![সদরপুর বাজারে অবৈধ দখলে রাস্তা, নোংরা পরিবেশে পশু জবাই](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/01/abnews-24.bbbbbbbbbbbbbbbbb_133218.jpg)
সদরপুর (ফরিদপুর), ০১ এপ্রিল, এবিনিউজ : ফরিদপুরের সদরপুর সদরের হাটবাজার বিভিন্ন সমস্যার মধ্যে দিয়ে প্রতিদিন মিলছে। বাজারের গলিপথ দখলে যাওয়ায় সংকীর্নতার মধ্যে পড়েছে বাজারের ব্যবসায়ীসহ বাজারে থাকা ক্রেতা বিক্রেতা। খোলা জায়গায় যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ,গবাদিপশু ও মুরগী জবাইয়ের জন্যে নেই কোনো সুব্যবস্থা। স্বাস্থ্য সম্মত পরিবেশ নিয়ে উৎকন্ঠ দেখা দিয়েছে চরমে।
রাস্তা দখল হয়ে পড়ায় জরুরী প্রয়োজনে আগুন নিয়ন্ত্রনের জন্যে ফায়ার সার্ভিস যানবাহন বা কেহ বাজারে অসুস্থ হয়ে পড়লে এ্যামব্রেলেন্স যাতায়াতের কোনো রাস্তার ব্যবস্থা নেই। এছাড়াও প্রতিদিন বাজারে গবাদি পশু খোলা জায়গায় জবাই করা হচ্ছে। জবাইকৃত পশুর জন্যে মানসম্মত একটি জবাইখানা নেই। এছাড়াও গবাদি পশু পরীক্ষার জন্যে কোনো সুব্যবস্থা নেই। অভিযোগ রয়েছে বাজারে ওইসব জবাইকৃত পশু পরীক্ষার জন্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদারকি নেই।
অপরদিকে, বাজারটিতে প্রতিদিন হাজার হাজার ক্রেতা-বিক্রেতার সমাগম ঘটে থাকে। নিদিষ্ট জায়গা না পাওয়ার কারনে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের কারনে পরিবেশ দূষিত হয়ে উঠেছে। বাজারে একটি শৌচাগার রয়েছে। মলমূত্র ধরে রাখার জন্যে নেই সেফট্রি ট্যাংক ব্যবস্থা। ত্যাগকৃত মলমূত্র বাহিরে যাওয়ার ফলে প্রতিনিয়ত নষ্ট হচ্ছে পরিবেশ। বাজারের পাশের এলাকাবাসীর দাবী দ্রুত এর প্রতিকার করা না হলে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হবে তারা। আরও দেখাযায়, বেশ কয়েক বছর পূর্বে বাজার সমিতির উদ্যোগে চাঁদা আদায় করে বাজারের ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান গুলো আগুনের হাত থেকে রক্ষা করতে বাজারে বসানো হয়েছিল সেলো পাম্প মেশিন সেটিও এখন যতেœর অভাবে বিকল হয়ে রয়েছে।
আরও জানা যায়, ১৯৮০দশকে সদরপুর বাজার উন্নয়নের জন্যে সরকারি ভাবে ২টি সেডঘর নির্মান করা হয়। একটি চাউল বাজার অন্যটি মাছ বাজার। বর্তমানে চাউল বাজারের সেডঘরটি চরমভাবে জরাজীর্নতার মধ্যে রয়েছে। চাল ছিদ্র ও চালরক্ষাকারী বাঁশের আড়া ভেঙ্গে হেলে পড়েছে। যে কোনো সময় পুড়োটাই ভেঙ্গে পড়ে অনেক বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে এবং আমরা অত্যান্ত ঝুকির মধ্যে দোকানপাট করছি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখাযায়, বাজারে প্রায় ৬শ’টির অধিক মালিকানাধীন দোকানঘর রয়েছে। প্রতিদিন বাজারটিতে প্রায় ৫থেকে ১০হাজার লোকের সমাগম ঘটে। সকাল ৬টা থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিরামহীন ভাবে চলে বাজারটি। বাজারে সরকারি চাকুরীজীবি থেকে শুরু করে প্রতিটি মহলের লোকজন তাদের নিত্যাদিনের পন্য ক্রয়-বিক্রয় করে থাকেন। চলমান বাজারে রাস্তা গুলো নিচু হওয়ায় সামান্য পানি জমলেই পানিবন্দি হয়ে পড়ে পুরো বাজার। বৃষ্টির পানিতে বাজারের কাপড়পট্টির এলাকার দোকানে ঢুকে পরে। সুষ্ট ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকার জন্যে পানিজট ব্যবস্থাকে প্রধান হিসাবে দায়ী করে তারা আরও জানান বাজারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না করা হয় তাহলে বিভিন্ন দুর্ভোগের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে না।
আরও দেখা যায়, প্রতিদিন বাজারের বিভিন্নস্থানে ময়লা আবর্জনা জমে থাকে। বাজার পরিচ্ছন্ন কর্মীরা প্রতিদিন ভোররাত থেকে ওইসব স্তুপ করা বর্জ্য তুলে নেয়। ময়লা ফেলার বা রাখার জন্যে নিদিষ্ট কোনো জায়গা না থাকার ফলে প্রতিনিয়ত ওইসব ময়লা-আবর্জনা যত্রতত্র স্থানে ফেলে পরিস্কারছন্নকর্মীরা। অনেক সময় দেখাযায়, সদরপুর স্টেডিয়াম মাঠ সংলগ্ন ভূবনেশ্বর নদের শাখা খালের মধ্যে ফেলা হচ্ছে বর্র্জ্য। ওইসব বর্জ্যের দুগর্ন্ধে বিভিন্ন ধরনের রোগের আশংঙ্কা করা হচ্ছে।
সচেতন মহল জানান, বাজারের গলি পথের টংঘর গুলো সরিয়ে দিলে এবং দোকানঘরের সামনে প্রতিষ্ঠানের সামনে দখলকরা অংশটুকু উচ্ছেদ করা হলে পুরো বাজারে সাধারণ ক্রেতা বিক্রেতা সুন্দর ভাবে যাতায়াত করতে পারবে। আরও জানা যায়, প্রতিবছর নিলাম ডাকে হাট ইজারা মূল্যে প্রায় লক্ষ লক্ষ টাকার রাজস্ব আয় হলেও বাজার উন্নয়নের কোনো সৃদৃষ্টি নেই কর্তৃপক্ষের। জনগুরুত্বপূর্ন বাজারটি গত বছর ২৬লাখ টাকা ইজারা মূল্যে বিক্রি করা হয়েছিল। প্রতি বছর বিপুল পরিমান সরকারি রাজস্ব আয় করা হলেও বাজারের কোনো উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি। সম্প্রতি বাজারটি এবছর সরকারি ইজারা মূল্যে বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। হাট বাজারটির ইজারায় এবছর ৩৩লাখ অর্থের রাজস্ব আয় রয়েছে সাথে যুক্ত রয়েছে ভ্যাট।
এ প্রসঙ্গে সদরপুর বাজারের সভাপতি ও সদরপুর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ শহিদুল ইসলাম বাবুল বলেন, বাজারে ড্রেনেজ ব্যবস্থা, স্যানিটেশন ও উন্নয়ন করা অত্যান্ত জরুরী প্রয়োজন। স্বল্প সময়ের মধ্যেই এর সংস্কার করা হবে।
এবিএন/মোহাম্মাদ সাব্বির হাসান/জসিম/তোহা