শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
ব্যাপক উন্নয়ন কর্মকান্ড

বদলে যাচ্ছে বনপাড়া পৌরসভা

বদলে যাচ্ছে বনপাড়া পৌরসভা

বড়াইগ্রাম (নাটোর), ২৩ মার্চ, এবিনিউজ : নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা সদরে অবস্থিত বনপাড়া পৌরসভার জন্ম ২০০২ সালের ৩১ ডিসেম্বর।

দেশের উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিমাংশের প্রবেশ দ্বার বনপাড়া পৌরসভাটি ২০১৫ সালে প্রথম শ্রেণিতে উন্নীত হয়। কাংখিত রাজস্ব আদায়ের কারণে গ্রামীণ পরিবেশে বড়াল নদীর ধারে গড়ে উঠা বয়সে তরুণ পৌরসভাটি প্রথম শ্রেণির হলেও নাগরিক সেবার মান ছিলনা কাংখিত মানের। ফলে পৌরসভার নাগরিক হয়েও মন কষ্টে ছিলো হাজারো মানুষের। আর সেই কষ্ট লাঘবেই শুরু হয়েছে মেগা উন্নয়ন কর্মকান্ড।

তৃতীয় নগর পরিচালন ও অবকাঠামো উন্নতি করণ সেক্টর প্রকল্পের (ইউজিআইআইপি-৩) আওতায় চলছে সেই উন্নয়নের কাজ। পৌরসভার ১২টি ওয়ার্ডের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ স্থানে ৯টি সড়ক পাঁকা করণ ও ৪টি আরসিসি ড্রেণ নির্মানের কাজ একযোগে শুরু হয়েছে। এসব প্রকল্পের জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৮কোটি ৫৮ লাখ ১৭ হাজার ৪৫৬ টাকা।

পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) নজরুল ইসলাম জানান, পৌরসভার মহিষভাঙ্গা, কালিকাপুর, বনপাড়া, গুনাইহাটি, মালিপাড়া, হারোয়া এলাকায় ৯টি সড়ক কার্পেটিং করে পাঁকা করণ এবং বড়াল নদীর লেয়ারের সাথে মিল রেখে খ্রিষ্টান ধর্মপল্লী থেকে মাছ বাজার হয়ে একটি, মহিলা কলেজের পাশ দিয়ে একটি, বনপাড়া বাইপাস থেকে একটি আরসিসি ড্রেন বড়াল নদী পর্যন্ত এবং বনপাড়া বিপ্লবের বাড়ি থেকে চাইহাটি বিল পর্যন্ত ৬৫০ মিটার একটি ড্রেন নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, চলতি মার্চ মাসের মধ্যেই কাজ গুলো শেষ করার কথা থাকলেও অতি বৃষ্টির কারনে নির্ধারিত সময়ে তা শেষ করা সম্ভব হয়নি। তবে সামনে জুনের মধ্যে অবশ্যই শেষ হবে।

উপজেলা পরিষদ মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ আব্দুল মান্নান বলেন, মাঝগাঁও ও জোয়াড়ী ইউনিয়নের কিছু অংশ নিয়ে গড়ে উঠা পৌরসভাটি শুধু নামেই ছিল, ভাল ড্রেন না থাকায় পরিষদ চত্বরে পানি জমে যেত। চাইহাটি বিল পর্যন্ত ড্রেন নির্মাণ হলে তা থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।

বনপাড়া ধর্মপল্লীর পাল পুরোহিত ফাদার হিউবার্ট বিকাশ রিবেরু বলেন, আমাদের গীর্জার সামনে পানি জমে যেত সামান্য বৃষ্টিতেই ফলে গীর্জায় প্রার্থনায় আসতে অনেক কষ্ট হতো। এবার ড্রেন হওয়ায় সেই কষ্টের অবসান হবে।

বনপাড়া বাইপাসের আমিনা হাসপাতালের স্বত্বাধিকারী ডা. আনছারুল হক বলেন, কালিকাপুর লিংক সড়ক দিয়ে জোয়াড়ী ইউনিয়নের হাজারো রোগী আসতো আমার ক্লিনিকে। সড়কটি কাঁচা থাকায় প্রায় এক কিলো ঘুরে আসতে হতো বৃষ্টি কাদার দিন গুলোতে। এবার সড়ক পাঁকা হওয়ায় রোগীদের সময়, কষ্ট এবং যাতায়াত খরচ সবই সাশ্রয় হবে।

উপজেলা অন্যতম বিদ্যাপিঠ সেন্ট যোসেফস স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ ফাদার লাজারুস রোজারিও বলেন, আমার প্রতিষ্ঠানের সামনের সড়ক ভাঙ্গা থাকায় শিক্ষার্থীদের চলাচলে খুবই অসুবিধা হতো। সড়কে সংস্কার তথা পাকা হওয়ায় কয়েক হাজার শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।

বনপাড়া শেখ ফজিলাতুন্নেসা মুজিব মহিলা অর্নাস কলেজের অধ্যক্ষ আব্দুর রাজ্জাক মোল্লা বলেন, পৌরসভার অনেক উন্নয়ন হচ্ছে এটা সত্য। তবে দুটি বিষয়ে নজর না দিলে এসকল উন্নয়ন ম্লান হয়ে যাবে। এর একটি হলো বড়াল নদী সংস্কার আর একটি হলো পৌরসভার বর্জ ফেলার নির্দিষ্ট ভাগার। বড়াল সংস্কার করা না হলে গোটা পৌরসভার বর্ষা কলে তলিয়ে যাবে। আর ভাগারের অভাবে যত্রতত্র বর্জ পরে থেকে পরিবেশ নষ্ট হবে।

পৌর মেয়র কেএম জাকির হোসেন বলেন, পৌরবাসির সমর্থনে আমি দ্বিতীয়বার মেয়র নির্বাচিত হয়েছি। তাদের সার্বিক সহযোগিতায় বনপাড়াকে মডেল পৌরসভায় রুপান্তরের চেষ্টা চলছে। উন্নয়ন কাজ শুরু হয়েছে, আরো অনেকগুলো প্রকল্পের কাজ অতি অল্প সময়ের মধ্যে শুরু হবে।

তিনি বলেন, সরকারি উদ্যোগে বড়াল খননের জন্য কাজ চলছে তাই পৌরসভা থেকে কোনো প্রকল্প নেওয়া হয়নি। আর বর্জ অপসারনের জন্য স্থায়ী ভাগারের জায়গা খোজা হচ্ছে। সে প্রক্রিয়া অব্যহত আছে। সকলের অকুণ্ঠ সহযোগিতায় আমরা অবশ্যই লক্ষে পৌছে যাব।

এবিএন/মিনারুল ইসলাম মিলন/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত