![সুনামগঞ্জে ফসলরক্ষা বাঁধ ধ্বসে নদীতে বিলীন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/03/badh_abnews_133483.jpg)
সুনামগঞ্জ, ০৩ এপ্রিল, এবিনিউজ : কাজ শেষ হওয়ার আগেই হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ধ্বসে নদী বিলীন হয়ে গেছে। দেখার হাওরের দোয়ারাবাজার অংশের সুরমা নদীর পাড়ের বাঁধের প্রায় ১৫০ ফুট গত শনিবার রাতে ধ্বসে গেছে। মাটি দেবে ঐ অংশটি সুরমা নদীর পাড়ের সঙ্গে মিলে গেছে।
স্থানীয়রা বলছেন, ‘বাঁধের এই অংশটি ধ্বসে পড়ার আশংকা আগেই করা হয়েছিল। কিন্তু প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির (পিআইসি) দায়িত্বপ্রাপ্তরা তা আমলে নেননি।’ দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ দায়িত্বপ্রাপ্তরা সকালে বাঁধের ধ্বসে যাওয়া অংশ পরিদর্শন করে আরও পেছনের দিকে সরিয়ে বাইপাস বাঁধের কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন।
সুনামগঞ্জের বৃহৎ হাওরগুলোর অন্যতম দেখার হাওর। সুনামগঞ্জ সদর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ ও দোয়ারাবাজার উপজেলা নিয়ে বিস্তৃত এই হাওরে ১২ হাজার হেক্টর জমি রয়েছে। এবার এই হাওরকে অকাল বন্যার কবল থেকে রক্ষার জন্য প্রায় ৬ কোটি টাকার হাওর রক্ষা বাঁধের কাজ শেষ হয়েছে। দোয়ারাবাজার অংশেই বাঁধের কাজ হয়েছে এক কোটি ৮০ লাখ টাকার।
উপজেলার আমবাড়ী পার্শ্ববর্তী হাজারীগাঁও পয়েন্ট থেকে শুরু করে মান্নারগাঁও, জয়নগর, কাঁটাখালী, আজমপুর, ইদনপুর, পশ্চিম মাছিমপুর, দোহালিয়া, হরিপুর, কাঞ্চনপুর, কিত্তে রাজনপুর ও প্রতাপপুর পর্যন্ত একটি দীর্ঘ বাঁধ হয়েছে। এই বাঁধের ১০৭/২ নম্বর পিআইসির বরাদ্দ ছিল ১০ লাখ ১০ হাজার টাকা। বাঁধ নির্মাণের সময় স্থানীয় লোকজন ‘নদীর পাড় কেটে মাটি না তুলে বাঁধের ভেতরের একটু দূর থেকে মাটি কাটার জন্য। বিষয়টি আমলে নেননি পিআইসির লোকজন।
গত শনিবার রাত ৯টায় ১০৭/২ অংশের পিআইসির বাঁধ ধসে নদীর সঙ্গে মিশে গেছে। এ ঘটনায় চিন্তিত হাওর পাড়ের লোকজন।’ পিআইসির সেক্রেটারী ইউপি সদস্য প্রজিত দাস বললেন, বাঁধ ভেঙে নদীতে চলে গেছে তো আমি কি করবো। কাটাখালির বাসিন্দা অতুল ধর বলেন,‘এখন ঝড় বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। এর মধ্যে বাঁধের একাংশ ধ্বসে যাওয়ায় সকলেই চিন্তিত।’
বাঁধের দায়িত্বপ্রাপ্ত পাউবো’র উপসহকারী মাহবুবুর রহমান বলেন,‘বাঁধ যেখানে দেওয়া হয়েছে, তার নিচের অংশটুকু হয়তোবা ফাঁকা ছিল। এজন্য শনিবার রাতে ধসে গেছে। পিআইসির লোকজনকে নদীর পাড় থেকে মাটি কাটতে নিষেধ দেওয়া হয়েছিল। এরপরও তারা কোন কোন স্থানে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটেছেন।’
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী মহুয়া মমতাজ বলেন, ‘দেখার হাওরের কাটাখালি থেকে জালালপুর বাঁধ ধসের খবর পেয়ে সকালেই অন্যান্য কর্মকর্তাসহ ঘটনাস্থলে গিয়েছেন। আমরা বলেছি ৩ দিনের মধ্যে পেছনের দিকে সরিয়ে বাঁধ করে দেবার জন্য। আগে থেকেই আমরা আরো পেছনে সরিয়ে বাঁধ দেবার কথা বলেছিলাম। তখন জমির মালিকরা জমি নষ্ট হবার কথা বলে বাঁধে সরিয়ে আনতে দেননি। পিআইসির লোকজনকে নদীর পাড়ের দিক থেকে মাটি না তোলার জন্য বলা হয়েছিল। তারা যেখান থেকে মাটি গর্ত করে তুলেছেন, সেটুকু ভরাট করে দেবার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, তারা সেটি করেননি।’
১০৭/২’এর পিআইসির সভাপতি মাহমুদুর রহমান আজাদ বললেন, ‘বাঁধের নিচের নদীর পাড়ের অংশ ফাঁকা ছিল, এটি আগে দেখা যায়নি। মাটি না পেয়ে নদীর পাড় থেকে কোথাও কোথাও বাধ্য হয়ে মাটি তোলা হয়েছে। কিন্তু যে অংশটি দেবেছে, ওখানে নদীর পাড় থেকে মাটি তোলা হয়নি।
এবিএন/অরুন চক্রবর্তী/জসিম/এমসি