শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২ ফাল্গুন ১৪৩১
logo

সিরাজগঞ্জে মশার প্রকোপে অতিষ্ঠ জন-জীবন

সিরাজগঞ্জে মশার প্রকোপে অতিষ্ঠ জন-জীবন

সিরাজগঞ্জ, ১৩ এপ্রিল, এবিনিউজ : সিরাজগঞ্জের বাঘাবাড়ি নৌবন্দর এলাকায় মিল্কভিটার মিল্কসেড এরিয়ায় মশা-মাছির অত্যাচার এখন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। এ কারণে গরুর খুরা রোগ, ম্যাস্টাইটিস, ওলান ফোলা, জড়া, চর্মরোগ, এলার্জি, বাটে পচন, খুধা মন্দা, খাওয়ায় অরুচি, স্বাস্থ্য হানীসহ বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়েছে।

প্রায় দেড় মাসে এ এলাকার বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক গরু মারা গেছে। গরুর বাথান মালিকরা জানান, দুধ উৎপাদনে খ্যাত শাহজাদপুরে মশা-মাছির অত্যাচারে মিল্কসেড এরিয়ার দুগ্ধ উৎপাদনকারী কৃষক ও গো-খামারীরা অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে। গো-খামারীরা বাধ্য হয়ে গোয়াল ঘরে ধুপ ও কয়েল জ¦ালিয়ে, ফিনিশ ও ফাইটার স্প্রে করে এবং ফ্যান ও মশারি টানিয়েও খামারের গরুকে রক্ষা করতে হিমশিম খাচ্ছে। এ কারণে বাথানের গরু খেতে, বসতে ও ঘুমাতে না পারায় দুধের উৎপাদন হ্রাস ও ফ্যাট কমে গেছে।

মিল্কসেড এরিয়ার পাবনার বেড়া, সাঁথিয়া, সুজানগর, ফরিদপুর, ভাঙ্গুড়া, চাটমোহর, সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুর, উল্লাপাড়া, বেলকুচি ও চৌহালি এলাকার কৃষকরা দুধ বিক্রি করেও লোকশান গুণছে। ফলে এ এরিয়ার দুগ্ধ শিল্প হুমকির মুখে পড়েছে। শাহজাদপুর উপজেলার চিথুলিয়া গ্রামের মন্তাজ মন্ডল, জয়নাল আবেদীন, আব্দুর রাজ্জাক ও ইব্রাহিমসহ গরু বাথানের অনেক মালিক বলেন, গোয়াল ঘরে সাজাল, ধুপ-কয়েল জ¦ালিয়ে, ফিনিশ ও ফাইটার স্প্রে করে এবং ফ্যান দিয়েও মশা-মাছি দূর করতে না পেরে গরু বাঁচাতে খেয়ে না খেয়ে অনেক টাকা ব্যয় করে পুরো গোয়াল ঘরে মশারি দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়েছে।

তারা আরো বলেন, গত ৫০ বছরের মধ্যে এ রকম মশা-মাছির উপদ্রব দেখেনি। চরা চিথুলিয়া গ্রামের সোহেল মন্ডল বলেন, এ অবস্থায় গরু বাথানে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। মিল্কভিটার বৃ-আঙ্গারু প্রাথমিক দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও গো-খামারী আব্দুর রউফ বলেন, মশা-মাছি বাহিত খুরা রোগসহ নানা রোগে আক্রান্ত হয়ে তাদের গ্রামে প্রায় দেড় মাসে মিল্কসেড এরিয়ার বিভিন্ন গ্রামে শতাধিক গরু মারা গেছে। এতে বাথান মালিকরা চরমভাবে আর্থিক লোকশানে পড়েছে।

মিল্কভিটার সাথিয়ার বোয়ালমারী দুগ্ধ উৎপাদনকারী সমবায় সমিতির সভাপতি ও গো-খামারী বেলায়েত হোসেন বলেন, তাদের এরিয়ায় মাছির চেয়ে মশার অত্যাচার বেশি হওয়ায় মাংস উৎপাদনশীল গরুকে মশারির মধ্যে লালন-পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন। প্রায় ১ মাসে পাবনা ও সিরাজগঞ্জ জেলার মিল্কসেড এরিয়ায় মশা-মাছির আক্রমণে খুরা রোগ ও অন্যান্য রোগে আক্রান্ত হয়ে অন্তত শতাধিক গরু মারা গেছে। এ অবস্থা চলতে থাকলে এ এলাকার গো-সম্পদ রক্ষা কঠিন হয়ে পড়বে।

এ বিষয়ে বাঘাবাড়ি মিল্কভিটার ডিজিএম ডা. ইদ্রিস আলী ও ম্যানেজার অমীয় কুমার মন্ডল বলেন, মশা-মাছির উপদ্রব থেকে গরু রক্ষা মিল্কভিটা থেকে কোন কিছু করার ব্যবস্থা নেই। তবে খামারীরা এ বিষয়ে মিল্কভিটার কাছে সহযোগীতা চাইলে বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে।

শাহজাদপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, পরিস্থিতি এতোটা ভয়াবহ না হলেও এ এরিয়ায় মশা-মাছির উপদ্রব আছে। আমরা খামারীদের স্প্রে করাসহ নানা পরামর্শ দিয়ে গো-সম্পদ রক্ষায় কাজ করছি। এরপরেও সরকারিভাবে মিল্কসেড এরিয়ায় মশা-মাছি নির্মূলে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার জন্য উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে বলে তিনি জানান।

এবিএন/এস.এম. তফিজ উদ্দিন/জসিম/এমসি

ad

প্রধান শিরোনাম

  • সর্বশেষ খবর
  • সর্বাধিক পঠিত