শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • চট্টগ্রামে দুই শিল্প গ্রুপের বিরোধপূর্ণ জায়গাটি কেএসআরএম‘র: রেলওয়ে
প্রথম ইজারাদার নুরুল আলমেরও স্বীকারোক্তি

চট্টগ্রামে দুই শিল্প গ্রুপের বিরোধপূর্ণ জায়গাটি কেএসআরএম‘র: রেলওয়ে

চট্টগ্রামে দুই শিল্প গ্রুপের বিরোধপূর্ণ জায়গাটি কেএসআরএম‘র: রেলওয়ে

চট্টগ্রাম, ১০ এপ্রিল, এবিনিউজ: সম্প্রতি বাড়বকুন্ড রেলওয়ের ১.৬৪ একর জায়গা নিয়ে বিবাদে জড়িয়েছে চট্টগ্রামের অন্যতম দুই বৃহৎ প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম ও পিএইচপি। এরইমধ্যে গত রবিবার সংবাদ সম্মেলন করে জায়গাটি নিজেদের বলে দাবি করে কেএসআরএম।

এর স্বপক্ষে প্রতিষ্ঠানটি সংবাদ সম্মেলনে স্বয়ং হাজির করেন ইজারা গ্রহীতা নুরুল আলমকে। যিনি রেলওয়ের কাছ থেকে ১৯৮০ সালে ইজারা নিয়ে ভূমি লাইসেন্স ও ভ্যাট প্রদান করে ২০১৬ সাল পর্যন্ত ভোগদখল করেন।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে নুরুল আলম জানান, ২০১৭ সালে তিনি রেলওয়ের জায়গাটি ইজারা হন্তান্তর মূল্যে কেএসআরএম’র কাছে বিক্রি করেন। রেলওয়ের মধ্যস্থতায় ত্রিপক্ষীয় শুনানীর মাধ্যেমে জায়গাটি কেএসআরএম এর কাছে সেময় হন্তান্তর করা হয়।

এরআগে চট্টগ্রাম রেলওয়ের ইজারা দেয়া ১ দশমিক ৬৪ শতক জায়গা নিয়ে দ্বন্ধে জড়িয়ে পড়ে শীর্ষস্থানীয় শিল্প গ্রুপ পিএইচপি ও কেএসআরএম। বিষয়টি নিয়ে দুপক্ষই থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। বিরোধপূর্ণ জায়গাটি নিয়ে সা¤প্রতিক সময়ে বেশ কয়েকবার উভয় শিল্প গ্রুপের মাঝে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, আনোয়ার জুট মিল গেইট এলাকায় অবস্থিত রেলের জায়গাটি নিয়ে উভয় গ্রুপ এরইমধ্যে কয়েকবার সংঘর্ষে জড়িয়েছে। পুনরায় সংঘর্ষের আশঙ্কায় এলাকায় ভীতি ছড়িয়ে পড়েছে।

এদিকে সংবাদ সম্মেলনে কেএসআরএম এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, ‘২০১৭ সালে ত্রি-পক্ষীয় শুনানীর মাধ্যেমে কেএসআরএম’কে জমিটি হন্তান্তর করে রেলওয়ে। পিএইচপি জায়গাটি নিজেদের বলে দাবি করা ভিত্তিহীন ও অসত্য। কিছু কুচক্রীমহল কেএসআরএম সন্ত্রাসী কার্যকলাপের মাধ্যেমে জায়গা দখল করছে বলে অপপ্রচার চালাচ্ছে। যা সম্পূর্ন ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। প্রকৃতপক্ষে গত বছরের মার্চের ১৩ তারিখ পিএইচপি ভাড়াটে সন্ত্রাসী এনে সীমানা ভেঙে কেএসআরএম’র প্রহরী ও শ্রমিকদের মারধর করেন।

এ ব্যাপারে রেলওয়ের চীফ এষ্টেট অফিসার (পূর্ব) মোহাম্মদ জসিম উদ্দিন বলেন, ‘জায়গাটি নিয়ে বিরোধ হওয়ার কোন অবকাশই নেই। ১ম ইজারা গ্রহীতা নুরুল আলমের পর ২য় ইজারা গ্রহীতা হিসেবে জায়গাটি কেএসআরএম’কে দেয়া হয়েছে। বর্তমানে জায়গাটির প্রকৃত মালিক কেএসআরএম।’ তিনি আরো বলেন, ‘উদ্ভুত পরিস্থিতিতে গত ৩রা মার্চ রেলওয়ের ভূসম্পত্তি বিভাগ জায়গাটি পরিদর্শন করে সম্ভাব্য সকল তথ্যাদি সংগ্রহ করে। রেলওয়ের আইনে মিউটেশনের মাধ্যেমে লাইসেন্সি স্বত্ব হন্তান্তর করার বিধান রয়েছে। যেহেতু নুরুল আলম নোটারি পাবলিকের মাধ্যেমে কেএসআরএম’কে লাইসেন্স ও ভূমি ব্যবহারের অধিকার হন্তান্তর করেছেন সেহেতু জমিটির মালিক কেএসআরএম।’

যদিও এ বিষয়ে পিএইচপি গ্রুপের কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি। পিএইচপি গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক (এস্টেট) আমির হোসেন এর মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করে বন্ধ পাওয়া যায়। অফিসের ল্যান্ড ফোনে যোগাযোগ করলে তাঁর একান্ত সহকারী জানান, ‘স্যার বাইরে আছেন।’ এদিকে কেএসআরএম’র উপ-মহাব্যবস্থাপক মো: সাখাওয়াত হোসেন জানান, ১৯৯৮ সালের ৩০ জুনের পর ২০০৫ সালের ৩০ জুন দেড়শ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে পিএইচপি যে চুক্তিনামার তথ্য দিয়েছে তা অনিয়মতান্ত্রিক। তবে ১৯৯৮ সালের ৩১ জুলাই থেকে অদ্যাবধি তিনশ টাকার নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে বিভিন্ন চুক্তিনামা আদালত আমলে নিচ্ছে।

এছাড়াও রেলের কৃষি লাইসেন্স গ্রহীতা নুরুল আলম অক্ষরজ্ঞান সম্পন্ন বাংলাদেশী নাগরিক। সে অনুযায়ী কেএসআরএমের কাছে হন্তান্তর করা ভূমি তিনশ টাকার স্ট্যাম্পে আদালতে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে হন্তান্তর করেছেন। কিন্তু পিএইচপি রেলের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি বিভাগে দাখিলকৃত আবেদনে ও জমাকৃত স্ট্যাম্পে নুরুল আলমের টিপসই নিয়ে রেলের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।

উলে¬খ্য, রেলওয়ের ইজারাকৃত এই ১.৬৪ একর জায়গা পেরিয়ে পিএইচপি’র ১৬০ একর বনায়ন প্রকল্প রয়েছে। বনায়নের সম্মুখে ১ একর ৬৪ শতকের জমিটি নিয়ে চলছে দুই বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠানের রশি টানাটানি।

এবিএন/রাজীব সেন প্রিন্স/জসিম/তোহা

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত