শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

ছাত্রলীগ নেতা শাওন হত্যায় অবশেষে পিতার মামলা

ছাত্রলীগ নেতা শাওন হত্যায় অবশেষে পিতার মামলা

ময়মনসিংহ, ২১ মার্চ, এবিনিউজ : ময়মনসিংহ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি আশফাক আল রাফী শাওন গুলিবিদ্ধের ২৫দিন পর নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে। নিহতের পিতা এম এ কুদ্দুস আজ বুধবার এ মামলা করেন। যার নং ২৬৫/১৮। মামলায় গ্রেফতারকৃত সঞ্জয় দত্ত, এস এম আরিফুল হক, আমিনুল ইসলাম হিমেল ও দীপ্ত দত্তকে আসামী করা হয়েছে।

মামলায় নিহতের পিতা জেলা যুবলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামীলীগ নেতা এম এ কুদ্দুস অভিযোগ করেছেন, তার ছেলে আশফাক আল রাফী শাওন ও গ্রেফতারকৃত সঞ্জয় দত্ত উভয়েই জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী ছিল। শাওন জেলা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে বলিষ্ট নেতৃত্বের মাধ্যমে নিজের দৃঢ় অবস্থান গড়ে তুলে। নিহত শাওনকে বলিষ্ট ও শক্তিশালী প্রতিদ্বন্ধি মনে করে সভাপতি পদ নিশ্চিত করতে শাওনকে চীরতরে পৃথিবী তেকে সরিয়ে দেওয়ার গভীর ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়।

এ ষড়যন্ত্রের অংশ হিসাবে গত ২৫ ফেব্রুয়ারী রাত সাড়ে দশটার দিকে সাংগঠনিক কাজের কথা বলে আরিফুল হক শশী লজের সামনে থেকে মহিলা পরিষদের সামনে ডেকে নিয়ে যায়। এ সময় শাওনের সাথে থাকা সাদ্দাম, নাহিদ ও জুয়েল এবং মহিলা পরিষদের সামনে আগে থেকেই উপস্থিত থাকা সঞ্জয় দত্ত, আমিনুল ইসলাম হিমেল, আরিফুল হক ও দীপ্ত দত্তদের সাথে দীর্ঘ সময় রাজনৈতিক আলাপ আলোচনা চলে। এক পর্যায়ের সঞ্জয় দত্তের ঈশারায় তার ভাই দীপ্ত দত্ত নিজ বাসা থেকে অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র এনে আমিনুল ইসলাম হিমেলের কাছে দেয়। সুচতুর সঞ্জয় দত্ত পুর্ব পরিকল্পনা মতে হিমেলের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে শাওনকে হত্যার লক্ষ্যে তার পেটে গুলি করে। এতে শাওনের পেটে নাভীর ডান পার্শ্বে গুলি লাগে। গুলিবিদ্ধ শাওনকে সাদ্দাম, নাহিদ ও জুয়েলসহ অন্যান্যরা তাৎক্ষনিক ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। রাতেই চিকিৎসক অপারেশনের মাধ্যমে শাওনের পেট থেকে গুলি বের করে।

এদিকে শাওনের অবস্থা আশংকাজনক হওয়ায় পরদিন তাকে ঢাকায় রেফার্ড করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। পরে গত ৮ মার্চ ঢাকার ইবনেসিনা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শাওন মৃত্যুবরণ করে। একমাত্র ছেলে শাওন গুলিবিদ্ধ হয়ে মৃত্যুবরণ করায় মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পিতা এম এ কুদ্দুস কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে বিনা ময়না তদন্তে পরদিন লাশ দাফন করেন। অরপদিকে কোতোয়ালী পুলিশ স্বপ্রনোদিত হয়ে শাওন হত্যার ঘটনায় কোতোয়ালী মডেল থানার মামলা নং ৪৮(৩)১৮ দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই পলাশ কুমার রায় গ্রেফতারকৃতদের রিমান্ড আবেদনসহ নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্তের আবেদন করে। আদালত গ্রেফতারকৃতদের তিনদিনের রিমান্ড মঞ্জুরসহ লাশের ময়না তদন্তের নির্দেশ প্রদান করে। আদালতের নির্দেশের প্রেক্ষিতে গত ১৯ মার্চ নিহতের লাশ কবর থেকে উত্তোলন করে ময়না তদন্ত করে।

এদিকে নিহতের পিতার দায়ের করা মামলা গ্রহণ করে আদালতের বিচার জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্র্যাট মাসুদুল হক তার আদেশে বলেন, যেহেতু নালিশীর আনীত অভিযোগের বিষয়ে ইতিপুর্বে কোতোয়ালী থানায় পুলিশ বাদি হয়ে একটি মামলা করেছে। উক্ত মামলাটি বর্তমানে তদন্তনাধীন থাকায় ফৌজাধারী কার্যবিধির ২০৬ডি ধারায় বর্ণিত বিধানমতে ৪৮(৩)১৮ মামলার তদন্তকার্য সমাপ্ত হওয়ার পুর্ব অত্র নালিশী দরখাস্তের সকল কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। এদিকে পিতা মামলার বাদি এম এ কুদ্দুস বৃহস্পতিবার সকালে সংবাদ সম্মেলন করবে বলে জানান।

এবিএন/মঈন উদ্দিন রায়হান/জসিম/তোহা

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত