শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo
  • হোম
  • সারাদেশ
  • রামপালে কোটি টাকা নিয়ে এনজিও চলন্তিকা যুব সোসাইটি উধাও

রামপালে কোটি টাকা নিয়ে এনজিও চলন্তিকা যুব সোসাইটি উধাও

রামপালে কোটি টাকা নিয়ে এনজিও চলন্তিকা যুব সোসাইটি উধাও

রামপাল (বাগেরহাট), ১০ এপ্রিল, এবিনিউজ : রামপালে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি এনজিও গ্রাহকদের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। এতে চরম হতাশায় পড়েছে কয়েক হাজার সাধারণ গ্রাহক।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ লোকজন উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল ও রামপাল থানার ওসি শেখ লুৎফর রহমানকে অবহিত করে সহায়তা কামনা করেছে। গতকাল সোমবার ১১.৩০টায় সাধারণ গ্রাহকগণ সমবেত হয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মাধ্যমে সমাজ কল্যান মন্ত্রণালয় বরাবর স্মারক লিপি প্রদান করেছে।

ক্ষতিগ্রস্ত গ্রাহক ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে যে রামপাল উপজেলায় ২০০৬ সাল থেকে উপজেলা সদর, ফয়লাহাট বাজার ও গিলাতলা বাজারে তিনটি শাখার মাধ্যমে চলন্তিকা যুব সোসাইটি নামে একটি এনজিও তাদের কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে তিনটি শাখায় ব্যাবস্থাপক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. নওশের আলী, মানসুর ও সন্তোস মিস্ত্রী।

এছাড়া কিংকর শীল, আতাহার, ইউসুপ নামে সংস্থায় কর্মরত রয়েছে একাধিক সহকারী ব্যাবস্থাপক এবং মাঠকর্মী। অধিক লাভ দেয়ার প্রতিশ্রিুতি দেয়ায় খুব দ্রুত সাধারণ লোকজন এ সংস্থায় ভিড়তে থাকে। ক্ষুদ্র ঋণ দেয়ার পাশাপশি ৩বছর ও ৬ বছরের মেয়াদের ডিপিএস কার্যক্রম শুরু করে।

গত রবিবার ৮ এপ্রিল থেকে হঠাৎ করে অফিস বন্ধ থাকলে সাধারন মানুষের মাঝে সন্দেহের সৃষ্টি হয় এবং বর্তমানে তিনটি অফিস তালাবদ্ধ থাকায় গ্রাহকবৃন্দ চরম হতাশার মধ্যে পড়েছে। এনজিওটি কিভাবে এত বড় ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে বা তাদের এনজিও ব্যুরোর কোন অনুমোদন আছে কিনা, সংশ্লিষ্ট সবার মোবাইল বন্ধ থাকায় তা সঠিকভাবে জানা জায়নি।

গ্রাহকরা জানান, এনজিওটি আনুমানিক ২ থেকে ৩ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। রামপালে যে সমস্ত গ্রাহকগণ বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ,তাদের মধ্যে রোমানা পারভিন ২ লক্ষ ৫ হাজার টাকা, ছফরুল ২ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, প্রধান শিক্ষক (অব.) পিযুস ৬ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা, বিউলি ৪ লক্ষ টাকা, পিযুস মিস্ত্রী ২ লক্ষ টাকা এবং উজ্জল মন্ডলের ১ লক্ষ ৭১ হাজার টাকা রয়েছে।

গ্রাহকবৃন্দ সাংবাদিকদের জানান, যে এলাকায় সংস্থার যে সমস্ত লোক তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে, তাদের বিরুদ্ধে অতি সত্তর ব্যাবস্থা নেয়া দরকার। কারণ তারা জানতে পেরেছে যে তাদের দেয়া অনেক টাকা কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজেদের এ্যাকাউন্টে জমা রেখেছে। তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত আইন গত ব্যবস্থা নিলে গ্রাহকরা কিছু টাকা ফেরৎ পেতে পারে।

তারা আরো জানান, যে এলাকায় মানুষের জনরোষে ইতোমধ্যে সংস্থার উপজেলার কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা গাঁ ঢাকা দিয়েেেছ। অনেকে গোপনে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। তারা এলাকা থেকে পালিয়ে গেলে গ্রাহকবৃন্দ আরো বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গ্রাহকবৃন্দ প্রশাসনের দৃষ্টি কামনা করে জানান যে ফয়লাহাট বাজারে চলন্তিকা এনজিও’র একটি সম্পত্তি রয়েছে। প্রশাসন সম্পত্তিটি নিজেদের জিম্মায় নেয়ার ব্যবস্থা নিলে এলাকার ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ সেখান থেকে ও কিছু টাকা ফেরৎ পেতে পারে। এ ব্যাপরে চলন্তিকা সোসাইটির চেয়ারম্যান খবিরুজ্জামান’র মুঠোফোন (মোবা-০১৯৬৪৫৭০৫৫৬) বন্ধ থাকায় তার সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

এ ব্যাপরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার তুষার কুমার পাল’র সাথে কথা হলে তিনি জানান যে ক্ষতি গ্রস্ত গ্রাহকবৃন্দ স্মারক লিপি দিয়েছে, উপজেলা সমাজ সেবা অফিসারকে প্রধান করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে এবং তাকে তিন দিনের মধ্যে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। রিপোর্ট পাওয়ার পর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে প্রতিবেদন পেরন করা হবে।

তবে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ এ ব্যাপারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এবিএন/সাইফুল আলম/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত