন। কিন্তু আবুল হোসেন ২নং আসামী মোস্তফা মিয়া ও ৩নং আসামী রফিকুল ইসলামকে অব্যাহিতি দিয়ে গত ২৭ জানুয়ারি আদালতে অভিযোগপত্র দিয়েছেন।

বাদী অভিযোগ করেন, আসামীদের কাছে এক লাখ টাকা ঘুষ নিয়ে ১৬১ ধারায় বানোযাট জবানবন্দি লিখে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। এর আগে পরিদর্শক আবুল হোসেন বাদী পক্ষের কাছ থেকেও মামলার কথা বলে এক লাখ টাকা দাবি করেছিলেন। বাদীপক্ষ প্রথমে ৩০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। পরবর্তী সময়ে গচিহাটা বাজারের এক ব্যবসায়ীসহ সেই টাকা ফেরত চাইতে গেলে বেতন পেয়ে টাকা ফেরত দিবেন বলেও আবুল হোসেন জানিয়েছিলেন। আজও টাকাটা ফেরত দেননি।

এখন আসামী পক্ষ বাদী পক্ষকে মামলা তুলে নেয়ার জন্য হুমকি দিচ্ছে বলে ভিকটিমের মা অভিযোগ করেছেন। তিনি এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবং পুলিশের মহাপরিদর্শকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে পুলিশ পরিদর্শক আবুল হোসেনকে মোবাইল ফোনে প্রশ্ন করলে তার বিরুদ্ধে অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, ভিকটিমের ২২ ধারার জবানবন্দির ভিত্তিতেই অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে। এছাড়া তারা বিয়ে করে ঘরসংসার করেছে। মেয়েটির বয়স ১৮ বছর হলে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় হতো। যেহেতু নাবালিকা, সেই কারণে অভিযোগপত্র দেয়া হয়েছে।

এবিএন/শাফায়েতুল ইসলাম/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত