![হাতীবান্ধায় ভুট্টা পাতার হাট](https://archive.abnews24.com/assets/images/news_images/2018/04/12/vutta_abnews_134828.jpg)
হাতীবান্ধা (লালমনিরহাট), ১২ এপ্রিল, এবিনিউজ : তিস্তা, সানিয়াজান ও ধরলা নদীর তীরবর্তী লালমনিরহাট জেলার প্রধান অর্থকারী ফসল হলো ভুট্টা। এ বছর জেলায় ভুট্টা চাষ লক্ষ্যমাত্রা ছড়িয়ে গেছে। ক্ষেতের অবস্থা দেখে মনে হচ্ছে ফলনও ভালো হবে।
ইতিমধ্যে চর এলাকা গুলোতে ক্ষেত থেকে ভুট্টা তোলা শুরু হয়েছে। আগামী ১৫/২০ দিনের মধ্যে পুরোদমে ভুট্টা ক্ষেত থেকে তোলা শুরু হবে। ফলে এখন কৃষকরা তাদের ভুট্টা ক্ষেতে গাছের মাথা ও পাতা ছিড়ে ফেলছে। এ সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চর অঞ্চলের নি¤œ আয়ের লোকজন ভুট্টা গাছে পাতা বিক্রি করে কিছু-দিন জীবন-জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করছে।
প্রতিবিঘা ভুট্টা ক্ষেতের পাতা ও গাছের মাথা কাটতে ২ জন করে শ্রমিক লাগে। কিন্তু তা এখন আর লাগছে না। নিম্ন আয়ের লোকজন ফ্রি পাতা ছিড়ে ও মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এখন মাঠে কাজ না থাকায় দিনমজুর শ্রেণীর লোকজন পরিবারের সবাই মিলে ভুট্টা গাছের পাতা ছিড়ে বিভিন্ন হাট-বাাজারে বিক্রি করতে নিয়ে যাচ্ছে। দামে কম হওয়া অনেকেই গো-খাদ্য হিসাবে তা ক্রয় করছে। এতে এক দিকে নিম্মআয়ের লোকজনের আয় হচ্ছে, অন্যদিকে কম দামে বিভিন্ন গবাদিপশু খামারীরা তাদের পশুর খাদ্য পাাচ্ছে ও কৃষকদের ভুট্টা উৎপাদনে খরচও কমে যাচ্ছে।
সরজমিন ঘুরে দেয়া যায়, জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ভুল্লাহাট, ভোটমারী, হাতীবান্ধা উপজেলার ঘুন্টি, পারুলিয়া, হাতীবান্ধাহাটসহ জেলার বিভিন্ন স্থানে প্রতিদিন বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এ ভুট্টা পাতার হাট বসছে।
কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী এলাকার দিনমজুর সাইফুল ইসলাম বলেন, বর্তমানে এলাকায় কোনো কাজ নেই। তাই আমি ও আমার স্ত্রী প্রতিদিন সকালে চরে গিয়ে ভুট্টা পাতা ছিড়ে নিয়ে এসে ভোটমারী বাজারে বিক্রি করি। এতে প্রতিদিন ২ শত ৫০ টাকা থেকে ৩ শত টাকা পর্যন্ত আয় হয়। এ দিয়ে কোনো রকম সংসার চলছে। পাতার জন্য ক্ষেত মালিকদের কোনো টাকা দিতে হয় না। কয়েক দিন পর ভুট্টা তোলা শুরু হলে তখন ভুট্টা তোলার কাজ করবো।
হাতীবান্ধা উপজেলার চর সির্ন্দুনা এলাকার কৃষক আইযুব আলী জানান, ভুট্টা তোলার ১৫/২০ আগে গাছের পাতা ও মাথা কেটে দিতে হয়। এতে ভুট্টায় সুর্যের আলো পড়লে ভুট্টার রং ভালো হয়। প্রতি বিঘা ভুট্টা ক্ষেতে পাতা ও মাথা কাটতে ২ জন করে শ্রমিক লাগে। কিন্তু এখন তা লাগছে না। অনেকেই পাতা ও গাছের মাথা কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এতে এক দিকে আমাদের উৎপাদন খরচ কমে যাচ্ছে। অন্য দিকে নিম্ন আয়ের লোকজন তাদের জীবিকা চলার পথ পেয়েছে।
হাতীবান্ধা নদী ও চর উন্নয়নের সভাপতি অধ্যক্ষ নুরুজ্জামান জানান, এ সময়টা কাজ না থাকায় চর অঞ্চলের নিম্ন আয়ের লোকজন বেকার হয়ে পড়ে। কয়েক বছর ধরে দেখা যাচ্ছে, ভুট্টার পাতা ও ভুট্টা গাছের মাথা বিক্রি হচ্ছে। ফলে কিছু লোকজন কয়েক দিনের জন্য হলেও তাদের কর্মসংস্থান পায়।
অন্যদিকে ভুট্টা উৎপাদন খরচ কমে যাওয়ার পাশাপাশি পশু খামারীরা কম দামে তাদের গো-খাদ্য ক্রয় করতে পারছে।
এবিএন/আসাদুজ্জামান সাজু/জসিম/এমসি