![ব্রহ্মপূত্র নদ খননে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/21/mymenshingho-nodi_131444.jpg)
ময়মনসিংহ, ২১ মার্চ, এবিনিউজ : পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান চলাচল নির্বিঘ্ন করতে এশিয়া মহাদেশের গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘতম নদ পরাতন ব্রহ্মপুত্র খননে মহাপরিকল্পণা নিয়েছে বর্তমান সরকার। এক সময়ের খরস্রোতা ব্রহ্মপুত্র আবারও প্রাণ ফিরে পাবে।
আগামী ১২ এপ্রিল ময়মনসিংহ সফরের সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ব্রহ্মপূত্র খনন কাজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবে বলে জানিয়েছেন ময়মনসিংহ বিভাগীয় কমিশনার জি. এম সালেহ উদ্দিন।
২৮৩ কিলোমিটার দীর্ঘ ব্রহ্মপূত্র নদের মধ্যে দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ির চর থেকে টোক পর্যন্ত ২২৭ কিলোমিটার ব্রহ্মপূত্র নদ খননে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৩০০ কোটি টাকার প্রকল্প। বিআইডব্লিউটিএ এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। বাংলাদেশ অম্ভ্যন্তরীন নৌ পরিবহর কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) দেশের ৭টি নদী খননে ৫ হাজার নয় শত কোটি টাকার ডিপিপি ইতিমধ্যেই চূড়ান্ত হয়েছে।
১৭৮৭ সালে ভূমিকম্পের কারণে ব্রহ্মপুত্র নদের স্রোত দিক পরিবর্তিত হয়ে যমুনা নদী হয়। উৎপত্তিস্থল থেকে এর দৈর্ঘ্য ২৮৫০ কিলোমিটার। ব্রহ্মপুত্র নদের সর্বাধিক প্রস্থ ১,০৪২৬ মিটার (বাহাদুরাবাদ)। এটিই বাংলাদেশের নদীগুলোর মধ্যে সবচেয়ে দীর্ঘ পথ অতিক্রম করেছে। ব্রহ্মপুত্রের প্রধান শাখা হচ্ছে যমুনা। এক কালের প্রশস্ত ব্রহ্মপুত্র নদ বর্তমানে শীর্ণকায়। ময়মনসিংহ বিভাগসহ অত্র অঞ্চলের নাগরিকদের দীর্ঘদিনের দাবী ছিলো ব্রহ্মপূত্র নদ খননের।
ব্রহ্মপূত্র নদের দেওয়ানগঞ্জের চিকাজানী ইউনিয়নের খোলাবাড়ির চর যমুনার উৎসমূখ থেকে গফরগাঁও উপজেলার সীামন্ত টোক পর্যন্ত ২২৭ কিলোমিটার খননে তিন হাজার তিনশত কোটি টাকার ব্যয় ধরা হয়েছে। এ ছাড়াও ব্রহ্মপূত্র নদেও উৎসমূখে ঝিনজিরাম নদীও কিছু অংশ ড্রেইজিং করা হবে।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের বিআইডব্লিউটিএ সূত্রে জানা গেছে, ব্রহ্মপূত্র তলদেশে কমপক্ষে ৩০০ ফুট প্রশস্ত এবং শুকনো মৌসুমে কমপক্ষে ১২ ফুট পানির গভীরতা বিদ্যমান রেখে খনন কাজ সম্পন্ন করা হবে। খনন সম্পন্ন হলে কলকাতা সমুদ্র বন্দর থেকে পণ্যবাহী ভ্যাসেল জাহাজ কুড়িগ্রামের চিলমারী দিয়ে ব্রহ্মপূত্রে প্রবেশ করে বাংলাদেশের ব্রহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ নৌ বন্দরে এসে পৌছবে। এতে পণ্য পরিবহনে সময় ও খরচ দুটোই বহুলাংশে সাশ্রয় হবে।
এছাড়াও ব্রহ্মপুত্র নদ খনন করে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে নতুন একটি নদীপথ তৈরির জন্য উচ্চভিলাষী এক প্রকল্প হাতে নিয়েছে দু’দেশ। দু’দেশের মধ্যে এ সংক্রান্ত একটি চুক্তিও হয়েছে। চুক্তি অনুযায়ী, ভারত সরকার ব্রহ্মপুত্রে তাদের অংশে নদী খনন করবে এবং বাংলাদেশ সরকার তাদের অংশে খনন করবে। চলতি বছরে এ প্রকল্পের কাজ শুরু হবে বলে জানা গেছে। নতুন এ নদীপথের মাধ্যমে উত্তর-পূর্ব ভারতে বাংলাদেশি পণ্যের বাজার তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে দুই দেশের মানুষের জন্য যোগাযোগ ও চলাচলের পথও সুগম হবে।
এদিকে, ব্রহ্মপূত্র নদ খননের পদক্ষেপ নেয়ায় জাতির জনক বঙ্গবন্ধু সুযোগ্য কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি এ অঞ্চলের নাগরিকরা আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন।
এবিএন/মোঃ মঈন উদ্দিন রায়হান/জসিম/নির্ঝর