![ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন সিরাজগঞ্জের নুর ইসলাম](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/03/31/abnews-24.bb_133021.jpg)
সিরাজগঞ্জ, ৩১ মার্চ, এবিনিউজ: জীবন-জীবিকার তাগিতে ফেরি করে মুখোরুচক ঝালমুড়ি বিক্রি করে সংসার চালাচ্ছেন নুর ইসলাম। তিনি ৪৮ বছর বয়সে এসেও ক্লান্তবোধ করেননি। তিনি দীর্ঘ ৩২ বছর ধরে ঝুড়ি কাঁধে নিয়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি করে যাচ্ছেন সিরাজগঞ্জ শহরের বিভিন্ন স্থানে। বিশেষ করে অফিস আদালতসহ শহরের বাজার এলাকায় নুর ইসলাম ভাইয়ের এই জাল মুড়ি খাওয়ার অপেক্ষায় থাকে নারী পুরুষ। তিনি সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার বলিদহ গ্রামের মৃত আবুল হোসেনে ছেলে। দারিদ্র কষাঘাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য ঝাল মুড়ি বিক্রি করে আসছেন।
দারিদ্র কষাঘাত থেকে কিছুটা মুক্তি পেলেও জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসেও তাকে ঝুড়ি কাঁধে নিয়ে ঝাল মুড়ি বিক্রি করতে হচ্ছে। অবশ্য এই বয়সে তাকে একটু আরাম-আয়েশে জীবন কাটানোর কথা থাকলেও এখনও এই মুখোরচক ঝাল মুড়ি বিক্রি করছে সংসার চালানোর তাগিতে। প্রায় ১ হাজার টাকার চালান খাটিয়ে এই ঝাল-মুড়ি বিক্রি করেই তিনি ২ ছেলে ৩ মেয়েকে পড়াশোনা করাতে এখন হিমশিম খাচ্ছেন। বড় মেয়ে ৬ষ্ঠ শ্রেণী ও ছেলে-২য় শ্রেনীতে পড়ে। বাকি সন্তানেরা মায়ের সাথে বাড়িতে থাকেন। স্ত্রী ও ৫ সন্তান নিয়ে চলছে ঝাল-মুড়ি নুর ইসলামের সংসার। ঝাল মুড়ি বিক্রি করার জন্য শহরের এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে তাকে মিষ্টি আওয়াজে নূর ইসলাম ভাইয়ের ঝাল-মুড়ি, ঝাল-মুড়ি বলে বিক্রি করছেন।
তার আশা ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনা করিয়ে মানুষের মত মানুষ করবে। ভালো চকরী করবে এবং দেশ ও জাতির ভাগ্য উন্নয়ন করবে। সেই আশা বুকে ধারন করে প্রতিনিয়ত সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছুটছেন কাঁধে ঝাল-মুড়ির ঝুড়ি নিয়ে এই শহরে। ক্লান্ত কন্ঠে নুর ইসলাম বলেন, ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠে কাঁধে ঝাল-মুড়ির ঝুড়ি নিয়ে শহরের এই প্রান্ত থেকে ওই প্রান্তে ছুটতে ছুটতে এখন দুই পা অবস আসে। ছেলে মেয়ে মানুষের অনেক আশা থাকলেও এই বয়সে আর পারছিনা।
কান্না জড়িত কন্ঠে নুর ইসলাম আরোও বলেন, এই শহরে অনেকের আনন্দ দেখে নীরবে ফেলি চোখের পানি। বিশ্বাস করো, তোমাদের কারো আনন্দ দেখে, আমি কখনও হিংসা করিনা। কোন অসৎ কাজ নয় ব্যবসা ছোট হলেও সততার সাথে থাকলে ভাল ভাবে বেঁচে থাকা সম্ভব হয়। এতে শহরের লোকজন আমাকে ভালবাসে এবং আমার মুখোরুচক ঝাল মুড়ি ইচ্ছা করে নেই বিশেষ করে ছাত্র/ছাত্রীসহ অনেকেই। ছেলে মেয়ে শিক্ষিত না হওয়া পর্যন্ত আমি জীবন যুদ্ধে এই ঝাল মুড়ি বিক্রি করেই যাবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি।
এবিএন/এস.এম তফিজ উদ্দিন/জসিম/তোহা