ফুলবাড়ী (দিনাজপুর), ২৯ মার্চ, এবিনিউজ : ফুলবাড়ী উপজেলার কাজিহাল ইউপির কাজিহাল দহশতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মাবুদ বয়সসীমা বৃদ্ধি করে অবৈধভাবে মাদ্রাসার সরকারি অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে।
ফুলবাড়ী উপজেলার বেতদিঘী ইউপির বেতদিঘী গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন শাহ্ এর এক লিখিত অভিযোগে জানা যায়, উপজেলার কাজিহাল ইউপির দহশতিয়া ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মাবুদ জন্ম তারিখ জালিয়াতি করে উক্ত মাদ্রাসায় চাকুরীতে বহাল থেকে অবৈধভাবে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করে চলেছেন।
তার স্কুল জীবনের সহপাঠি বন্ধুরা গত ২০১৭ সালে ঐ একই মাদ্রাসা থেকে অবসর গ্রহণ করে। কিন্তু অধ্যক্ষ আব্দুল মাবুদ ২০১৯ সালে অবসরে যাবেন শুনতে পেয়ে অনেকের সন্দেহ হয়।
অনুসন্ধানে জানাযায়, তিনি ১১ বৎসর ১১ মাসে দাখিল পাশ দেখিয়ে জন্ম তারিখ জালিয়াতি করে বহাল তবিয়তে চাকুরী করছেন এবং অবৈধভাবে সরকারি অর্থ উত্তোলন করছেন। তার ছোট বোন মোছা. ফিরোজা খাতুনের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ১৪/০৯/১৯৫৭।
সেখানে অধ্যক্ষ আব্দুল মাবুদের জন্ম তারিখ দেখানো হয়েছে ০১/০৪/১৯৫৯। এতে প্রমাণিত হয় জালিয়াতির মাধ্যমে জন্ম তারিখ পরিবর্তন করে চাকুরীর বয়স সীমা বাড়িয়ে সরকারি অর্থ আত্মসাৎ করছেন।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন শাহ্ গত ০৭/০১/২০১৮ ইং তারিখে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক বরাবর তদন্ত করার নিমিত্তে একটি আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করার জন্য নির্দেশ প্রদান করেন।
জেলা শিক্ষা অফিসার গত ২৪/০৩/২০১৮ ইং তারিখে তদন্ত করার লক্ষ্যে বাদি বিবাদী ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারকে উক্ত মাদ্রাসায় উপস্থিত থাকার জন্য পত্র দ্বারা জানান।
অপরদিকে ফুলবাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ্যের বিরুদ্ধে দূর্নীতির বিষয়ে গত ০৭/০১/২০১৮ ইং তারিখে অভিযোগ করলে তিনি কোন প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেননি।
এদিকে সৈয়দ আলী মীর মাদ্রাসার প্রতিষ্ঠাতার পুত্র সৈয়দ জাহেরুল ইসলাম এর সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, আমার বাবার জমির উপর মাদ্রাসাটি বর্তমান স্থাপিত। কিন্তু মাদ্রাসায় শিক্ষক নিয়োগে দূর্নীতি, প্রতি বছর জমি খায়খালাশি রেখে লক্ষ্যাধিক টাকা ব্যাংকে জমা না করে আত্মসাৎ ও গাছ বিক্রির টাকা একক সিদ্ধান্তে আত্মসাৎ করেছেন বলে অভিযোগ করেন।
এছাড়া শিক্ষকদের কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা গ্রহন করে জেনারেল ফান্ডে জমা করার কথা থাকলেও তা করেননি। রিজার্ভ ফান্ডের লভাংশ উত্তোলন করে প্রায় লক্ষধিক টাকা আত্মসাৎ করেন। মন্ত্রনালয়ের জরিপের পর মেজবা, রুহুল আমিন ও জাহিদুল ইসলামের নিকট হতে ১৮ হাজার টাকা গ্রহন করে যা আয় ব্যায়ের খাতায় তোলা হয়নি।
এছাড়া ১৬ টি নিয়োগের ব্যাংড্রাফট এর টাকা এবং মাদ্রাসার উন্নয়নের লক্ষে শিক্ষকদের প্রদান কৃত লক্ষ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে।
অপরদিকে তার সার্টিফিকেট অনুযায়ী দেখা যায় দেড় বছর বয়সে তিনি মাদ্রাসায় ভর্তি হন। যেটা আদেও বিশ্বাসযোগ্য নয়। এ বিষয়ে উক্ত মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আব্দুল মাবুদ এর ০১৭১৭২৪২৯৪৪ নং মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান আমার বিরুদ্ধে যারা অভিযোগ করেছে আমি এ বিষয়ে কিছু জানিনা।
এ ব্যাপারে বীর মুক্তিযোদ্ধা মোছাদ্দেক হোসেন শাহ্ বিষয়টি তদন্ত স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে শিক্ষা মন্ত্রনালয়ের উদ্ধর্তন কর্তৃপক্ষের আশু হন্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
এবিএন/মো. আফজাল হোসেন/জসিম/এনকে