![ঝোলকাঠি জেলার এলজিডিইডি সড়কগুলির বেহালদশা](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/30/road_abnews_132899.jpg)
রাজাপুর (ঝালকাঠি), ৩০ মার্চ, এবিনিউজ : ঝালকাঠির রাজাপুর উপজেলা সদর থেকে বিশখালী নদীর দূরত্ব প্রায় ৫ কিলোমিটার। নানা কারণে উপজেলাবাসীর কাছে গুরুত্বপূর্ণ ওই পথ।
রাজাপুর-বাদুরতলা সড়ক নামে পরিচিত সড়কটি দীর্ঘদিন সংস্কার না হওয়ায় এটি এখন উপজেলাবাসীর কষ্টের অন্যতম কারণ। সড়কের অধিকাংশ স্থানের পিচ উঠে খানাখন্দে পরিণত হয়েছে। কোথাও বড় বড় গর্ত তৈরি হয়েছে। খুব প্রয়োজন না হলে এই সড়ক দিয়ে কেউ চলাচল করতে চায় না।
তবে নিরুপায় হয়ে পড়েছেন সড়কের দু’পাশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ির হাজারো মানুষ। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি প্রশস্ত করে সংস্কার করলে উপজেলার অর্থনৈতিক উন্নয়নে তা বড় ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। রাজাপুর সদর থেকে বিশখালী নদী পর্যন্ত সড়কটি বাদুরতলা লঞ্চঘাটে গিয়ে শেষ হয়েছে।
সড়কটি যদি ট্রাক চলাচলের উপযোগী করা যায় তবে লঞ্চঘাট থেকে পণ্য পরিবহনের ক্ষেত্রে তা বড় ভূমিকা রাখবে বলে মনে করেন ব্যবসায়ীরা। বাদুরতলা লঞ্চঘাট থেকে ঢাকাগামী লঞ্চে সরাসরি পণ্য পরিবহন ও যাত্রীদের চলাচলে সুযোগ থাকলেও দীর্ঘদিন সড়কটি বেহাল অবস্থায় থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।
পূর্ব রাজাপুর এলাকার বাসিন্দা মুক্তিযোদ্ধা শাহ আলম খসরু জানান, ধুলোময় সড়কটির কারণে সব সময় ঘরের দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখতে হয়। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে। এছাড়াও প্রচণ্ড ধুলোর কারণে সড়কের পাশে বসবাস করা মানুষ শ্বাসকষ্ট, হাঁপানিসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।
রাজাপুর বাজারের কাপড় ব্যবসায়ী ফেরদৌস বাদল জানান, আমাদের প্রতি সপ্তাহে কাপড় কিনতে ঢাকায় যেতে হয়। কাছে লঞ্চঘাট থাকা সত্যেও ঝালকাঠি অথবা বরিশালে গিয়ে ঢাকার লঞ্চে উঠতে হয়। ফলে মালামাল পরিবহনের ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি হয়। যদি বাদুরতলা সড়কটি সংস্কার করা হতো, তাহলে অল্প সময়ে এবং অল্প খরচে রাজাপুরবাসী ঢাকায় যাতায়াত ও পণ্য পরিবহন করতে পারত।
রাজাপুর স্থানীয় সরকার ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী লুৎফার রহমান বলেন, সড়কটি সংস্কারের প্রস্তাব রয়েছে কিন্তু প্রশস্ত করার বিষয়ে বর্তমানে কোনো পরিকল্পনা নেই। তবে সড়কটির গুরুত্ব বিবেচনায় নিয়ে আমরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানাব।
ঝালকাঠি এলজিইডি সূত্র জানায়, জেলার ৪ উপজেলায় এলজিইডির ১ হাজার ৮শ’ ৪৯টি সড়ক রয়েছে। দীর্ঘদিনে সংস্কার না হওয়ায় জেলার এসব সড়ক মোট ৪ হাজার ১৬৩ কিলোমিটারের অধিকাংশই ভেঙেচুড়ে একাকার হয়ে গেছে। এর মধ্যে কার্পেটিং সড়ক রয়েছে ৪৯০ কি.মি., ইটের সড়ক রয়েছে ৪৬৭ কি.মি., ঢালাই ১২ কি.মি.।
বাকি সড়ক মাটির তাও বর্ষার দিনে কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। আর পাকা এসব সড়কে খানাখন্দ ও ভেঙেচুড়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে গেছে। যথাযথভাবে সংস্কার না হওয়ায় জেলার গ্রামীণ যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এসব সড়কে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। বিভিন্ন স্থানের সড়ক ভেঙে সরুও হয়ে একাকার হয়ে দুর্ঘটনা পড়ছে ট্রাক, টেম্পো ও মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন যানবাহন।
ঝালকাঠি এলজিইডি নির্বাহি প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন সড়কের বেহালদশার কথা স্বীকার করে জানান, সড়তগুলো রক্ষাবেক্ষণের আওতায় নেয়া হয়েছে। প্রায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে এবং আরও ৮ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়ার প্রক্রিয়ায় রয়েছে। তা পেলে গুরুত্বপূর্ণ সড়কগুলো দ্রুত সংস্কার করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ সড়কগুলো নির্মাণ করা হবে।
এবিএন/রহিম রেজা/জসিম/এমসি