বৃহস্পতিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে : প্রধানমন্ত্রী

এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে : প্রধানমন্ত্রী

ঢাকা, ২৫ মার্চ, এবিনিউজ : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, স্বাধীনতা পুরস্কার থেকে অনুপ্রাণিত হবে তরুণ প্রজন্ম। দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হবে ও আগামী দিনে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। এই অগ্রযাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। মুক্তিযুদ্ধে চেতনায় বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। বিজয়ী জাতি হিসেবে আমরা মাথা উঁচু করে চলব।

আজ রবিবার রাজধানীর ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে স্বাধীনতা পদক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন।

পুরস্কারপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার তুলে দেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আজকে যারা সম্মাননা পেয়েছেন, এর মাঝে অনেকেই মরণোত্তর পুরস্কার পেয়েছেন। সম্মানপ্রাপ্ত সবাইকে অভিনন্দন, যারা মারা গেছেন তাদের প্রতি শ্রদ্ধা।

স্বাধীনতার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এ সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে গণহত্যা চালায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এরপর জাতির পিতা ২৬ মার্চ স্বাধীনতার ঘোষণা দেন। ৭ মার্চ জাতির পিতার ভাষণের পর থেকে, জাতির পিতার নির্দেশের পর বাঙালিরা প্রস্তুত হয়। এরপর আমরা বিজয় অর্জন করেছি। জাতির পিতা মাত্র সাড়ে তিন বছর সময় পেয়েছিলেন একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে গড়ে তোলার জন্য। দেশ স্বাধীনের পর জাতিসংঘে বাংলা ভাষায় ভাষণ দেন তিনি। বিশ্বে তিনি বাংলাদেশেকে পরিচয় করিয়েছেন। এর মধ্যেই তিনি একটি দেশকে গড়ে তুললেন এবং তার হাত ধরেই দেশের উন্নতি শুরু হয়। যখনই বাংলাদেশের মানুষ একটি আলোর পথ খুঁজে পায় তখনই ১৫ আগস্টের ঘটনা ঘটে। তিনি (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) বেঁচে থাকলে আরও আগেই বাংলাদেশ উন্নত, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত শক্তিশালী অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে পারত।

তিনি বলেন, সরকারের ধারাবাহিকতা বজায় থাকার কারণেই বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশে পরিণত হতে পেরেছে। আমরা ৪৩ বছর পর স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উন্নয়নশীল দেশের সারিতে এসেছি। এটি দুর্ভাগ্য যে, অনেক পরে আমাদের এই স্বীকৃতি অর্জন করতে হলো।

উন্নয়নশীল দেশ হতে হলে জাতিসংঘের তিনটি শর্তের মধ্যে দুটি শর্ত পূরণ হলেই স্বীকৃতি পাওয়া যায়। বাংলাদেশ তিনটি শর্তই বড় ব্যবধানে পূরণ করতে পেরেছে বলেও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা আমাদের স্বাধীনতা দিয়ে গেছেন। তার লক্ষ্য ছিল সোনার বাংলাদেশ। আমরা সেই সোনার বাংলা গঠন করার জন্য কাজ করে যাচ্ছি। আর আমাদের এই লক্ষ্য অর্জনে এবং আমাদের মহান স্বাধীনতা সংগ্রামে যারা বিশেষ অবদান রেখেছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা চেষ্টা করছি তাদের সম্মান জানাতে। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করার পর থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৮৫ জন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ও ৬টি প্রতিষ্ঠানকে স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছি। এ বছর করলাম আরও ১৮ জনকে। যদিও আমরা জানি আরও বহুজনের অবদান ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, আমরাও চেষ্টা করছি তাদের খুঁজে বের করতে। আমরা তাদের সম্মানিত করে নিজেরাই সম্মানিত হতে চাই। সেটাই আমাদের লক্ষ্য।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বাংলাদেশকে আমরা উন্নত, সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমি চাই মুক্তিযুদ্ধের প্রেরণা নিয়ে যে বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে তার যাত্রা যেন থেমে না যায়, যাত্রা যেন অব্যাহত থাকে। ২০২১ সালের মধ্যে আমরা বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই।

অনুষ্ঠানে ১৮ বিশিষ্ট ব্যক্তিকে স্বাধীনতা পদক তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

পদকপ্রাপ্তরা হলেন- স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য প্রয়াত কাজী জাকির হাসান, শহীদ বুদ্ধিজীবী এমএমএ রাশীদুল হাসান, প্রয়াত শংকর গোবিন্দ চৌধুরী, এয়ার ভাইস মার্শাল সুলতান মাহমুদ বীরউত্তম, প্রয়াত এম আব্দুর রহিম, প্রয়াত ভূপতি ভূষণ চৌধুরী ওরফে মানিক চৌধুরী, শহীদ লেফটেন্যান্ট মো. আনোয়ারুল আজিম, প্রয়াত হুমায়ুন রশীদ চৌধুরী, শহীদ আমানুল্লাহ মোহাম্মদ আসাদুজ্জামান, শহীদ মতিউর রহমান মল্লিক, শহীদ সার্জেন্ট জহরুল হক ও আমজাদুল হক।

সংস্কৃতির ক্ষেত্রে সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর এবং কৃষি সাংবাদিকতায় চ্যানেল আইয়ের পরিচালক (বার্তা) শাইখ সিরাজকে এ সম্মাননা দেওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া অধ্যাপক ডা. একে এমডি আহসান আলী চিকিৎসাবিদ্যায়, অধ্যাপক একে আজাদ খান সমাজসেবায়, সেলিনা হোসেন সাহিত্যে এবং ড. মো. আব্দুল মজিদ খাদ্য নিরাপত্তায় এবার স্বাধীনতা পুরস্কার পান।

স্বাধীনতা পুরস্কার দেশের সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় সম্মাননা।

এবিএন/সাদিক/জসিম/এসএ

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত