![স্ট্রোকের চিকিৎসা ফিজিওথেরাপি](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/31/brain-stroke-physiotherapy_132991.jpg)
মো. মুজিবুল হক শ্যামল, ৩১ মার্চ, এবিনিউজ : কোনো কারণে মস্তিষ্কের নিজস্ব রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বাধাগ্রস্ত হওয়ার ফলে স্নুায়ুকোষ নষ্ট হওয়াকে স্ট্রোক বলে। অর্থাৎ মাথার ব্রেন থেকে যখন শরীরে রক্ত চলাচল বাধাগ্রস্ত হয় তখন তাকে স্ট্রোক বলে থাকি। স্ট্রোককে চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় সেরিব্রো ভাসকুলার অ্যাকসিডেন্ট বলা হয়, যা বাংলা করলে দাঁড়ায়, মস্তিষ্কের রক্তনালী দুর্ঘটনা। আমাদের মস্তিষ্কের বিভিন্ন জায়গা আমাদের শরীরের বিভিন্ন কাজের জন্য নির্দিষ্ট থাকে। তাই মস্তিষ্কের কোথায়, কতটুকু আক্রান্ত হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে স্ট্রোকের ভয়াবহতা।
ওষুধ স্ট্রোক রোগীকে মেডিকেল স্ট্যাবল করতে পারলেও তার শরীরের স্বাভাবিক কার্য ক্ষমতা ফিরিয়ে আনতে পারে না। স্ট্রোক পরবর্তী সমস্যাগুলো দূর করে শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা ফিরিয়ে আনার জন্য প্রয়োজন সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা। তাই রোগী স্ট্রোক আক্রান্ত হলে দ্রুত সম্ভব রোগীকে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাবেন এবং ২৪ ঘন্টার ভেতরে থেরাপি চিকিৎসা শুরু নিশ্চিত করবেন। মনে রাখবেন, স্ট্রোকের পর যত দ্রুত ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা শুরু করা যাবে, রোগীর কার্যক্ষমতা ফিরে আসার সম্ভাবনা তত বেশি থাকে।
ফিজিওথেরাপি দৈনিক ৩/৪ বার করে দিতে হতে পারে। বাসায় ১ বার করে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিয়ে তেমন কোন ফল আসে না। তার জন্য রোগীকে ক্লিনিক বা হাসপাতালে ভর্তি রেখে ফিজিওথেরাপি চালিয়ে যাওয়াই উত্তম। শুরু থেকে ফিজিওথেরাপি চালু থাকলে ২/৩ মাসে রোগী আবার স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসে। এক্সপার্ট ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা দিয়ে থাকেন। এক্ষেত্রে একিউট ও ক্রনিক স্টেজ এই ভাবে দুই রকম চিকিৎসা প্রয়োজন হয় এবং প্রতি মুহূর্তেই রোগীর ফিজিক্যাল অবস্থা তত্ত্বাবধান করতে হয়। ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার ক্ষেত্রে বিভিন্ন সায়েন্স ভিত্তিক চিকিৎসা পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়।
যেমন: মবিলাইজেশন, পশ্চারাল চেনজেজ, স্ট্রেচ রিলাক্স, রেইনজ অব মোশন, ভেজোমোটর, রিপ্লেক্স, অ্যাকটিভ ফ্রি, অ্যাকটিভ রেজিসটেড, বেলেন্স ট্রেনিং, রিএজুকেশন, গেইট ট্রেনিং, বোবাথ–কেবাথ, নিউরোমাসকুলার, ইনহেবিশন, মাসকুলার স্ট্রেচিং ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক পুর্নবাসন চিকিৎসার মাধ্যমে রোগী ধীরে ধীরে কর্মক্ষম ও সুস্থ হয়ে উঠে, অনেক ক্ষেত্রে ইলেকট্রোথেরাপি চিকিৎসা যেখানে সেখানে বা কোন টেকনোলজিস্ট বা টেকনিশিয়ানের দ্বারা না নিয়ে ফিজিওথেরাপি এক্সপার্টদের সম্পূর্ণ তত্ত্বাবধানে নিতে হবে। তাহলে রোগী অবশ্যই ভুল চিকিৎসা থেকে বেঁচে যাবেন এবং একটি স্বাভাবিক কর্মক্ষম জীবন ফিরে পাবেন।
আর যারা দীর্ঘদিন প্যারালাইসিসে আক্রান্ত তাদের শারীরিক পুনর্বাসনের পাশাপাশি মানসিক পুনর্বাসনও করতে হতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে একজন মানসিক রোগ চিকিৎকের সাহায্য নেয়া উচিত। (সংগৃহীত)
এবিএন/ফরিদুজ্জামান/জসিম/এফডি