সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৮ বৈশাখ ১৪৩২
logo

পাকুন্দিয়ায় বেগুনের বাম্পার ফলন

পাকুন্দিয়ায় বেগুনের বাম্পার ফলন

পাকুন্দিয়া (কিশোরগঞ্জ) ২৯ মার্চ, এবিনিউজ : পাকুন্দিয়ায় পানির দরে বিক্রি হচ্ছে লম্বা জাতের বেগুন। তিন থেকে চার টাকা দরে উপজেলার তারাকান্দি, জাঙালিয়া, নতুন বাজার ও মির্জাপুর বাজারে পাইকারিভাবে বিক্রি হচ্ছে বিটি জাতের বেগুন।

গত বছর ফলন অনুযায়ী ভালো মূল্য পেয়ে এ বছর অধিক লাভের আশায় বেশি পরিমাণ জমিতে বেগুনের চাষ করে পাকুন্দিয়া উপজেলার কৃষক। এ বছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেগুনের বাম্পার ফলনও হয়। উপজেলার পৌরসদরসহ জাঙালিয়া, চরফরাদী, এগারসিন্দুর ও চন্ডিপাশা ইউনিয়নে ব্যাপক পরিমাণে বেগুন চাষ হয়েছে। এছাড়াও অন্যান্য ইউনিয়নগুলোতে কমবেশি বেগুন চাষাবাদ হয়েছে।

কিন্তু বেগুনের বাম্পার ফলন স্বত্ত্বেও কাঙ্খিত বাজার মূল্য না পেয়ে চরম হতাশ হয়ে পড়ছেন বেগুন চাষিরা। বেগুন চাষাবাদে যে খরচ হয়েছে তা তুলে আনাও অনেকটা কষ্টকর হয়ে পড়ছে। তাছাড়া অনেক বেগুন চাষিই হতাশ হয়ে বেগুন জমির পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছেন বলে স্থানীয় কৃষকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে। রাগে ক্ষোভে হতাশ হয়ে অনেক চাষিই বেগুন ফেলে দিচ্ছেন বলেও জানা গেছে।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত ২০১৬-১৭ অর্থ বৎসরে এ উপজেলার বেগুন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ ছিলো ৬৫ হেক্টর জমি। অর্জন হয়েছিল ৮৫ হেক্টর। ২০১৭-১৮অর্থ বৎসরে একই পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা থাকলেও গত বছরের তুলনায় এবছর ৯০ হেক্টর জমিতে বেগুন চাষাবাদ হয়েছে।

পৌরসদরের চরপাকুন্দিয়া গ্রামের বেগুন চাষি মহব্বত মিয়া জানান, এবছর তিনি এক কানি (৩৫শতাংশ) জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। এতে শ্রমিক খরচ বাদে তার খরচ হয়ে ২০হাজার টাকা। কিন্তু বর্তমান বাজার দরে লাভ তো দূরের কথা চালান উঠোনোয় দায় হয়ে পড়েছে বলে তিনি জানান।

এসময় তিনি গত বছরে ২০ শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা বিক্রি করতে পারলেও এবছর বেগুন চাষ করে তিনি লোকসানের মুখে পড়েছেন বলে হতাশা প্রকাশ করেন। একই সুরে কথা বলেন বেগুন চাষি সুরুজ মিয়া, দুদু মিয়া, দেলোয়ার হোসেন ভূঁইয়া ও শফিকুল ইসলাম মেম্বার।

বেগুন চাষি মো.সুরুজ মিয়া বলেন, বাজারে বেগুনের যে দাম। তাতে তিনি খুবই হতাশ। এবছর তিনি এককানি (৩৫) শতাংশ জমিতে বেগুন চাষ করেছেন। তিনিও করুণ সুরে বলেন, রাগে বেগুন জমিতে পরিচর্যা ছেড়ে দিয়েছে। এবার বেগুন চাষে তিনি চরম লোকসান গুণছেন। গত বছর বাজার ভালো ছিলো, লাভও হয়েছিল। কিন্তু এবছর গত বছরের তুলনায় ভালো ফলন সত্বেও কাঙ্খিত মূল্য পাওয়া যাচ্ছে না।

এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ ড. গৌর গোবিন্দ দাশ বলেন, রোগবালাই হয় না এমন জাতের বেগুন চাষের জন্য কৃষকদের পরামর্শ দেয়া হয়েছিল। এছাড়া এবছর আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বেগুনের ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকদের সমন্বয় করে বাজার ব্যবস্থা গঠন করা হলে ন্যায্য মূল্য নিশ্চিত হতো।

এছাড়াও সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে উপজলার জাঙালিয়া ও হোসেন্দি ইউনিয়নে সবজি সংরক্ষণের জন্য কোল্ড স্টরেজ নির্মাণের চিন্তা করা হচ্ছে। এতে করে মৌসুমে সবজি সংরক্ষণ করে পরে সুবিধা মতো সময়ে বাজারে বিক্রি করলে কৃষকরা ন্যায্য মূল্য পাবেন বলে আশা প্রকাশ করেন এ কর্মকর্তা।

এবিএন/শরীফ আহম্মেদ/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত