![জলবসন্ত হলে যা করবেন](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/09/health-8_134358.jpg)
ঢাকা, ০৯ এপ্রিল, এবিনিউজ : আমাদের দেশে ঝড়ের মতো ছোবল মারে যে রোগটি তার নাম জলবসন্ত। মূলত সব ঋতুতে এ রোগ কম-বেশি হলেও শীতের শেষে ও বসন্তকালে তা মহামারী আকার ধারণ করে। চিকেনপক্স বা জলবসন্ত অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ। ভেরিসেলা জোস্টার নামক এক ধরনের ভাইরাস এ রোগের কারণ।
নাতিশীতোষ্ণ দেশগুলোয় চিকেনপক্স বা জলবসন্ত এক মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা। ভীষণ ছোঁয়াচে এ রোগটি ১০ বছরের নিচের শিশুদের সবচেয়ে আক্রমণ করে বেশি। তবে সব দেশে সব ধরনের লোকের মাঝে এ রোগের সংক্রমণ লক্ষ করা যায়। কেউ যদি এ রোগে আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান করে সেও এ রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়ে। তবে একবার কেউ আক্রান্ত হলে তার শরীরে ওই ভাইরাসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরির ফলে দ্বিবতীয়বার আক্রান্ত হওয়ার তেমন সম্ভাবনা থাকে না।
রোগের উপসর্গ
* প্রধান উপসর্গ হলো জ্বর এবং শরীরে র্যাশ বা ফুসকুড়ি ওঠা। শরীর ম্যাজম্যাজ করে, ব্যথা হয়।
* র্যাশ বা ফুসকুড়ি প্রথম দিনেই উঠতে পারে। পিঠে ও বুকে এগুলো প্রথম দেখা যায়, পরে মুখে ও মাথায় ওঠে।
* পায়ের তলা ও হাতের তালুতে ফুসকুড়ি দেখা দিতে পারে।
* সাধারণত প্রথম দিনে ফুসকুড়িগুলোর মধ্যে পানি জমা হতে থাকে- দেখতে ফোস্কার মতো হয়। কোনো কোনো ফুসকুড়ি তরল পদার্থপূর্ণ, কোনো কোনোটি পুঁজে পূর্ণ হয়।
* তিন থেকে চার দিনের মধ্যে ফুসকুড়ি পুরোপুরি বিস্তার লাভ করে এবং সমস্ত শরীরে ছড়িয়ে পড়ে।
* শরীর চুলকাতে থাকে।
* এর পর ধীরে ধীরে ফুসকুড়ি শুকাতে শুরু করে এবং শুকানোর পর আস্তরণগুলো ঝরে যেতে থাকে। সাধারণত দু’সপ্তাহের মধ্যে শরীরের সব আস্তরণ ঝরে যায়।
যেভাবে এ রোগ ছড়ায়?
* চিকেনপক্সে আক্রান্ত রোগীর হাঁচি ও কাশি থাকে।
* আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এলে।
* আক্রান্ত রোগীর ব্যবহূত জিনিস স্পর্শ করলে।আক্রান্ত রোগীর নিঃশ্বাসের বাতাস থেকে।
* আক্রান্ত রোগীর কাছাকাছি অবস্থান করলে সেখানকার বাতাসের মাধ্যমে।
* আক্রান্ত রোগীর শরীরে ফুসকুড়ি ওঠার পাঁচ দিন আগে থেকে এবং ফুসকুড়ি শুকিয়ে যাওয়ার ছয় দিনের মধ্যে কেউ সংস্পর্শে এলে। মনে রাখতে হবে ভেরিসেলা ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথে উপসর্গ দেখা দেয় না। সাধারণত ১৪-২১ দিন (মোটামুটিভাবে ১৭ দিন) পর্যন্ত রোগটি শরীরে সুপ্তাবস্থায় থাকে। পরে ধীরে ধীরে উপসর্গ দেখা দেয়।
এ রোগের চিকিৎসা
চিকেনপক্সের রোগী সাধারণত এমনিতে ভালো হয়ে যায়। তবুও সতর্কতার প্রয়োজন রয়েছে। রোগীর কষ্ট লাঘব করার জন্য এবং পরবর্তী সময়ে যাতে ইনফেকশন না হয়, সে জন্য কিছু ব্যবস্থা নেয়া যেতে পারে-
* রোগীকে প্রথমত আলাদা ঘরে রাখতে হবে। রোগীর ত্বক পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য প্রতিদিন বিছানার চাদর বদলাতে হবে।
* চুলকানির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন ওষুধ খেতে হবে।
* জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে।
* ইনফেকশন রোধ করার জন্য চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ৫-৭ দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেতে হবে।
* ত্বকে ইনফেকশন হলে মুখে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ খাওয়ার পাশাপাশি ত্বকে ক্লোরহেক্সিডিন অ্যান্টিসেপটিক মলম লাগানো যেতে পারে।
সূত্র : ইন্টারনেট
এবিএন/সাদিক/জসিম