![তালা কপোতাক্ষ নদের উপর ক্রসড্যাম স্থাপন ও টিআরএম বিল ব্যবস্থাপনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/21/tala-picture-_131400.jpg)
তালা (সাতক্ষীরা), ২১ মার্চ, এবিনিউজ : তালা কপোতাক্ষ নদের উপর ক্রসড্যাম স্থাপন, পাখিমারা টিআরএম বিল ব্যবস্থাপনা ও পেরিফেরিয়াল বাঁধ পরিস্থিতি নিয়ে প্রেসক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (২০ মার্চ) বেলা ১১টায় উত্তরণ ও পানি কমিটি আয়োজিত সাংবাদিক সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন তালা উপজেলা পানি কমিটির সভাপতি মো: ময়নুল ইসলাম।
তিনি লিখিত বক্তব্যে জানান, কপোতাক্ষ নদের নাব্যতা বৃদ্ধি ও জলাবদ্ধতা সমস্যার সমাধানকল্পে বাংলাদেশ সরকার বিগত ২০১১ সালে ‘কপোতাক্ষ নদের জলাবদ্ধতা দূরীকরণ প্রকল্পে (১ম পর্যায়)’ মূলতঃ দুটি কাজ বাস্তবায়ন করা হয়। যার আওতায় একটি পাখিমারা বিলে টিআরএম স্থাপন এবং অন্যটি প্রায় ৯০ কিমি. নদী খনন করা হয়। টিআরএম চলাকালে মূল নদের উপর ক্রসড্যাম দিয়ে শুষ্ক মৌসুমে জোয়ারবাহিত পলি উপরাংশে না ঢুকিয়ে টিআরএম বিলে প্রবেশ করানো হয় এবং বর্ষা মৌসুমের শুরুতে পুনরায় ক্রসড্যাম তুলে দেয়া হয়। এখানে প্রকাশ জরুরী যে, এই প্রকল্প গ্রহণের পরে ২০১৬-২০১৭ সালে কপোতাক্ষ অববাহিকায় প্রায় ২০ লাখ মানুষ জলাবদ্ধতার হাত থেকে মুক্তি পায়। কিন্তু এ বছর ক্রসড্যাম দেওয়াতে দেরী হওয়ায় প্রচুর পরিমাণে পলি টিআরএম এর উজান অংশে প্রবেশ করে নদীর তলদেশ ভরাট হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে এলাকাবাসীর অভিযোগ, ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে নদীতে ক্রসড্যাম না দিয়ে তিন মাস পর ক্রসড্যাম দেয়ার কারণ তদন্ত করা হোক। উত্তরণের অনুসন্ধানের আলোকে, পলিযুক্ত জোয়ার বাহিত প্রতি লিটার পানিতে প্রায় ৫০ গ্রাম পলি নদীতে অনুপ্রবেশ করছে। যদিও সরকার ইতোমধ্যে ক্রসড্যাম স্থাপনের কাজ গ্রহন করেছে কিন্তু তা ধীর গতিতে বাস্তবায়ন হচ্ছে। কিন্তু অতি দ্রুত যদি এই ক্রসড্যাম যদি স্থাপন করা না হয় তাহলে এই ২৬২ কোটি টাকার প্রকল্পের সুফল বেশিদিন থাকবে না। পাশপাশি বিল অধিবাসীদের দাবী বর্ষা মৌসুম শুরুর পূর্বেই পাখিমারা টিআরএম বিলের চারিধারের পেরিফেরিয়াল বাঁধের সংস্কার অতিজরুরী। আরও প্রকাশ থাকে যে, ইতোপূর্বে পেরিফেরিয়াল বাঁধ ভেঙ্গে পার্শ্ববর্তী গ্রামগুলো প্লাবিত হয়ে চরমভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং জনগণের দূর্ভোগ ও জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। যা প্রকল্প বাস্তবায়নকে হুমকির মধ্যে ফেলে দেয় এবং যা প্রকল্প বাস্তবায়নে বাধা সৃষ্টি করে। সুতরাং পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার করা জরুরী। এছাড়াও স্থানীয় জনগণ ও পানি কমিটির দাবীর প্রেক্ষিতে এবং উত্তরণের গবেষণায় প্রকাশ পেয়েছে যে, প্রকল্পটির সঠিক সুফল পাওয়ার জন্য সংযোগ খালের মাধ্যমে বেসিনের দূরবর্তী পশ্চিমাংশে যাতে অপেক্ষাকৃত বেশি পরিমাণে পলি অবক্ষেপিত হতে পারে তার ব্যবস্থা জরুরী।
এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে অতিদ্রুত পাখিমারা টিআরএম বিলের বালিয়া কাটপয়েন্টে নদীর উজানমুখে ক্রসড্যাম স্থাপন, জরুরীভাবে পাখিমারা টিআরএম বিলের পেরিফেরিয়াল বাঁধ সংস্কার, গুরুত্ব প্রদান করে পাখিমারা টিআরএম বেসিনের দূরবর্তী পশ্চিমাংশে পলি অবক্ষেপনের ব্যবস্থা করা এবং ডিসেম্বর-জানুয়ারীতে অর্থাৎ শুষ্ক মৌসুমের শুরুতে নদীতে ক্রসড্যাম না দিয়ে তিন মাস পর ক্রসড্যাম দেয়ার কারণ তদন্ত করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিকট দাবি করা হয়। এ সময় প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় দ্রুত শুরু করারও দাবী জানানো হয়। নতুন বিলের চেয়ে চলমান এই বিলে আরও ৫-৭ বছর জোয়ারাধার চালানো সম্ভব, তাতে আর্থিক সাশ্রয়সহ নানাবিধ জটিলতা হ্রাস পাবে বলে সাংবাদিক সম্মেলনে উল্লেখ করা হয়। সাংবাদিক সম্মেলনে মানুষের জীবন-জীবিকার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব প্রদান করে উপরোল্লেখিত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের নিকট দাবী জানানো হয়।
এবিএন/সেলিম হায়দার/জসিম/এজেএ