![কলাপাড়ার ৫ ইউপি’র নির্বাচন সম্পন্ন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/29/vot_abnews_132745.jpg)
কলাপাড়া (পটুয়াখালী), ২৯ মার্চ, এবিনিউজ : কলাপাড়া উপজেলার ধানখালী, মিঠাগঞ্জ, বালিয়াতলী, ডালবুগঞ্জ এবং চম্পাপুর ইউনিয়নে শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। অধিকাংশ কেন্দ্রে পুরুষ ভোটারের চেয়ে নারী ভোটারদের উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। নারীদের দীর্ঘ লাইনে ঘন্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থেকে ভোট দেয়ার জন্য অপেক্ষা করতে দেখা গেছে।
নির্বাচন পূর্ব উপজেলার ধানখালী ইউনিয়নে একাধিক সহিংসতার ঘটনা, ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নে প্রতিদ্বন্ধী প্রার্থীর সমর্থকদের ওপর হামলার ঘটনায় গত কয়েকদিন ধরে কিছুটা উত্তেজনা বিরাজ করলেও ভোটের দিন ধানখালী ইউনিয়নের ফুলতলী নামক স্থান থেকে কলাপাড়ার বিশিষ্ট হোটেল ব্যবসায়ী, সুইডেন প্রবাসী গাজী রফিকুল ইসলামকে দুপুর আড়াইটার সময় পুলিশের ভ্রাম্যমান দল টুটু বোর রাইফেল ও ৫২ রাউন্ড গুলিসহ গ্রেপ্তার করেছে।
কলাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। জানা গেছে, গাজী রফিকুল ইসলাম নিজের ব্যক্তিগত গাড়ীতে করে অস্ত্র ও গুলি নিয়ে ধানখালী ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে যাচ্ছিলেন। সব মিলিয়ে কলাপাড়ার পাঁচটি ইউপির নির্বাচন পরিস্থিতি ছিলো শান্তিপূর্ণ।
ভোট দিতে আসা অধিকাংশ নারীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বাড়ির কাজ দ্রুত সেরেই তাঁরা সকাল ৮টার আগেই কেন্দ্রে এসে জড়ো হন। দীর্ঘ সময় ধরে ভোট দিতে লাইনে অপেক্ষা করে ভোট দিতে পেরে তাঁরা খুশী। ভোট কেমন হচ্ছে ? এ প্রশ্নের উত্তওে তারা জানান, এর আগের নির্বাচনগুলোতে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। এবার সে পরিস্থিতি নেই। প্রথমবার ভোটা দিয়ে নতুন ভোটাররা আনন্দিত।
বালিয়াতলী ইউনিয়নের দক্ষিন ছোট বালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২টি, কাংকুনি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২টি, তুলাতলী মাধ্যমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৪টি, মাঝেরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ৩টি, চর বালিয়াতলী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের ২টি বুথে ধানের শীষ প্রতীকের কোনো পোলিং এজেন্টকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। বিএনপি মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী এম নুরুল কবীর ঝুনু অভিযোগ করেন, আগের রাতে আমার মনোনীত এজেন্টদের ভয়ভীতি দেখানোয় কেউ কেন্দ্রে যেতে পারেনি।
চম্পাপুর ইউনিয়নের বাংলাবাজার এলাকায় মা ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্রে দুপুর সাড়ে ১২ টার সময় নারী ভোটারদের দীর্ঘ লাইন দেখা যায়। এর মধ্যে ৭০-৮০ বছরের নারী ভোটারদের উপস্থিতিও লক্ষ্য করা গেছে। একাধিক নারী ভোটার জানান, সকাল ৮ টার আগে তাঁরা ভোট দেয়ার জন্য বাড়ি থেকে এসে লাইনে দাঁড়ান। সাড়ে ৪ ঘন্টা অপেক্ষা করেও ভোট দিতে পারেনি। কেন্দ্রের দায়িত্বরত প্রিসাইডিং কর্মকর্তা, হাজীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শাহজালাল মিয়া বলেন, ভোটারদের চাপ বেশী থাকায় এমন সমস্যা হয়েছিল।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো. মাছুমুর রহমান বলেন, আমি অনেকগুলো কেন্দ্র ঘুরে দেখেছি। ভোটাররা স্লিপ নিচ্ছে। যে যার মতো ভোট দিতে পারছে। প্রতিটি স্থানে ভোট দেয়ার জন্য জনগণের স্বতস্ফুর্ততা দেখেছি।
মিঠাগঞ্জ ইউনিয়নে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী মনিবর রহমান খন্দকার অভিযোগ করেন, আরামগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী কাজী হেমায়েত উদ্দিনের ছোট ভাই কাজী রুবেল ভোটারদের হাত থেকে ব্যালট নিয়ে সীল মেরেছে। আ. লীগ প্রার্থী কাজী হেমায়েত উদ্দিন বলেন, বিএনপি প্রার্থীর এসব অভিযোগ সত্য নয়। মিঠাগঞ্জ এবং ডালবুগঞ্জ ইউনিয়নের অধিকাংশ কেন্দ্রগুলি দুপুরের পর ভোটার না থাকায় ফাঁকা ছিলো।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আবদুর রশিদ জানান, ছোট খাটো অভিযোগ যা পেয়েছি, তা আমরা দ্রুত সমাধান করার চেষ্টা করেছি। এক কথায় বলা যায়- নির্বাচন শান্তিপূর্ণ, অবাধ এবং সুষ্ঠু হয়েছে। বর্তমানে ভোট গণনা চলছে।
এবিএন/তুষার হালদার/জসিম/এমসি