![বাল্য বিয়ের নিবন্ধন দেন রফিকুল](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/23/biye_abnews_131796.jpg)
রৌমারী (কুড়িগ্রাম), ২৩ মার্চ, এবিনিউজ : তথ্যসেবা কেন্দ্রে থেকে ১৮ মাসে অন্তত দেড় হাজার বাল্য বিয়ের নিবন্ধন দিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। এসব নিবন্ধন দিয়ে বাল্য বিয়ে পরিচালনা করছেন কাজী ও গ্রামের ইমামগণ।
ফলে কোনোক্রমেই বন্ধ করা যাচ্ছে না বাল্য বিয়ে। কিন্তু একজন দু’জন করে প্রকাশ হতে থাকে রফিকুলের কর্মকা-। শিশুদের স্কুলে ভর্তি করতে গিয়ে ধরা পড়ে রফিকুলের দেয়া নিবন্ধনগুলো ভুয়া। পরে তাকে বহিষ্কার করা হয়।
রফিকুল ইসলাম রৌমারী উপজেলার শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদ তথ্যসেবা কেন্দ্রে উদ্যোক্তা হিসেবে কাজ করে আসছিলেন। তিনি নিবন্ধনের নির্দিষ্ট সরকারী ওয়েব ব্যবহার না করে ফটোশপের মাধ্যমে ভুয়া নিবন্ধন তৈরি করে দিতেন। অভিযোগ রয়েছে শুধু শৌলমারী ইউনিয়নে নয়, গোটা উপজেলায় যেখানে বাল্য বিয়ে সংঘটিত হয় সেখানেই তিনি ভুয়া নিবন্ধনের ব্যবসা করতেন। আর এমন বিয়ের নিবন্ধন তৈরিতে তিনি নিতেন মোটা অংকের টাকা।
অভিযোগকারী মৌসুমি আক্তার, ফারজানা আক্তার, তৌহিদুল ইসলামসহ শতাধিক মানুষের অভিযোগে জানা যায়, রফিকুলের কাছে জন্ম নিবন্ধন করেছেন তারা। কিন্তু স্কুল রেজিষ্ট্রেশনের জন্য গেলে সেটি ভুয়া বলেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। পরে তারা ওয়েবে সার্চ দিলে সেটি ভুয়া প্রমাণিত হয়। পরে তারা নতুন করে জন্ম নিবন্ধন করেন।
ওই ইউনিয়নের ইউপি সদস্য আব্দুল কাইয়ুম বলেন, তথ্য সেবা কেন্দ্রর রফিকুল ইসলাম ভূয়া জন্ম নিবন্ধন দেওয়ার কারণে আমাদের ইউনিয়নে বাল্য বিয়ে বন্ধ করা যায়নি। এ নিয়ে আমাদের অনেক সময় বিব্রতকর অবস্থায় পড়তে হচ্ছে। রফিকুল চেয়ারম্যানের স্বাক্ষরও জাল করতো। তার শাস্তি হওয়া দরকার।
শৌলমারী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিল জানান, রফিকুল ইসলাম শৌলমারী ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্রে উদ্যোক্তা হিসেবে ২০১৪ সালের ১০ জুলাই নিয়োগ পান। এরপর থেকে শতকরা ৬০ ভাগ জন্ম-মৃত্যুর নিবন্ধন অনলাইনে না করে ফটোশপের মাধ্যমে নিবন্ধন করেন। এতে তিনি মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
নিয়ম রয়েছে, জন্মনিবন্ধন হলে উদ্যোক্তার সার্ভিস চার্জ বাবদ ৫০ টাকা, নিবন্ধনকারীর বয়স যা হবে প্রতিবছরের জন্য ৫ টাকা নেয়া হবে। এ নিয়মের মধ্যে প্রতিবছর অন্তত ৩ হাজারেরও বেশি নিবন্ধন হতো। কিন্তু তাকে নিয়োগ দেয়ার পর থেকে ১৩/১৪শ’ এর বেশি নিবন্ধন দেখান নি তিনি।
গত বছরের জুলাই মাসে মৌসুমি আক্তার ফারজানা আক্তার, তৌহিদুল ইসলাম, আরিফুল ইসলাম, নাছরিন আক্তারসহ অসংখ্য নিবন্ধনকারি আমার কাছে রফিকুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। গত বছরের এপ্রিল মাসে তার অনিয়ম দুর্নীতি প্রমাণিত হলে নিয়োগচুক্তির ১৪ ধারা মোতাবেক তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ব্যাপারে রফিকুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি কোনো ভূয়া নিবন্ধন করিনি। আমার সঙ্গে ৫০ হাজার টাকায় ৫ বছরের চুক্তি হয়েছিল। আমার থেকে অন্য একজন বেশি টাকা দিয়েছে তাই আমার সময় শেষ হওয়ার আগেই আমাকে অন্যায়ভাবে বাদ দেয়া হয়েছে।
এবিএন/রফিকুল ইসলাম সাজু/জসিম/এমসি